এইমাত্র পাওয়া

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে সেশনজট

মুজাহিদুল ইসলাম: জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় হলো বাংলাদেশের একটি সর্ববৃহৎ শিক্ষাঙ্গন বর্তমান প্রায় ৩২ লাখ শিক্ষার্থী নিয়ে যার শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালিত হয়। বর্তমানে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় কে বলা হয় দেশের সবচেয়ে বড় বেকার তৈরির কারখানা। বর্তমানে বাংলাদেশের শিক্ষিত বেকার যুবকদের একটা বড় অংশ শিক্ষার্থী জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রতিবছর

গ্র্যাজুয়েট হয়ে বের হচ্ছেন। কিন্তু সাটিফিকেট অর্জন হলেও প্রকৃত জ্ঞান ও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে দীর্ঘদিন ধরে চলে বিভিন্ন সীমাবদ্ধতার ফলে শিক্ষার্থীরা তাদের ন্যায্য অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।

সেশনজট জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের কাছে একটি আতঙ্কের নাম। একজন শিক্ষার্থী যখন কোনো পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে চান্স পায় না তখন তাকে বিভিন্ন মানসিক চাপ ও হতাশার মধ্যে দিয়ে যেতে হয়। চান্স না পাওয়ার হতাশা নিয়ে যখন শেষ ভরসা স্থল জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে কেউ ভর্তি হয় ভর্তির পূর্বেই চান্স না পাওয়ার হতাশার সাথে অতিরিক্ত ভাবে যোগ হয় সেশনজট এর নতুন আতঙ্ক। ফলে বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের শুরুতে হতাশা ও সেশনজট আতঙ্ক একজন শিক্ষার্থীকে দিশেহারা করে তোলা।

বাংলাদেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে যেসব শিক্ষার্থীরা পড়েন তাদের শিক্ষা জীবন নির্ধারিত সময়ের মধ্যে শেষ হয়ে যায়। কিন্তু জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ৪ বছরের শিক্ষাজীবন শেষ করতে বিভাগ ভেদে ৫ থেকে ৬ বছর কোনো ক্ষেত্রে তারও বেশি লেগে যায়। ফলে শিক্ষাজীবনের এই দীর্ঘ সময় শেষ করতেই তাদের মধ্যে হতাশার জন্ম নেয়।

বাংলাদেশের সরকারি চাকরির বাজারে সবসময়ই মন্দা অবস্থান বিরাজ করে। চাকরি বাজারের মন্দা অবস্থা এবং দীর্ঘ শিক্ষাজীবন শেষ করে চাকরির বাজারে ঢুকতে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের কয়েক বছর অতিরিক্ত অসময় লেগে যায়। ফলে সরকারি চাকরির ক্ষেত্রেও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীরা পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীর তুলনায় কয়েক গুণ পিছিয়ে পড়ে। যার ফলে দিনশেষে দেশের শিক্ষিত যুবকদের একটা বড় অংশ বেকার হয়ে বসে থাকছে।

অতীতে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় সেশনজট থেকে বের হওয়ার চেষ্টা করলেও করোনা মহামারীতে দীর্ঘদিন শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ ও বিভিন্ন সময় সৃষ্টি হওয়া সমস্যার কারণে সেশনজট থেকে বের হতে পারেনি।

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের একটাই চাওয়া দীর্ঘদিন ধরে চলে আসা জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় ও পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় বৈষম্য যেন দূর করা হয়? শিক্ষা ব্যবস্থা সংস্কারের তালিকায় যেন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় বৈষম্য কে অন্তর্র্বতীকালীন সরকার বিশেষ নজরে দেখেন এবং এই ব্যাপারে কর্তৃপক্ষ যেন দ্রুত সময়ের মধ্যে পদক্ষেপ গ্রহণ করে শিক্ষার্থীদের ন্যায্য অধিকার প্রতিষ্ঠা করেন?

লেখকঃ সম্মান প্রথম বর্ষ, ইতিহাস বিভাগ, রাজশাহী কলেজ

মতামত ও সাক্ষাৎকার কলামে প্রকাশিত নিবন্ধ লেখকের নিজস্ব। শিক্ষাবার্তা’র সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে মতামত ও সাক্ষাৎকারে প্রকাশিত মত সামঞ্জস্যপূর্ণ নাও হতে পারে। প্রকাশিত লেখাটির ব্যাখ্যা বা বিশ্লেষণ, তথ্য-উপাত্ত, রাজনৈতিক ও আইনগতসহ যাবতীয় বিষয়ের দায়ভার লেখকের;- শিক্ষাবার্তা কর্তৃপক্ষের নয়।”

শিক্ষাবার্তা ডটকম/এএইচএম/০৯/১০/২০২৪


Discover more from শিক্ষাবার্তা ডট কম

Subscribe to get the latest posts sent to your email.

Discover more from শিক্ষাবার্তা ডট কম

Subscribe now to keep reading and get access to the full archive.

Continue reading