এইমাত্র পাওয়া

শেকৃবিতে ফাইনাল পরীক্ষা না দিয়েও পাস, প্রশাসন বলছে ‘অনিচ্ছাকৃত ভুল’

ঢাকাঃ শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শেকৃবি) কৃষি অনুষদের ফাইনাল পরীক্ষায় অনিন্দ্য বিশ্বাস অর্ঘ্য নামের এক শিক্ষার্থীকে পাস করানোর অভিযোগ উঠেছে। পরে সাংবাদিকদের অনসুন্ধানে বিষয়টি জানাজানি হলে ফল সংশোধন করে তাকে অকৃতকার্য দেখানো হয়।

অভিযোগ রয়েছে, ওই শিক্ষার্থী প্যাথলজি বিভাগের ফাইনাল পরীক্ষায় অংশগ্রহণ না করলেও তাকে পাস করানো হয়। তবে বিষয়টি গণমাধ্যমের নজরে আসে। এ নিয়ে বিস্তারিত জানতে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক কার্যালয়ে যোগাযোগ করলে উপ-উপাচার্য অধ্যাপক বেলাল হোসেনের সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলেন। সাংবাদিক পরিচয় দেওয়ার পরও উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. বেলাল হোসাইন রেজিস্ট্রার বরাবর আবেদন করতে বলেন।

পরে সাংবাদিকদের আবেদনের প্রেক্ষিতে নড়েচড়ে বসে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আব্দুল লতিফ দ্রুত সংশ্লিষ্ট বিভাগের শিক্ষকদের সঙ্গে জরুরি মিটিং আহ্বান করেন। পরে খাতা পুনরায় মূল্যায়নের সিদ্ধান্ত হয়। যাচাইয়ের পর দেখা যায়, ওই শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশগ্রহণই করেননি। এরপর সংশোধিত ফলাফল প্রকাশ করা হয় গত মাসের ২৫ তারিখ, যেখানে তাকে অকৃতকার্য দেখানো হয়েছে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, প্যাথলজি বিভাগ ছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগে এমন ঘটনা অহরহ ঘটেছে। লেভেল-২, সেমিস্টার-১ এর শিক্ষার্থী গোলাম সরোয়ার কায়নাত টাইফয়েডে আক্রান্ত থাকার কারণে বায়োকেমিস্ট্রি বিভাগের ফাইনাল পরীক্ষায় অংশগ্রহণ না করলেও তাকে কৃতকার্য দেখানো হয়। তবে ফলাফল প্রকাশিত হলে তিনি প্রশাসন বরাবর যোগাযোগ করে ভুল ধরিয়ে দেন এবং পরে ফলাফল পরিবর্তন করা হয়।

শিক্ষার্থী অনিন্দ্য বিশ্বাস অর্ঘ্যের ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক কার্যালয়ের প্রধান চৌধুরী মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, ফলাফলে ডিপার্টমেন্টের একটা ভুল ছিল। বিষয়টি দৃষ্টিগোচর হলে উপাচার্য এবং বিভাগের জরুরি মিটিংয়ের সিদ্ধান্তের আলোকে আমাদের নিকট সংশোধনীর মূল্যায়নের কাগজ পাঠানো হয়। তার প্রেক্ষিতে ফলাফল সংশোধন করে উপাচার্যের অনুমোদন নিয়ে এটি পুনরায় সংশোধিত রেজাল্ট আকারে প্রকাশ করা হয়।

প্যাথলজি বিভাগের ওই কোর্সের শিক্ষক এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. বেলাল হোসেন বলেন, এটা একটা অনিচ্ছাকৃত ভুল ছিল। দুজনের রেজিস্ট্রেশন নাম্বারের শেষের পাঁচ ডিজিট একই হওয়ায় ভুলটি হয়।

একটি কোর্সের দুটি পার্ট একই সঙ্গে ভুল হতে পারে কি না এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, এই কোর্সের ছয়জন শিক্ষক। আমি আমার পার্ট দেখে পরবর্তী শিক্ষকের কাছে পাঠিয়েছি। খাতা দেখা নিয়ে কোনো গরমিল হয়নি। শুধু দুজনের রেজিস্ট্রেশন নাম্বারে মিল রয়েছে বিধায় আমাদের অনিচ্ছাকৃত ভুলটি হয়েছে। পরীক্ষার ঝামেলা এড়াতে পাস করিয়ে দেওয়া হয়েছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিষয়টি আসলে এমন না।

কৃষি অনুষদের লেভেল-২ এর শিক্ষার্থী অনিন্দ্য বিশ্বাস অর্ঘ্য বলেন, আমাদের ব্যাচে রিএড এক বড় ভাইয়ের সঙ্গে আমার রেজিস্ট্রেশন নাম্বারের প্রথম দুই ডিজিট বাদে বাকিটা একই হওয়ায় এ ধরনের সমস্যা হয়েছে। অনুপস্থিত থাকার পরও তিনি আপত্তি জানাননি কেন প্রশ্নে তিনি বলেন, আমি সিনিয়রদের সঙ্গে কথা বলেছি, তখন তারা বলেছেস হয়তো পাস মার্কের কাছাকাছি ছিল, তাই পাস করিয়ে দিয়েছে, এজন্য আপত্তি জানাইনি।

শিক্ষাবার্তা ডটকম/এএইচএম/০৩/০৭/২০২৫


Discover more from শিক্ষাবার্তা ডট কম

Subscribe to get the latest posts sent to your email.

Discover more from শিক্ষাবার্তা ডট কম

Subscribe now to keep reading and get access to the full archive.

Continue reading