ঢাকাঃ তিন দফা দাবি আদায়ের লক্ষ্যে আজ তৃতীয় দিনের মতো পূর্ণদিবস কর্মবিরতি পালন করছেন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকরা। প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কনসালটেশন কমিটির সুপারিশ প্রত্যাখ্যান করে এই আন্দোলনে নেমেছেন সহকারী শিক্ষকরা।
তারা বলছেন, তাদের মূল দাবি ছিল দশম গ্রেড। অন্তত ১১তম গ্রেডের প্রস্তাব হলেও তা গ্রহণযোগ্য হতো। কিন্তু কনসালটেশন কমিটির পক্ষ থেকে ১২তম গ্রেডের সুপারিশ দেওয়া হয়েছে, যা শিক্ষক সমাজের প্রতি অবমাননাকর। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন অব্যাহত থাকবে।
বুধবার দেশের সব সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকরা বিদ্যালয়ে উপস্থিত থেকে কর্মবিরতি পালন করছেন। এ সময় শিক্ষার্থীরা খেলাধুলা, ছবি আঁকাসহ বিভিন্ন সৃজনশীল কার্যক্রমে অংশ নিচ্ছে। শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত রেখেই কর্মবিরতি পালন করছেন শিক্ষকরা।
আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় এর আগে ৫ থেকে ১৫ মে পর্যন্ত প্রতিদিন ১ ঘণ্টা করে মোট ১১ ঘণ্টা, ১৬ থেকে ২০ মে পাঁচ দিন প্রতিদিন দুই ঘণ্টা করে ১০ ঘণ্টা এবং ২১ থেকে ২৫ মে পাঁচ দিন অর্ধদিবস করে তিন ঘণ্টা করে ১৫ ঘণ্টা পাঠদান বন্ধ রাখেন শিক্ষকরা। আজ থেকে পূর্ণদিবস কর্মবিরতির ফলে শিক্ষার্থীদের লেখাপড়া পুরোপুরি বন্ধ হয়ে গেছে। তবে পরীক্ষাগুলো এই কর্মসূচির আওতামুক্ত থাকবে।
এদিকে, তৃতীয় দিনের পূর্ণদিবস কর্মবিরতির দিনেও বিভিন্ন বিদ্যালয়ে স্থানীয় শিক্ষা প্রশাসনের পক্ষ থেকে কর্মবিরতি চলছে না মর্মে শিক্ষকদের কাছ থেকে লিখিত নেওয়ার চাপ দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন শিক্ষকরা।
বাংলাদেশ প্রাথমিক বিদ্যালয় সহকারী শিক্ষক সমিতি এবং সহকারী শিক্ষক সংগঠন ঐক্য পরিষদের আহ্বায়ক মোহাম্মদ শামছুদ্দীন মাসুদ জানিয়েছেন, গত মঙ্গলবার (২৭ মে) নারায়ণগঞ্জে গণহারে শিক্ষকদের শোকজ করা হয়েছে। এছাড়া দেশের বিভিন্ন স্থানে স্থানীয় প্রশাসন কর্মবিরতি পালন করতে বাধা দিচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে। তিনি জানান, দেশের প্রায় ৮০ শতাংশ বিদ্যালয়ে কর্মবিরতি সম্পূর্ণরূপে পালন করা হয়েছে এবং আজও তা অব্যাহত থাকবে।
রাজধানীর মোহাম্মদপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক ও শিক্ষক নেতা খায়রুন নাহার লিপি বলেন, ‘আমরা তৃতীয় দিনের পূর্ণদিবস কর্মবিরতি পালন করছি। কনসালটেশন কমিটির ১২তম গ্রেডের সুপারিশ আমরা মানি না। আমাদের ন্যূনতম দাবি হলো ১১তম গ্রেড। আমরা এর আগেও ২৪ জানুয়ারি কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে এবং ২৬ জানুয়ারি প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরের সামনে এই সুপারিশ প্রত্যাখ্যান করেছি।’
শিক্ষকদের তিন দফা দাবি:
১. কনসালটেশন কমিটির সুপারিশ যৌক্তিকভাবে সংশোধন করে সহকারী শিক্ষক পদকে এন্ট্রি পদ হিসেবে ধরে ১১তম গ্রেডে বেতন নির্ধারণ।
২. ১০ ও ১৬ বছর পূর্তিতে উচ্চতর গ্রেড পেতে যে জটিলতা রয়েছে তা দূর করা।
৩. প্রধান শিক্ষক পদে শতভাগ পদোন্নতির সুযোগসহ দ্রুত পদোন্নতি প্রদান।
শিক্ষাবার্তা ডটকম/এএইচএম/২৮/০৫/২০২৫
Discover more from শিক্ষাবার্তা ডট কম
Subscribe to get the latest posts sent to your email.