এইমাত্র পাওয়া

আমাদের দুর্বল মেরুদণ্ড এবং বিদেশি শিক্ষক

ড. এম এল আর সরকার :

শিক্ষাই জাতির মেরুদণ্ড। শিক্ষার গুরুত্ব অপরিসীম। আমরা সবার ঘরে ছড়িয়ে দিয়েছি/দিচ্ছি শিক্ষার মহতী আলো। এ আলো আজ এতই বিস্তৃত যে, সবার হাতে হাতে এখন চকচক করছে সোনার মতো A+/A গ্রেডের সার্টিফিকেট। বাবা-মা মুগ্ধ, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান দায়িত্বমুক্ত এবং সরকার গর্বিত।

এ চকচকে মেরুদণ্ডের প্রথম পরীক্ষা হয় কলেজের গণ্ডি পেরিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির ক্ষেত্রে এবং দ্বিতীয় পরীক্ষা হয় বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠ শেষে কর্মক্ষেত্রে যোগদানের সময়।

উভয় ক্ষেত্রেই দেখা যাচ্ছে, এ অতি উচ্চমানের মেরুদণ্ডগুলো মড়মড় করে ভেঙে যাচ্ছে; নতুবা বাঁশের কচি কঞ্চির মতো একটু ভারেই বেঁকে মাটিতে নুয়ে পড়ে সালাম করছে। যাদের চকচকে সার্টিফিকেট বলছে, এদের মেরুদণ্ড সোজা থাকবে ০০ ডিগ্রি বরাবর; কিন্তু তা হচ্ছে না। এদের মেরুদণ্ড বেঁকে যাচ্ছে ৯০০ নতুবা ডিগ্রি ১৮০০ বরাবর।

সবার প্রশ্ন হচ্ছে, এ যুবসমাজের মেরুদণ্ড বেঁকে গেল কী করে? এরা তো বয়সের ভারে ভারাক্রান্ত নয়। এরা তো সমাজ-সংসারে কিছুই দেয়নি। তবে কি ভুল করে এদের দেহে জোড়া দেয়া হয়েছে ১০০ বছর বয়স্ক লোকের মেরুদণ্ড? এসব প্রশ্নের উত্তর চাওয়া বা পাওয়া সত্যিই অবান্তর।

যার মেরুদণ্ড ভেঙে বা বেঁকে যাচ্ছে, তারা বলবে- আমরা কিছুই জানি না। আমাদের মেরুদণ্ড তো স্যারেরা যাচাই-বাছাই করেই সার্টিফিকেট দিয়েছে। শিক্ষকরা বলবে, আমাদের কী করার আছে! সরকার আমাদের যেভাবে বলেছে, আমরা তো সেভাবেই মেরুদণ্ড তৈরি করেছি।

সরকার বলবে, আমরা মেরুদণ্ড তৈরির জন্য অনেক বরাদ্দ বাড়িয়েছি, তারপরও এ মেরুদণ্ড ভেঙে গেল কী করে? কোনো অন্তর্ঘাত হল কিনা, তা তদন্ত করে দেখতে হবে। আর মেরুদণ্ড ভাঙা ছেলেমেয়েদের হতভম্ব অভিভাবকের কাছে জানতে চাইলে বলবে, টাকা-পয়সা, বইপুস্তক এবং মাস্টার সবই তো দিয়েছিলাম; কিন্তু এখন দেখছি ছেলেমেয়ে পেয়েছে ভাঙা মেরুদণ্ড।

কিন্তু প্রকৃত সত্যটা অন্যরকম। আমাদের ছাত্র, শিক্ষক, অভিভাবক, সরকার সবাই ওয়াকিবহাল যে, জাতির এ মেরুদণ্ড তৈরিতে যথেষ্ট ভেজাল মেশানো হয়েছে/হচ্ছে। শুধু কেউ দোষ স্বীকার করতে চাচ্ছে না।

