Breaking News

নতুন শিক্ষাক্রম নিয়ে নানা প্রশ্ন: ভুল-ত্রুটি পর্যালোচনা জরুরি

ঢাকাঃ শিক্ষা জাতির মেরুদণ্ড। এ কথা আমরা সব সময় বলি। কিন্তু দেশে শিক্ষা নিয়ে যেসব পরীক্ষা-নিরীক্ষা অতীতে হয়েছে এবং এখনো হচ্ছে তা সুখকর নয়। সময়োপযোগী শিক্ষার নামে এগুলো করা হলেও আমাদের শিক্ষাব্যবস্থা বৈশ্বিক মানে অনেক পিছিয়ে। অন্যান্য দেশের শিক্ষার্থীদের সাথে প্রতিযোগিতায় দেশের ছাত্রছাত্রীরা টিকছে না। এই প্রেক্ষাপটে সরকার শিক্ষাব্যবস্থা বৈশ্বিক মানের উপযোগী করতে চলতি বছর নতুন শিক্ষা কারিকুলামের প্রবর্তন করেছে।

জানা যায়, নতুন শিক্ষাক্রম নিয়ে অভিভাবক-শিক্ষার্থীদের মধ্যে অনেক আপত্তি। সরকার বলছে, শিক্ষায় এতবড় একটি রূপান্তরের ক্ষেত্রে এক বছর খুব বেশি সময় নয়। এতে অভিভাবকরা ধীরে ধীরে অভ্যস্ত হবেন, শিক্ষকরা পর্যায়ক্রমে প্রশিক্ষণ পাচ্ছেন। নতুন বইগুলোর এখনো পরীক্ষামূলক সংস্করণ চলছে কারণ ক্রমাগত এর পরিমার্জন করা হচ্ছে। কিন্তু সিস্টেম পরিবর্তন হবে না।

নতুন শিক্ষাক্রমের মূল্যায়নপদ্ধতির ত্রিভুজ চিহ্ন বাতিল করে আগের মতো নম্বরভিত্তিক পরীক্ষা চালুর দাবি জানিয়েছে শিক্ষার্থী অভিভাবক ফোরাম নামের একটি সংগঠন। দেশের আর্থসামাজিক প্রেক্ষাপটে নতুন কারিকুলাম অনুপযুক্ত বলে মনে করেন সংগঠনটির নেতারা। তাই নতুন শিক্ষা কারিকুলাম সংস্কারের দাবি তাদের। দাবি আদায়ে সংগঠনটি ২৪ নভেম্বর ঢাকায় অভিভাবক ও শিক্ষার্থীদের একত্রিত করে সরকারকে চূড়ান্ত একটি বার্তা দেয়ার ঘোষণা দিয়েছে। নতুন কারিকুলাম বাতিল, নম্বরভিত্তিক লিখিত পরীক্ষা চালু, নবম শ্রেণীতে বিভাগ বিভাজন রাখাসহ আট দফা দাবি জানানো হয়েছে।

অন্য দিকে, শিক্ষামন্ত্রী ডা: দীপু মনি বলেন, নতুন শিক্ষাক্রম সংস্কার বা বাতিলের দাবিতে যারা আন্দোলন করছেন, তাদের বেশির ভাগ কোচিং বাণিজ্যের সাথে জড়িত। তাদের দাবি একেবারেই যৌক্তিক নয়। আন্দোলনকারীদের মূল উদ্দেশ্য হলো তাদের কোচিং বাণিজ্য টিকিয়ে রাখা। দুঃখজনক হলেও সত্য এর সাথে কিছু শিক্ষক জড়িত।

জানা যায়, নতুন কারিকুলামে সাময়িক পরীক্ষার মতো লিখিত পরীক্ষা নেই। রয়েছে প্রতিদিনের শেখার মূল্যায়ন। সামষ্টিক মূল্যায়নের নামে রয়েছে দলগত কাজ, প্রজেক্ট বা অ্যাসাইনমেন্ট। এগুলো কিভাবে করতে হবে তার কিছুই শিক্ষার্থীরা বুঝতে পারছে না। শিক্ষকরাও এসব বিষয় বোঝেন না। এছাড়া এক-এক সময়ে এক-এক রকম নির্দেশনা আসছে। অপর্যাপ্ত শিক্ষক আর ঘিঞ্জি ক্লাসে অতিরিক্ত শিক্ষার্থী নিয়ে ক্লাস বা মূল্যায়ন কিছুই সঠিকভাবে হচ্ছে না। ফলে অভিভাবকদের বাড়তি টাকা ও সময় ব্যয় হচ্ছে।

নতুন শিক্ষাক্রমে ফল নির্ধারণ হবে শুধু চিহ্ন পদ্ধতিতে। এগুলোতে শিক্ষার মানের কী উন্নতি হয় শিক্ষক-অভিভাবক-শিক্ষার্থী কারো তা জানা নেই। ফলে অনেক স্কুলে অনৈতিক চর্চা ও দুর্নীতি বাড়ছে। শিক্ষার্থীরা হতাশ হচ্ছে এবং মানসিকভাবে ভেঙে পড়ছে। এ কারিকুলামের ফলে শুধু শিক্ষার্থীরা নয়, অভিভাবক এবং শিক্ষকরাও চরম নৈরাজ্যকর এক পরিস্থিতির মধ্যে পড়েছেন।

কোনো কিছু ভুল-ত্রুটির ঊর্ধ্বে নয়। তাই সংশোধন-পরিমার্জনের বিষয়টি সব বিবেচনায় রাখতে হয়। সঙ্গত কারণে আমরা বলতে চাই, নতুন কারিকুলাম নিয়ে উদ্ভূত প্রশ্ন ও জটিলতা নিরসনে সব পক্ষের বক্তব্য শুনতে হবে। বিশেষজ্ঞদের দিয়ে তা যাচাই-বাছাই করে গ্রহণ বর্জনের মাধ্যমে এগোতে হবে।

শিক্ষাবার্তা ডট কম/এএইচএম/১৩/১১/২০২৩ 

দেশ বিদেশের শিক্ষা, পড়ালেখা, ক্যারিয়ার সম্পর্কিত সর্বশেষ সংবাদ শিরোনাম, ছবি, ভিডিও প্রতিবেদন সবার আগে দেখতে চোখ রাখুন শিক্ষাবার্তায়


Discover more from শিক্ষাবার্তা ডট কম

Subscribe to get the latest posts sent to your email.

Check Also

চাকরির নামে লক্ষ টাকা আত্মসাৎ প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে মামলা

সাতক্ষীরাঃ সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার কৈখালী ইউনিয়নের সাহেবখালী সিদ্দিক গাজী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ আরিফ …