এইমাত্র পাওয়া

বাউবির কারিগরি শিক্ষা

ড. মো. তৌহিদুল ইসলামঃ গত ২১ অক্টোবর বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় (বাউবি) একত্রিশ পেরিয়ে বত্রিশতম বছরে পদার্পণ করেছে। বয়স, লেভেল ও পেশার ওপর ভিত্তি করে সবার জন্য শিক্ষার দ্বার উন্মুক্ত করার লক্ষ্যে ১৯৯২ সালে এ বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাউবি) যাত্রা শুরু হয়। প্রাথমিকভাবে সাধারণ শিক্ষার ওপর গুরুত্বারোপ করে স্বল্পসংখ্যক কারিগরি শিক্ষার সমন্বয়ে বিশ্ববিদ্যালয়টির যাত্রা শুরু হলেও বিগত এক দশকে কারিগরি শিক্ষার ওপর বিশেষ নজর দেওয়া হয়েছে।

মূলত দুটি স্কুল-কৃষি ও পল্লি উন্নয়ন এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির মাধ্যমে বাউবিতে কৃষি, প্রকৌশল ও চিকিৎসা বিজ্ঞানবিষয়ক কারিগরি শিক্ষা প্রদান করা হয়। বর্তমানে কৃষি ও পল্লি উন্নয়ন স্কুলের মাধ্যমে ব্যাচেলর অব অ্যাগ্রিকালচারাল এডুকেশন, মাস্টার ইন অ্যাগ্রিকালচারাল সায়েন্স, মাস্টার ইন সাসটেইনেবল অ্যাগ্রিকালচার অ্যান্ড রুরাল লাইভলিহুড এবং কৃষিবিষয়ক পিএইচডি ডিগ্রি প্রদান করা হয়। তাছাড়া ব্যাচেলর অব সায়েন্স ইন অ্যাগ্রিকালচার (বিএসসি.এজি) প্রোগ্রাম চালুকরণের বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি স্কুলের অধীনে বিএসসি ইন কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং, বিএসসি ইন ফুড সায়েন্স অ্যান্ড নিউট্রিশন, মাস্টার ইন পাবলিক হেলথ এবং বিজ্ঞানের বিভিন্ন বিষয়ে পিএইচডি ডিগ্রি চালু রয়েছে। এ প্রোগ্রামগুলো বাউবির শিক্ষকদের সরাসরি তত্ত্বাবধানে অথবা স্বনামধন্য কোনো বিশ্ববিদ্যালয় বা উচ্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যৌথভাবে পরিচালিত হয়। বাউবিতে কারিগরি শিক্ষার প্রসারে গড়ে উঠেছে অত্যাধুনিক ল্যাবরেটরি। কৃষি ও পল্লি উন্নয়ন স্কুলের অধীনে দুটি ল্যাবরেটরি গড়ে উঠেছে, যার একটি অ্যানালিটিক্যাল এবং অন্যটি মাঠ গবেষণাগার। অ্যানালিটিক্যাল ল্যাব পিসিআর, ক্লিনবেঞ্চ, স্প্যাক্টোফটোমিটার, অটোক্ল্যাব, রেফ্রিজারেটর, গ্রোথ চেম্বার, সেন্ট্রিফিউজ, ব্যালেন্স, রিফ্রেক্টোমিটারসহ আধুনিক সরঞ্জামে সজ্জিত করা হয়েছে। এ সরঞ্জামাদি মূলত মাস্টার ও পিএইচডি ডিগ্রি শিক্ষার্থীদের উপযোগী। বিএসসি.এজি প্রোগ্রাম চালুর উদ্দেশ্যে এ স্কুল প্রথম বর্ষের জন্য প্রয়োজনীয় সরঞ্জামাদি ইতোমধ্যে ক্রয় করেছে এবং ক্রমান্বয়ে চতুর্থ বর্ষ পর্যন্ত প্রয়োজনীয় সরঞ্জামাদি ধারাবাহিকভাবে ক্রয় করা হবে। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি স্কুলের অধীনে অত্যাধুনিক কম্পিউটার ও বায়োলজিক্যাল ল্যাব স্থাপন করা হয়েছে, যা এইচপিএলসি, অটোক্ল্যাব, ডাবল বিন স্প্যাক্টোফটোমিটার, সক সিলেক্ট অ্যাপারেটাস, অ্যাটোমিক অ্যাবজরপশন, ফুড অ্যানালাইজার, পিসিআরসহ আধুনিক সরঞ্জামে শিক্ষার্থীদের শিক্ষার জন্য সাজানো হয়েছে।

প্রোগ্রামগুলো পরিচালনা এবং নিত্যনতুন প্রোগ্রাম চালুর উদ্দেশ্যে বর্তমানে কৃষি ও পল্লি উন্নয়ন স্কুলে ১১ জন এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি স্কুলে ১২ জন শিক্ষক নিয়োজিত। কৃষি ও পল্লি উন্নয়ন স্কুলের শিক্ষকদের সবাই পিএইচডি ডিগ্রিধারী এবং এ স্কুলে বর্তমানে সর্বনিম্ন পদবি হলো সহযোগী অধ্যাপক। তাছাড়া এ স্কুলে ছয়জন প্রভাষকের শূন্যপদে নিয়োগ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। কারিগরি বিষয়ে উচ্চতর ডিগ্রি প্রদানে বাউবির সক্ষমতা নিয়ে কোনো প্রশ্ন ওঠা উচিত নয়। কিন্তু তারপরও এ বিষয়ে অনেককেই বিরূপ মন্তব্য করতে দেখা যায়। বস্তুত বাউবি সক্ষমতার অভাবে নয়, বরং ইমেজ সংকটে রয়েছে। যেহেতু শিক্ষার্থী সংখ্যার দিক থেকে বাউবি বৃহত্তম বিশ্ববিদ্যালয়, সেহেতু এ ইমেজ সংকট কোনো অস্বাভাবিক ঘটনা নয়। বাউবিকে অ্যাভারেজ দিয়ে নয়, বরং প্রোগ্রাম দিয়ে মূল্যায়ন করতে হবে।

লেখক: সহযোগী অধ্যাপক, কৃষি ও পল্লি উন্নয়ন স্কুল, বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়

শিক্ষাবার্তা ডট কম/এএইচএম/২৬/১০/২০২৩    

দেশ বিদেশের শিক্ষা, পড়ালেখা, ক্যারিয়ার সম্পর্কিত সর্বশেষ সংবাদ শিরোনাম, ছবি, ভিডিও প্রতিবেদন সবার আগে দেখতে চোখ রাখুন শিক্ষাবার্তায়


Discover more from শিক্ষাবার্তা ডট কম

Subscribe to get the latest posts sent to your email.