সবার জ্ঞাতসারে এক জাতীয় ভেজাল মেরুদণ্ড তৈরি প্রক্রিয়া চলছে অনেক কারণে- ১. ছাত্রছাত্রীরা দেখছে, তাদের পড়ানোর লোক নেই; কিন্তু পরিবারে চাপ হচ্ছে, যে কোনোভাবেই হোক A+/A পাওয়া চাই, ২. শিক্ষকরা জানে, তাদের সামর্থ্য নেই; কিন্তু সরকারের চাপ হচ্ছে, ভালো ফলাফল করাতেই হবে, ৩. অভিভাবকরা জানেন, ভালো ফলাফল করা সবার ছেলেমেয়েদের পক্ষে সম্ভবপর নয়; কিন্তু সমাজের ও চাকরির বাজারের চাপ হচ্ছে, ভালো ফলাফল চাই। ৪. সরকার ওপরের সবকিছুই জানে এবং এও জানে যে, এ ফলাফল অসম্ভব। কিন্তু সবকিছু জেনেও এটি চাচ্ছে/মেনে নিচ্ছে; কারণ উন্নয়ন ও ভোটের চাপ।

শত শত নকল মেরুদণ্ড নিয়ে জাতি আজ শঙ্কিত। কিন্তু একশ্রেণীর লোক আছে, যারা শুধু নিজেদের স্বার্থেই এ ভেজাল মেরুদণ্ড ঘরে ঘরে ছড়িয়ে দিচ্ছে। সাধারণ মানুষের ঘরে ০০ খাড়া, না ১৮০০ ডিগ্রি বাঁকা মেরুদণ্ড গেল, তা নিয়ে তাদের মাথাব্যথা নেই; বরং তারা মনে করে, গরিবের ঘরে শক্ত মেরুদণ্ডের কী প্রয়োজন? মেরুদণ্ড শক্ত হলেই সমস্যা।

সমাজের প্রত্যেকটি স্তরের শোষণ, অবিচার এবং নিপীড়নের বিরুদ্ধে এরা প্রতিবাদ করবে। কিন্তু ঘরে ঘরে বাঁকানো মেরুদণ্ড বিশিষ্ট যুবসমাজ থাকলে কোনোদিন তারা মাথা তুলে দাঁড়াতে পারবে না। লজ্জায় মাথানত করেই এরা সমাজের প্রভু শ্রেণীর মানুষের গোলাম হয়ে থাকবে।

চিরজীবন শুধু সালামই দিয়ে যাবে। প্রভুরা শত শত বাঁকানো মেরুদণ্ডের ওপর দিয়ে অতি অনায়াসেই তর তর করে সাফল্যের সিঁড়ি বেয়ে ওপরে উঠে যাবে। মানুষকে পদদলিত করে ওপরে ওঠার এক অপূর্ব ব্যবস্থা!

অনেকেই হয়তো ভাবছেন, আমার কথাগুলো অতি কাল্পনিক। এগুলোর কোনো বাস্তবতা নেই। তাদের জ্ঞাতার্থে বলছি- একটু খোঁজ নিলেই দেখবেন, সমাজে কারা এ ভেজাল মেরুদণ্ডধারী। কারা এ সরকারি বা আধাসরকারি স্কুল, মক্তব, মাদ্রাসা এবং কলেজে পড়ছে।

এ ধরনের শত শত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কি সমাজের উচ্চশ্রেণীর কারও ছেলেমেয়ে লেখাপড়া করে? সামান্য কিছু ব্যতিক্রম ছাড়া এ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে না আছে ভালো শিক্ষক, না আছে প্রয়োজনীয় আসবাবপত্র এবং অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা; যার ফলে তৈরি হচ্ছে না ভালো ছাত্রছাত্রী, যদিও কালেভদ্রে দু’একটি মেধাবী ছাত্রছাত্রী নিজগুণেই ভালো ফলাফল করছে।

কিন্তু সাধারণ এ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে কীভাবে ভালো শিক্ষক নিয়োগ প্রদান করা যায় এবং কীভাবে স্কুলগুলোতে পর্যাপ্ত সুযোগ-সুবিধা বাড়ানো যায়, সে ব্যাপারে কোনো চিন্তাই কারও মধ্যে নেই; যা আছে তা হল, লোক দেখানো একটা প্রয়াস মাত্র।

