ঢাকাঃ আদর্শ শিক্ষকের পরিচয় : যে শিক্ষকের অনুসরণ ও অনুকরণে উন্নত আখলাক চরিত্র গঠন করা যায়, জীবনের কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছা যায় তিনি আদর্শ শিক্ষক। আদর্শ শিক্ষকের উত্তম আদর্শ স্বয়ং রাসুলুল্লাহ (সা.)। পবিত্র কোরআনে এসেছে, তিনি সেই সত্তা ! যিনি নিরক্ষরদের মধ্যে তাদেরই একজন রাসুল হিসেবে পাঠিয়েছেন। যিনি তাদের কাছে তার আয়াতগুলো পাঠ করেন ও তাদের পবিত্র করেন। আর তাদের কিতাব ও সুন্নাহ শিক্ষা দেন। (সুরা জুমআ : ২)। রাসুলুল্লাহ (সা.) ছিলেন আদর্শ শিক্ষক। মুয়াবিয়া বিন হাকাম আস সুলামি (রা.) মহানবীর শিক্ষকতা প্রসঙ্গে বলেন, আমি তার আগে ও পরে তার চেয়ে সুন্দর শিক্ষাদানকারী শিক্ষক আর দেখিনি। আল্লাহর কসম! তিনি আমাকে বকাবকি করেননি। মারেননি এবং গালমন্দ করেননি (মুসলিম : ৫৩৭, নাসায়ি : ১২১৮)। মহানবীর শিক্ষকতার গুণাবলি আদর্শ শিক্ষকের মাঝে পূর্ণমাত্রায় বিদ্যমান থাকে।
আদর্শ শিক্ষকের বৈশিষ্ট্য : একজন আদর্শ শিক্ষকের অন্যতম বৈশিষ্ট্য হলো- প্রতিষ্ঠানের সব কর্মকর্তা, শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকদের সঙ্গে সুন্দর ব্যবহার করা। আর সুন্দর ব্যবহারই চরিত্র। (মুসলিম : ২৫৫৩, মিশকাত : ৫০৭৩)। একজন সচেতন শিক্ষক উত্তম চরিত্র গঠনে শিক্ষার্থীদের মানবিকবোধ জাগিয়ে তোলেন। প্রচলিত স্কুল-কলেজের শিক্ষাব্যবস্থায় অনেক কিছুই অমুসলিমদের অনুসরণ করে প্রস্তুত করা হয়েছে। ফলে ইসলামের নীতি-নৈতিকতাবিষয়ক অনেক কিছুই সিলেবাস হতে বাদ পড়ে যায়। এ শূন্যতা পূরণে আদর্শ শিক্ষকের বিকল্প নেই। আল্লামা ইকবাল (রহ.) ঠিকই বলেছেন, ধার করা শিক্ষায় আদর্শ মানুষ তৈরি হতে পারে না। আদর্শ নৈতিক চরিত্রবান মানুষ তৈরি করতে হলে অবশ্যই ধর্মীয় মূল্যবোধের শিক্ষাব্যবস্থা সর্বত্র চালু করা প্রয়োজন। একজন আদর্শবান শিক্ষকের কাছে প্রত্যেকটি শিক্ষার্থী সমান। ধনী-গরিব, হিন্দু-মুসলমান সবার মধ্যে তিনি শিক্ষার আলো ছড়াতে কার্পণ্য করেন না। অমুসলিম শিক্ষার্থীদের ব্যাপারে আরো তিনি সাবধানতা অবলম্বন করেন। কেননা, রাসুল (সা.) অমুসলিমদের অধিকার আদায়ের সোচ্চার ছিলেন। (আবু দাউদ : ২৬৫৪)।
আদর্শ মানুষ গঠনে ভূমিকা : আদর্শ মানুষ গঠনে একজন শিক্ষক প্রধান ভূমিকা পালন করেন। পিতামাতা সন্তান জন্ম দেন আর একজন শিক্ষক সন্তানকে নীতিনৈতিকতা ও লেখাপড়ার মাধ্যমে আদর্শ সন্তান হিসেবে গড়ে তোলেন। একজন আদর্শ শিক্ষক কখনো অর্থকড়ির জন্য শিক্ষাদান করেন না। আদর্শ মানুষ ও সুনাগরিক গড়ে তোলার জন্য নিরলস মেহনত করে যান। সমাজ থেকে অসত্য ও অন্যায়কে বিদায় করতে এবং সুন্দর ও সভ্যতার বিকাশে একজন শিক্ষকের থাকে বিশেষ অবদান। আদর্শ শিক্ষক শিক্ষার্থীর মন ও মগজে সুস্থ চেতনা ও মনুষ্যত্বের প্রগাঢ় বোধকে জাগিয়ে তোলেন। যা শান্তিপূর্ণ সমাজ গঠনে সবিশেষ ভূমিকা পালন করে। শিক্ষকের ঋণ শোধ করা যায় না। তাই সর্বস্তরের মানুষের অবশ্য কর্তব্য শিক্ষককে যথাযথ সম্মান প্রদর্শন করা। শিক্ষকদেরও উচিত অনৈতিক কাজে জড়িত না হওয়া এবং শিক্ষা বাণিজ্য থেকে বিরত থাকা।
লেখকঃ শরিফ আহমাদ
শিক্ষাবার্তা ডট কম/এএইচএম/০৬/১১/২০২৩
দেশ বিদেশের শিক্ষা, পড়ালেখা, ক্যারিয়ার সম্পর্কিত সর্বশেষ সংবাদ শিরোনাম, ছবি, ভিডিও প্রতিবেদন সবার আগে দেখতে চোখ রাখুন শিক্ষাবার্তায়
Discover more from শিক্ষাবার্তা ডট কম
Subscribe to get the latest posts sent to your email.