গাজীপুরঃ গাজীপুর সদর উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তার বিদায়ী সংবর্ধনার নামে শিক্ষকদের কাছ থেকে বাধ্যতামূলকভাবে চাঁদা আদায়ের অভিযোগ উঠেছে অপর এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে। শুক্রবার (১০ জানুয়ারি) সকালে উপজেলার বিলাশবহুল সাহেব বাড়ি রিসোর্টে ওই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে।
দাওয়াত কার্ডে সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা উপস্থিত থাকবেন উল্লেখ করা হয়েছে। তবে তিনি বিষয়টি অস্বীকার করেছেন। এ নিয়ে শিক্ষকদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
কয়েকজন শিক্ষক অভিযোগ করে বলেন, গাজীপুর সদর উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মো. শরিফ উদ্দিনকে সম্প্রতি বদলি করা হয়। তার বিদায় উপলক্ষে ওই অনুষ্ঠানের মূল আয়োজক মহানগরীর লাগালিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. জাহাঙ্গীর আলম। তিনি উপজেলা শিক্ষক সমিতির স্বঘোষিত আহবায়ক।
অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ার জন্য সাতটি ক্লাস্টারের সব সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষককে বলা হয়। এজন্য প্রধান শিক্ষকদের এক হাজার এবং সহকারী শিক্ষকদেরকে ৭০০ টাকা করে চাঁদা বাধ্যতামূলক দিতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নোটিশ দেন তিনি। এ নিয়ে শিক্ষকদের মধ্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়ার দেখা দেয়। তারা বলেন, শিক্ষা কর্মকর্তাকে বিদায় সংবর্ধনা অতীতে উপজেলা পরিষদে অথবা সরকারি কোনো হল রুমে হয়েছে।
এবার উপজেলা সদর থেকে ১০-১২ কিলোমিটার দূরে রিসোর্টে অনুষ্ঠান আয়োজনের নামে শিক্ষকদের কাছ থেকে চাঁদা উঠানো হচ্ছে। জাহাঙ্গীর আলম ৫ আগস্টের আগ পর্যন্ত আওয়ামী লীগ নেতা, এমপি-প্রতিমন্ত্রীর দোসর ছিলেন। এখন রাতারাতি বিএনপি নেতা সেজেছেন। মহানগর বিএনপি নেতাদের অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি করতে চেয়ে ছিলেন তিনি। ব্যর্থ হয়ে জেলা শিক্ষা কর্মকর্তাকে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি করেছেন।
এ বিষয়ে অনুষ্ঠানের আয়োজক ও উপজেলা শিক্ষক সমিতির আহ্বায়ক জাহাঙ্গীর আলম বলেন, শিক্ষা কর্মকর্তার বিদায় সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা উপস্থিত থাকবেন বলে নিশ্চিত হয়েছেন।
বিদায়ী উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা শরীফ উদ্দীন সাংবাদিকদের বলেন, শিক্ষকের কাছ থেকে বাধ্যতামূলক টাকা আদায় করা হচ্ছে এমনটি জানা নেই। তাকে শুধু অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মাসুদ আলম ভুঁইয়া বলেন, অনুষ্ঠানের নামে চাঁদাবাজি করার বিষয়টি তার জানা নেই। বিষয়টি খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবেন।
জানতে চাইলে এ ব্যাপারে গাজীপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মামুন উর রশিদ সাংবাদিকদের বলেন, সরকারি কর্মকর্তার বিদায় অনুষ্ঠানের জন্য টাকা নেওয়ার সুযোগ নেই। এমন হয়ে থাকলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
শিক্ষাবার্তা ডটকম/এএইচএম/১১/০১/২০২৫
Discover more from শিক্ষাবার্তা ডট কম
Subscribe to get the latest posts sent to your email.