শিক্ষার সমস্যা নিয়ে কথা উঠলেই দেখা যায়, সরকার বলে থাকে- শিক্ষাব্যবস্থাকে ঢেলে সাজানো হবে। এ ঢেলে সাজানো হচ্ছে অনেকদিন থেকেই। বারবার শুধু ঢেলেই সাজানো হচ্ছে।

কেন বারবার এ ঢেলে সাজাতে হচ্ছে? কারা ঢেলে সাজাচ্ছে? কাদের জন্য এ ঢেলে সাজানো? ঢেলে সাজালে কারা উপকৃত হবে? কাদের পকেটে এর অর্থ যাচ্ছে? সবকিছুই আসলে অস্বচ্ছ। আমার মনে হয়, সরকার জানতেই চায় না জাতির এ মেরুদণ্ডের উন্নতি করতে হলে কোন বিষয়টি সর্বাগ্রে ঢেলে সাজানো প্রয়োজন।

আমাদের স্কুল বা কলেজগুলোর পাঠ্যক্রম আগে কি খুবই খারাপ ছিল? সেই পাঠ্যক্রম ইতিমধ্যে কয়েক দফা ঢেলে সাজানো হয়েছে। এবার বলুন তো, তাতে কি কোনো উপকার হয়েছে?

সরকার বলছে, আবারও শিক্ষাব্যবস্থা ঢেলে সাজানো হবে। প্রায়ই ঢেলে সাজানোর বিভিন্ন পদক্ষেপ খবরের কাগজে আসছে। আমার মনে হয়, শুধু এবারের ঢেলে সাজানো নয়; সরকার যদি আরও কয়েকশ’বার পুরনো পাঠ্যক্রম মাটিতে ঢেলে দিয়ে নতুন পাঠ্যক্রম তৈরি করে, তাতেও অর্থের ব্যাপক অপচয় ছাড়া আর বেশিকিছুই হবে না।

আসলে ঢেলে সাজাতে হবে আমাদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোকে, আমাদের ন্যায়নীতির বিচারবোধকে, আমাদের অতিরিক্ত চাহিদাকে এবং আমাদের মানসিকতাকে। তবে সবকিছু না হলেও যত দ্রুত সম্ভব ঢেলে সাজাতে হবে প্রাথমিক, মাধ্যমিক, উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষাব্যবস্থাকে।

অতঃপর আমাদের অবশ্যই নজর দিতে হবে উচ্চশিক্ষা ব্যবস্থার দিকে। কেন এটি প্রয়োজন, সেটি ব্যাখার জন্য একজন প্রাইমারি স্কুলের শিক্ষিকার একটি ট্রেনিং প্রোগ্রামের শিক্ষা অফিসার/সহকারী শিক্ষা অফিসারকে বলা একটি গল্প বলছি।

গল্পটি হচ্ছে, এক কৃপণ লোকের ছিল কয়েকটি ছেলেমেয়ে। লোকটির বউ তাকে বলত- দেখ, ছেলেমেয়েদের শারীরিক বৃদ্ধির জন্য পুষ্টিকর খাদ্য প্রয়োজন। বউ প্রায়ই অনুরোধ করত বাচ্চাদের জন্য গোয়ালার কাছ থেকে দুধ নিয়ে আসতে। অনেকটা বিরক্ত হয়েই লোকটি শেষ পর্যন্ত এক গোয়ালার কাছে যায় দু’কেজি দুধ কেনার জন্য। দু’কেজি দুধের দাম গোয়ালা চায় ১০০ টাকা। কিন্তু লোকটি দাম দিতে চাইল ৮০ টাকা।

তখন গোয়ালা কোনো আপত্তি করল না। বলল, হ্যাঁ দুধ দেয়া যাবে, কোনো সমস্যা নেই। কৃপণ লোকটি দুধ নিয়ে বাড়িতে এলো। কিন্তু মনে তার খুবই আফসোস, ইস দামে ঠকে গেলাম। আর একটু দরাদরি করলেই দাম কম পাওয়া যেত।

