রাহমান চৌধুরী: যখন ফেসবুকে কিছু লিখি অনেক লেখা বড় হয়ে যেতেই পারে। মাঝে মধ্যে অনেকে তখন আমাকে উপদেশ দিয়ে বলেন, আপনি এতো বড় লেখা লেখেন কেন, এতো বড় লেখা ক্লান্তিকর, পর্ব ভাগ করে লিখুন ইত্যাদি। কথাটা হলো, আমি তো আপনার জন্য সুনির্দিষ্টভাবে লিখি না, মন চায় তাই লিখি। পড়তে গিয়ে আপনার ক্লান্তি লাগলে বা ভালো না লাগলে আপনি পড়বেন কেন? আপনাকে কি কেউ দিব্যি দিয়েছে পড়ার জন্য? আমার দায়িত্ব তো মোটেই আপনার মনের মতন করে আপনার সুবিধার দিকে তাকিয়ে লেখা নয়।
নিশ্চয় আমার মতন করে আমার কিছু বলবার আছে, জানাবার আছে কিংবা লিখবার আছে, সেটাই আমি লিখি। আমার লিখবার ঢং আমার মতনই হবে, অবশ্যই তা আপনার মতন হবে না। যাঁদের দরকার বা ভালো লাগবে তাঁরাই সেটা পড়বেন। কিন্তু আপনার ভালো লাগার কথা ভেবে আমি তো আমার লেখার ঢং পাল্টে ফেলতে পারি না।
বহু জন তবুও আমার এ সব লেখা পড়ছেন, তার চেয়ে বহু গুণ মানুষই অবশ্য তা পড়ছেন না। যাঁরা পড়ছেন তাঁদের জন্যই আমি লিখি। যাঁদের আমার দীর্ঘ লেখা পড়তে ক্লান্তি লাগে তাঁদের উদ্দেশ্যে এটুকুই বলতে পারি, আমার বড় লেখায় যদি আপনার ক্লান্তি আসে, তাহলে আমার লিখতে গিয়ে কি তার চেয়ে কম কষ্ট হয়? লিখবার জন্য আমাকে চিন্তা করতে হয়, পড়তে হয়। লেখাটা পড়ার জন্য আপনি আমাকে টাকা পয়সাও দিচ্ছেন না, তাহলে আপনার এতো ক্লান্তি লাগে কেন? যদি বুঝতাম আপনি টাকা দিয়ে বই কিনে ঠকেছেন তাহলে ভিন্ন কথা ছিল। যদি আমার এই লেখাটা আপনার কাছে দীর্ঘ মনে হয়, তাহলে কি পৃথিবীর মানুষ বই পড়া ছেড়ে দেবে? সেগুলো আরো অনেক বড় এবং দীর্ঘ লেখা। বহু মানুষ কিনে এনে সেগুলো পড়েন। আমার বড় লেখা নিয়ে তাহলে আপনার এতো আপত্তি কেন যখন আমি আপনাকে তা পড়তে বাধ্য করছি না।
সত্যিকার অর্থে আমরা হলাম একটা না পড়া জাতি। না পড়েই তর্ক করতে চাই, অন্যকে জ্ঞান দিতে চাই। মনে করি সব কিছু হবে আমার ইচ্ছার মতন। সবাই আমার ইচ্ছার দিকে তাকিয়ে সব কিছু করবেন। মনে হয় ওনাদের জন্য পৃথিবীর সব বড় বড় গ্রন্থ পুড়িয়ে ফেলতে হবে। শুধু যেটুকু ওনারা জানতে চান, সেটুকুই লিখতে হবে। লেখকরা হবেন ওনাদের নানা রকম ইচ্ছার দাস।
লেখক: শিক্ষক
মতামত ও সাক্ষাৎকার কলামে প্রকাশিত নিবন্ধ লেখকের নিজস্ব। শিক্ষাবার্তা’র সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে মতামত ও সাক্ষাৎকারে প্রকাশিত মত সামঞ্জস্যপূর্ণ নাও হতে পারে। প্রকাশিত লেখাটির ব্যাখ্যা বা বিশ্লেষণ, তথ্য-উপাত্ত, রাজনৈতিক ও আইনগতসহ যাবতীয় বিষয়ের দায়ভার লেখকের;- শিক্ষাবার্তা কর্তৃপক্ষের নয়।”
শিক্ষাবার্তা ডটকম/এএইচএম/২১/০৬/২০২৪
Discover more from শিক্ষাবার্তা ডট কম
Subscribe to get the latest posts sent to your email.