জয়পুরহাটঃ জেলার শারীরিক প্রতিবন্ধকতাতে হার মানিয়ে বাম হাতের উপর নির্ভর করে এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছে মেধাবী হুজাইফা মোল্লা। নেই তার ডান হাতের কনুই এর নিচের অংশ। বাড়তি সময়ের প্রাপ্যতা থাকলেও সেটি না নিয়ে নির্দিষ্ট সময়ে নিয়মিত জমা করছে পরীক্ষার খাতা। মেধাবী হুজাইফার ইচ্ছা ম্যাজিষ্ট্রেট হওয়ার। জয়পুরহাটের আক্কেলপুর পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে এমনটি দেখা গেছে।
জানা গেছে, উপজেলার ভানুরকান্দা গ্রামের কৃষক মনজুর রহমান ও শাহানা দম্পতির ছেলে হুজাইফা মোল্লা। জন্ম থেকেই ডান হাতের কুনুইয়ের নিচ থেকে নেই। দরিদ্র পরিবারে জন্ম নিয়ে সে শারীরিক অক্ষমতা নিয়ে বড় হতে থাকে। হুজাইফা শিক্ষা জীবনে প্রথম থেকে সপ্তম শ্রেণি পর্যন্ত প্রতিটি শ্রেণিতে প্রথম স্থান অধিকার করে। পরে অষ্টমে গিয়ে দ্বিতীয় হলেও নবম ও দশমে প্রথম স্থান অধিকার করে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, এবারের এসএসসি পরীক্ষার আক্কেলপুর পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রের নয় নম্বর কক্ষে বাম হাতে লিখে পরীক্ষা দিচ্ছে সোনামুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্র হুজাইফা মোল্লা। তার ডান হাতের কুনুইয়ের নিচ থেকে নেই। সে অন্যান্য সুস্থ্য ও স্বাভাবিক পরীক্ষার্থীর মতই বাম হাতে লিখে যাচ্ছে।
হুজাইফা জানান, জন্ম থেকেই আমার ডান হাত নেই। বাম হাত দিয়েই সকল কাজকর্ম করতে পারে। বাম হতে লিখে এবার এসএসসি পরীক্ষা দিচ্ছি এখন পর্যন্ত পরীক্ষাগুলো খুব ভাল হয়েছে। তার ইচ্ছা ভবিষ্যতে ম্যাজিষ্ট্রেট হওয়ার। প্রমাণ করতে চান প্রতিবন্ধিতা কোনো বাধা নয়।
হুজাইফার বাবা মনজুর রহমান বলেন, ছোট থেকেই হুজাইফা পড়ালোখায় মেধাবী। সংসারের সকল কাজ করে পরিবারে সহযোগীতা করে আসছে। তার ইচ্ছা পূরনে আমরা সর্বপ্রকার চেষ্টা করে যাচ্ছি।
সোনামুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুর রহমান বলেন, স্কুলের সকল পরীক্ষায় বাম হাত দিয়ে লিখেই প্রথম স্থান অধীকার করেছে। বিদ্যালয় থেকে তাকে উপবৃত্তিসহ সকল সুযোগ সুবিধা দেওয়া হয়েছে।
উপজেলা সমাজ সেবা কর্মকর্তা সাজেদুল ইসলাম বলেন, হুজাইফাকে সমাজ সেবা দপ্তর থেকে আর্থিক ভাতা করে দেওয়া হয়েছে। আমরা তার পাশে আছি।
আক্কেলপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মনজুরুল আলম বলেন, হুজাইফাকে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাকে সার্বিক সহযোগীতা করা হবে।
শিক্ষাবার্তা ডট কম/এএইচএম/০২/০৩/২০২৪
Discover more from শিক্ষাবার্তা ডট কম
Subscribe to get the latest posts sent to your email.