পরের সপ্তাহে লোকটি দুধ আনতে গিয়ে গোয়ালাকে বলল, ভাই দুধের দাম আর একটু কম নিতে হবে। আজ আমি ৬০ টাকা দেব। গোয়ালা এবারও কোনো আপত্তি করল না। বলল, হ্যাঁ দেয়া যাবে। এবারও লোকটি বাড়ি গিয়ে ভাবল, আজও ঠকলাম। আমি দাম আর একটু কম বললেই হতো।

পরের সপ্তাহে লোকটি দুধ আনতে গিয়ে গোয়ালাকে বলল, ভাই আজ কিন্তু দুধের দাম আমি ৪০ টাকা দেব। এবারও গোয়ালা কোনো আপত্তি করল না। বলল, হ্যাঁ দেয়া যাবে। তবে দুধের রং একটু অন্য রকম হবে, কারণ পানি একটু বেশি মেশাতে হবে।

এ গল্প বলার পর ওই শিক্ষিকা বলেছিল, স্যার এক সময় আপনারা আমাদের বলেছেন, ছেলেমেয়েদের ৬০ শতাংশ পাস করাতে হবে। আমরা সাধ্যমতো চেষ্টা করেই সেটি করেছিলাম। তারপর বললেন- না, পাস কম হল। এখন থেকে পাসের হার ৭০ শতাংশের ওপর হতে হবে। আমরা বিনা বাক্যব্যয়ে সেই ব্যবস্থাই করেছিলাম।

কিন্তু আপনারা সন্তুষ্ট হলেন না। বললেন, আগের মতো ৭০ শতাংশ পাসে আর চলবে না। এখন পাসের হার ৮০ শতাংশের ওপর হতে হবে। আমাদের আর কী বলার ছিল? আমরা বাধ্য হয়ে সেই ব্যবস্থাও করেছিলাম।

আজ বলছেন, আমাদের পাসের হার বাড়াতে এবং ফলাফল আরও ভালো করতে হবে। অতি সত্বর পাসের হার ৯০ অথবা ১০০ শতাংশ করতে হবে। আমাদের উত্তর হচ্ছে, কোনো সমস্যা নেই; এটিও পেয়ে যাবেন। তবে সার্টিফিকেটটি একটু দুর্বল হবে, কারণ ছাত্রছাত্রীরা যা লিখবে; তাতেই আমাদের খুশি মনে ভালো নম্বর দিতে হবে।

তার শেষ কথাগুলো ছিল এরকম- স্যার, আপনারা একের পর এক দাবি করছেন এবং আমরা তা পূরণ করছি। কিন্তু আপনারা কি একবারও ভেবে দেখেছেন, কীভাবে শিক্ষকরা এত সংক্ষিপ্ত সময়ে এটি করছে? আমরা সেই শিক্ষকই আছি। আমাদের সংখ্যা, শিক্ষা, গুণগতমান, সামাজিক মর্যাদা, সুযোগ-সুবিধা সবই কিছু প্রায় আগের মতোই আছে। কিন্তু আশ্চর্যজনকভাবে শুধু রাতারাতি ভালো হচ্ছে ছাত্রছাত্রীদের ফলাফল।

পাঠক, আপনারা হয়তো ভাবছেন, এটি একটি অবাস্তব কাহিনী। না, এটি কোনো কাল্পনিক কাহিনী নয়। প্রকৃতপক্ষে প্রাইমারি এক শিক্ষিকার গল্পের ছলে আমি শিক্ষার বর্তমান অবস্থার একটি প্রকৃত চিত্র তুলে ধরার চেষ্টা করেছি মাত্র। গল্পের এ অবস্থা শুধু প্রাইমারি শিক্ষার ক্ষেত্রেই বিদ্যমান নয়। কিছু ব্যতিক্রম ছাড়া মাধ্যমিক, উচ্চমাধ্যমিক, মাদ্রাসা, উচ্চশিক্ষা (জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় এবং বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়) সহ প্রায় সব স্তরেই কমবেশি এরকম একটি চিত্র বিরাজমান।

