নিউজ ডেস্ক।। অর্থনৈতিক শুমারির আগামী ১০ থেকে ২৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত ১৫ দিনব্যাপী সারাদেশে পরিচালিত হবে। ৯৫ হাজার তথ্য সংগ্রহকারী এবারের শুমারিতে তথ্য সংগ্রহ করবেন। দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা সম্পর্কে জানতে প্রতি ১০ বছর পর এমন শুমারি করছে সংস্থাটি।
বৃহস্পতিবার (০৭ নভেম্বর) আগারগাঁওয়ে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো কর্তৃক আয়োজিত অর্থনৈতিক শুমারি ২০২৪-এর মূল শুমারির চূড়ান্ত প্রস্তুতি অবহিতকরণ কর্মশালায় এ তথ্য জানানো হয়।
বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও সঠিক পরিকল্পনা প্রণয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে এ অর্থনৈতিক শুমারি। এবারের অর্থনৈতিক শুমারিতে বিদেশি জনবল নিয়ে বিস্তারিত তথ্য থাকবে।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যার ব্যুরোর মহাপরিচালক মোহাম্মদ মিজানুর রহমানের সভাপতিত্বে এতে প্রধান অতিথি ছিলেন পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের সচিব মাহবুব হোসেন। বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর উপমহাপরিচালক মোহাম্মদ ওবায়দুল ইসলাম এবং প্রকল্প পরিচালক এস এম শাকিল আখতার। শুমারির বিস্তারিত তুলে ধরেন উপপ্রকল্প পরিচালক মিজানুর রহমান। প্রশ্ন উত্তর পর্ব পরিচালনা করের পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের যুগ্ম সচিব ড. দীপঙ্কর।
উপপ্রকল্প পরিচালক মিজানুর রহমান জানান, অর্থনৈতিক শুমারিতে ৬৫টি প্রশ্ন উঠে আসবে। এবারই প্রথম ট্যাবের মাধ্যমে ক্যাপি পদ্ধতিতে এই শুমারির তথ্য সংগ্রহ করা হবে। ইতোমধ্যেই লিস্টিংয়ের মাধ্যমে ১ কোটি ২২ লাখ ইউনিট চিহ্নিত করা হয়েছে। সেখান থেকে বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহ করা হবে। এবার শুমারিতে প্রথমবারের মতো দেশে কতজন বিদেশি কর্মী নিয়োজিত রয়েছেন, তারা কোন ধরনের প্রতিষ্ঠানে কোন ধরনের পদে কর্মরত আছেন এবং নারী-পুরুষ কতজন সেসব তথ্য তুলে ধরা হবে।
কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের সচিব মো. মাহবুব হোসেন বলেন, অর্থনৈতিক শুমারি এটা প্রায় দশ বছর পরপর হয়ে থাকে এটা যাতে সুন্দরভাবে সফল হয় এ জন্য সবাই একসঙ্গে কাজ করতে হবে। তিনি বলেন, ইতোমধ্যে শুমারির গুরুত্ব সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধিতে ও তথ্য সংগ্রহে সহযোগিতার জন্য প্রশিক্ষণ ও প্রচার কার্যক্রম পরিচালনার উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে, যা সফল শুমারি বাস্তবায়নে সহায়ক হবে।
প্রকল্প পরিচালক এস এম শাকিল আখতার বলেন, এই প্রকল্পের সরকারের কিছু রুলস আছে সেটা মেনেই আমাদের এটা বাস্তবায়ন করতে হবে। এই শুমারি বাস্তবায়নে ৯৫ হাজার শুমারিকর্মী মাঠে থেকে তারা তথ্য সংগ্রহ করবে। এই সময়ে কোন শুমারি কর্মী পরিবর্তন করা সম্ভব নয় বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
তিনি বলেন, চূড়ান্ত প্রস্তুতি হিসেবে বিভাগীয় ও জেলা শুমারি সমন্বয়কারীদের প্রশিক্ষণ, উপজেলা ও থানা পর্যায়ে জোনাল অফিসারদের প্রশিক্ষণ এবং তালিকাকারীদের প্রশিক্ষণ ও সার্বক্ষণিক মনিটরিংয়ের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। এ ছাড়া আধুনিক পদ্ধতিতে ট্যাবের মাধ্যমে তথ্য সংগ্রহের জন্য প্রচার ও অন্যান্য কার্যক্রমও সম্পন্ন করা হয়েছে।
বিবিএস উপমহাপরিচালক (যুগ্ম সচিব) মোহাম্মদ ওবায়দুল ইসলাম বলেন, অর্থনৈতিক শুমারির মাধ্যমে আমরা দেশের প্রকৃত আর্থিক চিত্র তুলে ধরতে চাই, যা ভবিষ্যতে নীতি প্রণয়ণে সহায়ক হবে। এ জন্য প্রয়োজনীয় সকল প্রস্তুতি এবং কার্যক্রম বাস্তবায়নে আমাদের সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে।
দেশের সর্বপ্রথম অর্থনৈতিক শুমারি ১৯৮৬ সালে অনুষ্ঠিত হয়, এরপর দ্বিতীয় অর্থনৈতিক শুমারি ২০০১ এবং ২০০৩ সালে পর্যায়ক্রমে অনুষ্ঠিত হয়, ৩য় অর্থনৈতিক শুমারি ২০১৩ সালে অনুষ্ঠিত হয়। এরই ধারাবাহিকতায় বর্তমানে বাংলাদেশের ৪র্থ অর্থনৈতিক শুমারি ২০২৪ সালে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। এবারের অর্থনৈতিক শুমারি তথ্য সংগ্রহ পদ্ধতিকে আরও উন্নত করার লক্ষ্যে প্রচার প্রচারণা এবং প্রশিক্ষণ কার্যক্রম ইতোমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে। এই শুমারির মাধ্যমে প্রাপ্ত তথ্য দেশের অর্থনৈতিক নির্দেশকগুলোর বিশ্লেষণ এবং পরিকল্পনা প্রণয়নে একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক হিসেবে বিবেচিত হবে।
Discover more from শিক্ষাবার্তা ডট কম
Subscribe to get the latest posts sent to your email.