নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাঃ স্বাক্ষর জালিয়াতির মাধ্যমে মাদ্রাসার অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় অবশেষে সুনামগঞ্জ জেলার জগন্নাথপুর উপজেলাধীন হলিয়ারপাড়া জামেয়া কাদেরিয়া সুন্নিয়া ফাযিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মো: মঈনুল ইসলাম পারভেজ (ইনডেক্স- S320858) এর এমপিও স্থগিত করেছে মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তর।
বৃহস্পতিবার মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক (অর্থ) ও এমপিও বাছাই ও অনুমোদন কমিটির সদস্য সচিব মোঃ শরিফুল ইসলাম স্বাক্ষরিত চিঠিতে এই তথ্য জানা গেছে।
এর আগে অধ্যক্ষ মো: মঈনুল ইসলাম পারভেজ কর্তৃক জাল জালিয়াতির বিষয়ে শিক্ষাবার্তা’য় একাধিক প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। শিক্ষাবার্তা’য় প্রকাশিত প্রতিবেদনের আলোকে অধ্যক্ষ মো: মঈনুল ইসলাম পারভেজকে শোকজ করে তলব করে মাদ্রাসা অধিদপ্তর। তারও আগে কাবিন জালিয়াতির অভিযোগে তাকে শোকজ করে অধিদপ্তর। এছাড়াও মাদ্রাসা সংশ্লিষ্ট ও বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত লন্ডন প্রবাসী মোঃ আলী আক্কাস জাল জালিয়াতির বিভিন্ন প্রমাণ সংযুক্ত করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগ এবং মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তরে লিখিত অভিযোগ দেন। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্তে জালিয়াতির প্রমাণ পাওয়ায় অধ্যক্ষ মঈনুলের এমপিও স্থগিত করা হলো।
বৃহস্পতিবার এমপিও স্থগিতের চিঠিতে বলা হয়, সুনামগঞ্জ জেলার জগন্নাথপুর উপজেলাধীন হলিয়ারপাড়া জামেয়া কাদেরিয়া সুন্নিয়া ফাযিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মো: মঈনুল ইসলাম পারভেজ (ইনডেক্স- S320858) এর বিরুদ্ধে স্বাক্ষর জালিয়াতির মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানের অর্থ আত্মসাতের বিষয়টি সূত্রোক্ত স্মারক ২ অনুযায়ী প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হওয়ায় বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান (মাদ্রাসা) জনবল কাঠামো ও এমপিও নীতিমালা-২০১৮ (২৩ নভেম্বর ২০২০ পর্যন্ত সংশোধিত) এর ১৮.১ (খ) অনুযায়ী মো: মঈনুল ইসলাম পারভেজ (ইনডেক্স- S320858) অধ্যক্ষ এর মাসিক বেতন ভাতা (এমপিও) সাময়িক স্থগিত করা হলো।
এতে আরও বলা হয়, মো: মঈনুল ইসলাম পারভেজ (ইনডেক্স- S320858 ) অধ্যক্ষ এর এমপিও ইনডেক্স স্থায়ীভাবে কেন কর্তন করা হবে না এ মর্মে আগামী ২৬/০২/২০২৫ তারিখে মধ্যে লিখিত ও প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টসসহ জবাব প্রদানের জন্য নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হলো।
মাদ্রাসা অধিদপ্তরের তদন্ত সূত্রে জানা গেছে, লন্ডন প্রবাসীরা হুলিয়ারপারা মাদ্রাসার গরিব শিক্ষার্থীদের এবং এলাকার উন্নয়নে ফান্ড গঠন করেন। সেই ফান্ডের অর্থ ব্যাংকে এফডিআর করে লভ্যাংসের অর্থের একটি অংশ ব্যয় করার কথা থাকলেও স্বাক্ষর জালিয়াতি করে ব্যাংকে এফডিআরে রাখা ও অন্যান্য ফান্ডের পুরো টাকাটাই আত্মসাৎ করেন অধ্যক্ষ। প্রায় ৪৫ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেন তিনি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে এই ফান্ড গঠনের অন্যতম উদ্যোক্তা বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত লন্ডন প্রবাসী মোঃ আলী আক্কাস জানান, আমি অক্সফোর্ডে (লন্ডন) জনগ্রহণ করেছি এবং অক্সফোর্ডে বসবাস করছি। অধ্যক্ষ মঈনুল আমাদের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করেছে এবং আমাদের আয় করা ফান্ডের পুরো টাকাটাই আত্মসাৎ করেছে। মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তর তদন্ত করে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছে এই জন্য আমি কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি। আমি শিক্ষাবার্তা’ পত্রিকাকে আন্তরিকভাবে ধন্যবাদ জানাচ্ছি কারণ অধ্যক্ষ মঈনুলের জালিয়াতি নিয়ে তারা একাধিক সংবাদ প্রকাশ করেছে। শিক্ষাবার্তা’র আরও বিস্তৃত হোক সেই কামনা করি। আমি এই জালিয়াতি অধ্যক্ষকে তার অপকর্মের দায়ে জেলে দেখতে চাই।
অধ্যক্ষ মঈনুল ইসলাম পারভেজের জালিয়াতি নিয়ে শিক্ষাবার্তা’য় যত সংবাদ
- অর্থ আত্মসাৎ ও স্বাক্ষর জালিয়াতি: মাদ্রাসা অধিদপ্তরে অধ্যক্ষ মঈনুলকে তলব
- ডিআইএ’র তদন্ত: ‘ধার করে’ শিক্ষার্থী এনে দেখালেন অধ্যক্ষ মঈনুল
- অধ্যক্ষ মইনুলের এমপিও বাতিল কেন হবে না জানতে চেয়েছে মাদ্রাসা অধিদপ্তর
- জালিয়াতির মাধ্যমে ১৭ বছর ধরে অধ্যক্ষ মইনুল ইসলাম পারভেজ!
- শিক্ষাবার্তা’য় সংবাদ প্রকাশ, সেই অধ্যক্ষ মইনুলকে অধিদপ্তরে তলব
- অধ্যক্ষ মইনুলের এমপিও বাতিল কেন হবে না জানতে চেয়েছে অধিদপ্তর
- ভুয়া আবেদন এবং স্মারকে বিদ্যোৎসাহী সদস্য হলেন সেই অধ্যক্ষ মইনুল
- সেই অধ্যক্ষ মইনুলের বিরুদ্ধে তদন্তের নির্দেশ শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের
- জগন্নাথপুর: অধ্যক্ষ মইনুলের জালিয়াতি চিঠি চালাচালিতেই আটকা!
- যুক্তরাজ্যে বসেই বেতন তুলছেন জগন্নাথপুরের মাদ্রাসা প্রভাষক আলী আসকার
- শিক্ষাবার্তা’য় সংবাদ: সেই মাদ্রাসা অধ্যক্ষ মঈনুলের প্রতিবাদ ও প্রতিবেদকের বক্তব্য!
শিক্ষাবার্তা ডটকম/এএইচএম/২০/০২/২০২৫
Discover more from শিক্ষাবার্তা ডট কম
Subscribe to get the latest posts sent to your email.