আমরা শিক্ষার কাঙ্ক্ষিত এবং দ্রুত উন্নয়নের জন্য বারবার কারিকুলাম ঢেলে সাজাচ্ছি। কিন্তু যারা এ কারিকুলাম পড়াবেন, তাদের কথা এবং তাদের অবস্থা ইচ্ছাকৃত বা অনিচ্ছাকৃত যেভাবেই হোক না কেন, আমলে নিচ্ছি না।

কিছুদিন আগে এক পত্রিকায় দেখলাম, একজন লিখেছেন- ‘শিক্ষাই জাতির মেরুদণ্ড এবং শিক্ষক হচ্ছে শিক্ষার মেরুদণ্ড।’ কত সুন্দর কথা! কিন্তু আমরা জানি, অনেক আগেই অবহেলায় এবং উপেক্ষায় ভেঙে গেছে আমাদের প্রাইমারি, মাধ্যমিক এবং উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষকদের মেরুদণ্ড। তারপর শুরু হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের পালা।

শিক্ষার সর্বস্তরে এখন মেরুদণ্ড ভাঙা, মেরুদণ্ডহীন শিক্ষকের ছড়াছড়ি। কী অদ্ভুত জাতি আমরা! শিক্ষকদের মেরুদণ্ড ভেঙে দিয়েছি, আবার তাদেরই বলছি- আমাদের সন্তান এবং জাতির জন্য শক্তিশালী মেরুদণ্ড তৈরি করে দাও।

আশার কথা হচ্ছে, দেরিতে হলেও প্রধানমন্ত্রী বুঝতে পেরেছেন দেশে ভালো শিক্ষকের অভাব। তিনি দ্রুত বিদেশি শিক্ষক নিয়োগ দিয়ে আমাদের দক্ষ শিক্ষকের অভাব পূরণের প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন। শুনলাম, সম্ভবত এ লক্ষ্যে বাজেটে শিক্ষা খাতে ভালো বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।

তবে পত্রিকায় একজন লিখেছেন, শিক্ষা খাতে ৮৭ হাজার কোটি (প্রায়) টাকার বরাদ্দের প্রস্তাবে শুভঙ্করের ফাঁকি আছে। আসলে শিক্ষা খাতে বরাদ্দের প্রস্তাব হয়েছে ৬১ হাজার কোটি (প্রায়) টাকা। এ বরাদ্দ গত অর্থবছরের তুলনায় বেড়েছে মাত্র ৮ হাজার কোটি (প্রায়) টাকা।

যা হোক, আশা করছি- এ বিদেশি শিক্ষক নিয়োগের মাধ্যমে আমাদের মেরুদণ্ড ভাঙা-মেরুদণ্ডহীন শিক্ষকদের সুচিকিৎসা অথবা আমাদের সন্তানদের সুশিক্ষার মাধ্যমে জাতির মেরুদণ্ড শক্তিশালী হবে। তবে অনেকেই তার এ মহতী প্রস্তাবের বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া ও ফলাফল নিয়ে চিন্তিত।

তাদের ভাষ্য হচ্ছে, বিগত দুই দশক ধরে শিক্ষা নিয়ে দেশে ব্যাপক তেলেসমাতি কারবার হচ্ছে। নতুন পদ্ধতি, নতুন পরীক্ষা, নতুন পাঠ্যসূচিসহ হেন কিছু নেই, যা আমরা করিনি বা করছি না। কিন্তু ফলাফল মোটামুটি শূন্য। তবে প্রধানমন্ত্রীর এবারের উপলব্ধিটির (ভালো শিক্ষকের অভাব) ভিন্নতা রয়েছে এবং এটি অবশ্যই প্রশংসনীয়। এতদসত্ত্বেও ভালো শিক্ষকের অভাব পূরণার্থে বিদেশি শিক্ষক নিয়োগ সম্পর্কে মানুষের মনে উদ্ভব হয়েছে অনেক প্রশ্ন, যা পরবর্তী পর্বে আলোচ্য।

ড. এম এল আর সরকার : প্রফেসর, ভূগোল ও পরিবেশবিদ্যা বিভাগ, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়

lrsarker@yahoo.com


Discover more from শিক্ষাবার্তা ডট কম

Subscribe to get the latest posts sent to your email.