এইমাত্র পাওয়া

ইবি ক্যাম্পাসের সকল ধর্মীয় উপাসনালয়ের নিরাপত্তা নিশ্চিতসহ ১১০ দফা দাবি

জামাল উদ্দীন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক: ক্যাম্পাসের সকল ধর্মের অনুসারীদের উপাসনায় নিরাপত্তা নিশ্চিত, বেস্ট টিচার অ্যাওয়ার্ড ব্যবস্থা ও চিকিৎসা সেবায় আধুনিক যন্ত্রপাতি ব্যবহার নিশ্চিতসহ উপাচার্য বরাবর ১১০ দফা জানিয়েছে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (ইবি) শাখা ছাত্রশিবির।

শনিবার (৩০ নভেম্বর) বেলা সাড়ে ১২টায় বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্যের কার্যালয়ে স্মারকলিপি প্রদান করে প্রদান করেন সংগঠনটির নেতাকর্মীরা। এ সময় উপস্থিত ছিলেন, সংগঠনটির সভাপতি এইচ এম আবু মূসা ও সেক্রেটারি মাহমুদুল হাসান এবং দপ্তর সম্পাদক ইউসুফ আলী।

পরে দুপুর ১টায় টিএসসিসির ১১৬ নং কক্ষে প্রেস ব্রিফিং এ সাংবাদিকদের এসব দাবির কথা জানান তারা। এসময় উপস্থিত ছিলেন ইবি সাংবাদিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক তাজমুল হক জায়িম, ইবি প্রস ক্লাবের সভাপতি মনজুরুল ইসলাম নাহিদ, সম্পাদক আজহারুল ইসলাম। এছাড়াও অন্য সাংবাদিকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

