এইমাত্র পাওয়া

রাজাপুরে মাদ্রাসা সুপারের বিরুদ্ধে ফরম পূরণে অতিরিক্ত অর্থ আদায়ের অভিযোগ

রাজাপুর প্রতিনিধি :

ঝালকাঠি জেলার রাজাপুর উপজেলার চল্লিশকাহনিয়া-উত্তমপুর দাখিল মাদ্রাসার দাখিল পরিক্ষার্থীদের কাছ থেকে ফরম পূরণ ফি বাবদ অতিরিক্ত টাকা নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে প্রতিষ্ঠানের ভারপ্রাপ্ত সুপারিনটেনডেন্ট নুরুল ইসলামের বিরুদ্ধে। অকৃতকার্য হওয়া সত্ত্বেও টাকার বিনিময়ে দাখিল পরীক্ষায় সুযোগ তৈরী করে দেওয়াসহ বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগ আছে তার বিরুদ্ধে।

স্থানীয়রা জানায়, সুপার সাইফুল ইসলাম অসুস্থ থাকায় ভারপ্রাপ্ত সুপার হিসেবে নুরুল ইসলাম দ্বায়িত্ব নিয়ে মাদ্রাসাটিকে জামাতের আতুরঘরে পরিনত করেছেন। অকৃতকার্য ছাত্র-ছাত্রীদের দাখিল পরীক্ষার ফরম ফিলাপের জন্য অতিরিক্ত টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন।সরকার নির্ধারিত বোর্ড ফি ১৬২৫ টাকা এবং কেন্দ্র ফি ৪০০ টাকা হলেও নিচ্ছেন ২৮৫০ টাকা। এসব অনিয়মের বিরুদ্ধে স্থানীয় মানুষ মুখ খুলতে শুরু করেছেন।

স্থানীয় যুবক মামুন জানান, নুরুল ইসলামের অনিয়মের বিষয়টি এলাকায় এখন ওপেনসিক্রেট। অতিরিক্ত টাকা আদায়, গোপনে বই বিক্রি করা, কোচিং বাণিজ্য করাসহ নানা অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। অপর একটি সূত্র জানায়, নুরুল ইসলামের বাড়ি স্বরুপকাঠী।তিনি মাদ্রাসার কাছে একটি বড়িতে থাকলেও জামাতের কর্মকান্ডের জন্য রাজাপুর, ঢাকা ও বিভিন্ন স্থানে চলে যান দলীয় কর্মকান্ডের জন্য। শিক্ষকদের গত ২৮ অক্টোবর অলিখিত ছুটি দিয়েছেন ঢাকায় জামাতের সমাবেশে অংশ নেয়ার জন্য।মাদ্রাসার শিক্ষক সাইয়েদ আহম্মেদ ঢাকায় জামাতের ডাকা কর্মকান্ডে অংশ নেন বলে স্থানীয় আওয়ামীলীগ নেতা আব্দুল হাই নিশ্চিত করেছেন।

মাদ্রাসার ভারপ্রাপ্ত সুপারিনটেনডেন্ট নুরুল ইসলাম মাদ্রাসায় নেই ।অন্য শিক্ষকরা বললেন তিনি রাজাপুর গেছেন ।কেন গেছেন তা জানেন না।

দাখিল পরীক্ষার ফরম ফি বাবদ অতিরিক্ত টাকা নেওয়ার বিষয়ে পরীক্ষার্থীদের একাধিক অভিভাবকরা বলেন, প্রতি পরীক্ষার্থী থেকে নেয়া হয়েছে ২৮৫০ টাকা ।তবে টাকা নিয়ে কোন রশিদ প্রদান করেননি।অতিরিক্ত টাকা নেয়াটা অন্যায় ও জুলুম।তারা বলেন বাচ্চাদের ভবিষ্যাতের কথা চিন্তা করে প্রতিবাদ করতে পারিনি।

ভারপ্রাপ্ত সুপার নুরুল ইসলাম এর মোবাইলে কল করা হলে তিনি কল রিসিভ করে বলেন,মাদ্রাসায় ফরম ফিলাপ বাবদ ২৮৫০ টাকা নেয়া হয়েছে ম্যানেজিং কমিটির সিদ্ধান্তনুযায়ী।২৮৫০ টাকা কিছুই না। অন্য মাদ্রাসায় এর থেকেও বেশী নেয়।

ভারপ্রাপ্ত সুপারের নিকট মোট কতজন শিক্ষক ও ছাত্র-ছাত্রী এই প্রতিষ্ঠানে আছেন এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এটা আমার জানা নেই। একজন ভারপ্রাপ্ত সুপারিনটেনডেন্ট হিসেবে আপনার প্রতিষ্ঠানের এসব তথ্য জানা নেই কেন এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি কোন সদুত্তোর দিতে পারেননি।তবে বলেছেন দাখিল পরীক্ষার্থী রয়েছেন ২৭ জন।

ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি হারুনার রশিদের কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি গনমাধ্যমকে বলেন, আমি কিছুই জানিনা। ব্যাপারটি জানেন ভারপ্রাপ্ত সুপার নুরুল ইসলাম।

উল্লেখ্য,চল্লিশকাহনিয়া-উত্তমপুর দাখিল মাদ্রাসাটিতে জাতীয় দিবস পালন না করা,জাতীয় পতাকা উত্তোলন না করা,জামাতের গোপন মিটিং,দু জন কর্মচারী নিয়োগে ৮ লাখ টাকা ঘুষ নেয়ার অভিযোগে একাধিকবার পত্র পত্রিকার শিরোনাম হয়েছিল মাদ্রাসাটি।

মাদ্রাসার শিক্ষক সাইয়েদ আহম্মেদ ও ম্যানেজিং কমিটির সভাপতির বিরুদ্ধে নাশকতা ,প্রধানমন্ত্রী ও জাতির জনকের ছবি ভাংচুর এবং আওয়ামীলীগ অফিস ভাংচুরের অভিযোগে মামলাও হয়েছিল।

শিক্ষাবার্তা ডট কম/এএইচএম/১৫/১১/২০২৩ 

দেশ বিদেশের শিক্ষা, পড়ালেখা, ক্যারিয়ার সম্পর্কিত সর্বশেষ সংবাদ শিরোনাম, ছবি, ভিডিও প্রতিবেদন সবার আগে দেখতে চোখ রাখুন শিক্ষাবার্তায়


Discover more from শিক্ষাবার্তা ডট কম

Subscribe to get the latest posts sent to your email.