তাদের অন্য দাবি গুলো-

  • ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় চিকিৎসা কেন্দ্রের সামগ্রিক আধুনিকায়ন, দক্ষ জনবল নিয়োগ ও একটি স্বয়ংসম্পূর্ণ চিকিৎসা কেন্দ্রে উন্নীতকরণ।
  • বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য আধুনিক যন্ত্রপাতি নিশ্চিতকরণ।
  • চিকিৎসা কেন্দ্রে ওয়ার্ড ব্যবস্থা এবং প্রয়োজনীয় সংখ্যক ডাক্তার ও নার্স নিশ্চিতকরণ।
  • চিকিৎসা কেন্দ্রে বিনামূল্যে বিতরণের জন্য ঔষধ সরবরাহ বৃদ্ধি।
  • বিগত ১৬ বছরে শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে দায়ের করা মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার।
  • বিগত সময়ে হলগুলোতে মাদক, অস্ত্র ও সিট বাণিজ্যের সাথে সম্পৃক্ত ব্যক্তিদের তালিকা প্রকাশ ও তাদের বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কর্তৃক আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ।
  • বিগত আওয়ামী শাসনামলে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সংশ্লিষ্ট সকল দুর্নীতির তথ্য শ্বেতপত্র আকারে প্রকাশ। 
  • বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভাগসমূহে আন্তর্জাতিক মানের গবেষণা ও তা প্রকাশ নিশ্চিতকরণ।
  • উচ্চশিক্ষার লক্ষ্যে সিলেবাসে গবেষণা অন্তর্ভুক্তি এবং গবেষণা সুবিধা বৃদ্ধি। প্রত্যেক বিভাগে মানসম্মত ইংরেজি শিক্ষা নিশ্চিত।
  • গবেষণার জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দ ও শিক্ষার্থীদের গবেষণায় উৎসাহী করতে প্রয়োজনীয় আর্থিক প্রণোদনা। 
  • বিজ্ঞানের বিভিন্ন বিভাগে পর্যাপ্ত ল্যাব সুবিধাসহ গবেষণার জন্য শিক্ষার্থীদের সার্বক্ষণিক অবাধ ব্যবহার নিশ্চিতকরণ।
  • মাস্টার্সের সকল শিক্ষার্থীর জন্য থিসিস বাধ্যতামূলক করা।
  • বিশ্ববিদ্যালয়ের যে সকল স্থাপনা ও ফলক ফ্যাসিবাদের আইকনদের নামে নামকরণ করা হয়েছে তা অবিলম্বে পরিবর্তন।
  • নির্মাণাধীন হলগুলোর নামকরণ ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার লক্ষ্য-উদ্দেশ্যের সাথে সামঞ্জস্যশীল মনীষীদের নামে অথবা জুলাই বিপ্লবের শহীদদের নামে করতে হবে।
  • নন-ক্রেডিট বাংলাদেশ স্টাডিজ কোর্সকে সবার জন্য বাধ্যতামূলক করে কোর্স কন্টেন্ট হিসেবে জুলাই বিপ্লবের পটভূমি ও ইতিহাস পাঠযুক্ত করতে হবে।
  • জুলাই বিপ্লবে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানকে স্মরণীয় করে রাখতে কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারে একটি কর্ণার ও সংগ্রহশালা গড়ে তুলতে হবে।
  • জুলাই বিপ্লব নিয়ে আলোচনা সভা ও সেমিনারসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মিলনায়তনে বড় পর্দায় প্রদর্শনীর আয়োজন করতে হবে।
  • জুলাই বিপ্লব নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্যোগে গবেষণাপত্র প্রকাশের পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।
  • ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস ঐতিহ্য সংরক্ষণের জন্য থানা গেইটে প্রতিষ্ঠা প্রঙ্কর ঘিরে দৃষ্টিনন্দন ইবি মিউজিয়াম গড়ে তুলতে হবে। যেখানে ট্যুরিস্টদের জন্য একটি ছোট মসজিদ থাকবে। মিউজিয়াম এরিয়ায় ইবির ঐতিহাসিক বস্তুসমূহ (যেমন: পুরনো গাড়ি, তৈজসপত্র প্রভৃতি) সংরক্ষণ করতে হবে।
  • ক্যাম্পাসে শতভাগ শিক্ষার্থীর আবাসন নিশ্চিতকল্পে দৃশ্যমান ও কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। একুশ. হল পরিচালনা ও সিট কটনসহ যাবতীয় কার্যক্রম রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত করতে “প্রতি হলে আবাসন, নিশ্চিত করবে প্রশাসন” এই সেগানকে কার্যকর করতে হবে। বাইশ. ডোপ টেস্ট করে শিক্ষার্থীদের হলে আবাসন নিশ্চিত করতে হবে।
  • শিক্ষার্থীদের শতভাগ আবাসিককরণ নিশ্চিত না করা পর্যন্ত মেধা, অর্থনৈতিক অবস্থা ও দূরত্বের বিবেচনায় হলে সিট বণ্টন করতে হবে।
  • বিশ্ববিদ্যালয়ে আইন করে গণরুম-গেস্টরুম কালচার চিরতরে বিলুপ্ত করতে হবে।
  • হল প্রভোস্ট ও হাউজ টিউটরদের ক্যাম্পাসে অবস্থান ও নিয়মিত অফিসে যোগদান নিশ্চিত করতে হবে।
  • আবাসিক শিক্ষার্থীদের সুবিধার্থে রিডিং রুম, লাইব্রেরির পরিসর বৃদ্ধি ও পড়াশোনার সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে।
  • হলের রুম, ডাইনিং রুম ও ওয়াশরুম সংস্কারের প্রয়োজনীয় সকল পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।
  • হলে ইন্টারনেট সেবা ও খাবারের মান উন্নতকরণ এবং সুপেয় পানির ব্যবস্থা করতে হবে।
  • প্রতি হলে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রয়োজনীয় ভর্তুকি নিশ্চিত করতে হবে।
  • বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম সংবিধিতে অন্তর্ভুক্ত ইসলাম ও তুলনামূলক ধর্মতত্ত্ব অনুষদ অনতিবিলম্বে খুলতে হবে। পাশাপাশি কৃষি অনুষদ বৃদ্ধিসহ অন্যান্য অনুষদসমূহে যুগোপযোগী বিভাগ চালু করতে হবে।
  • প্রত্যেক বিভাগে নন-ক্রেডিট ইসলামিক স্টাডিজ কোর্সকে ক্রেডিট কোর্সে এপান্তর ও মুসলিম শিক্ষার্থীদের জন্য মৌলিক ইসলাম শিক্ষা নিশ্চিত করতে হবে। অন্যান্য ধর্মাবলম্বীদের স্ব-স্ব ধর্মীয় শিক্ষা নিশ্চিত করতে হবে।
  • বিভাগসমূহে প্রয়োজনের আলোকে পর্যাপ্ত যোগ্য শিক্ষক নিয়োগ দিতে হবে এবং সকল শিক্ষককে রুটিন অনুযায়ী নিয়মিত ক্লাসে যোগদান বাধ্যতামূলক করতে হবে।

এ বিষয়ে সংগঠনটির সভাপতি এইচ এম আবু মূসা বলেন, আমরা উপাচার্যের কাছে আমাদের স্মারকলিপি দিয়েছি। তিনি বিষয়গুরো নিয়ে কাজ করার আশ্বাস দিয়েছেন। শিক্ষার্থীদের নিয়ে সকল দাবি বাস্তবায়নে আমরা কাজ করবো।

উপাচার্য নকীব মোহাম্মদ নসরুল্লাহ বলেন, তাদের দাবিগুলো যৌক্তিক। আমরা এগুলা নিয়ে কাজ করছি। শিক্ষার্থীদের কল্যাণে সকল দাবি বাস্তবায়নে কাজ করবো।

শিক্ষাবার্তা ডটকম/এএইচএম/৩০/১১/২০২৪


Discover more from শিক্ষাবার্তা ডট কম

Subscribe to get the latest posts sent to your email.