রাবি: চলমান কোটা সংস্কার আন্দোলনে সারা দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষার্থীদের ওপর ছাত্রলীগ ও পুলিশের হামলার প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল শুরু করেছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) শিক্ষার্থীরা। এসময় তারা লাঠি নিয়ে ক্যাম্পাসে প্রবেশ করে। আন্দোলোনকারীদের লাঠি নিয়ে প্রবশ করতে দেখে মাঠ ছেড়েছে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা। এমনকি পুলিশের পাহারা ও গাড়িতেও রাবি ক্যাম্পাস ছাড়তে দেখা গেছে ছাত্রলীগ নেতা–কর্মীদের।
সরেজমিনে দেখা যায়, বেলা আড়াইটা বাজতেই বিভিন্ন হলে থাকা শিক্ষার্থীরা লাঠিসোঁটা নিয়ে সমবেত হতে থাকে। পরে বেলা পৌনে ৩টায় হলে থাকা শিক্ষার্থীরা মিছিল বের করে। বিভিন্ন হল থেকে দলবেঁধে মিছিলে যোগ দেয় শিক্ষার্থীরা।
এদিকে, রাবি শাখা ছাত্রলীগ অবস্থান নিয়েছিল বিশ্ববিদ্যালয়ের মাদার বখস হলের সামনে। পরে কোটা আন্দোলনকারীদের ব্যাপক উপস্থিতিতে পালিয়ে যায় ছাত্রলীগ নেতা–কর্মীরা। এমনকি তারা মোটরসাইকেল ব্যবহার করেও দ্রুত ক্যাম্পাস ত্যাগ করে। কোনো কোনো এলাকায় পুলিশের গাড়িতে করে ও পুলিশের পাহারা তাদের ক্যাম্পাস ছাড়তে দেখা গেছে।
এ বিষয়ে রাবি ছাত্রলীগের সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান বাবু ও সাধারণ সম্পাদক আসাদুল্লা-হিল-গালিবকে একাধিকবার মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলেও তাদের পাওয়া যায়নি।
এদিকে, সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবি ও এ নিয়ে আন্দোলনরতদের ওপর হামলার প্রতিবাদে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন সড়কেও আন্দোলন করছে শিক্ষার্থীরা। এর আগে, গতকাল সোমবার দিনভর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে কোটা সংস্কার আন্দোলনকারী ও ছাত্রলীগের দফায় দফায় সংঘর্ষ আর পাল্টাপাল্টি ধাওয়া চলে। এতে আহত হয়ে ঢাকা মেডিকেলে চিকিৎসা নেন প্রায় ৩০০ জন।
২০১৮ সালের ৪ অক্টোবর শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের বিধি-১ শাখা নবম গ্রেড এবং ১০ম থেকে ১৩তম গ্রেড পর্যন্ত সরাসরি নিয়োগে মুক্তিযোদ্ধা কোটা বাতিল করে একটি পরিপত্র জারি করা করে। ফলে সরকারি চাকরিতে ১০ শতাংশ নারী কোটা, ৩০ শতাংশ মুক্তিযোদ্ধা কোটা এবং ১০ শতাংশ জেলা কোটা বাতিল হয়ে যায়।
পরে ওই পরিপত্র চ্যালেঞ্জ করে মুক্তিযোদ্ধার সন্তান ও প্রজন্ম কেন্দ্রীয় কমান্ড কাউন্সিলের সভাপতি অহিদুল ইসলাম তুষারসহ সাত জন হাইকোর্টে একটি রিট দায়ের করে। ওই রিটের শুনানি শেষে গত ৫ জুন সরকারের জারি করা পরিপত্র অবৈধ ঘোষণা করে রায় দেন হাইকোর্ট। এতে সরকারি চাকরিতে আবারও কোটা ফিরে আসে।
আপিলে গেলে গত ৯ জুন হাইকোর্টের রায় বহাল রেখে বিষয়টি আপিল বিভাগের বেঞ্চে শুনানির জন্য পাঠান চেম্বার বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম। ৪ জুলাই আপিল বেঞ্চ জানায়, হাইকোর্টের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশের পর মামলাটির শুনানি শুরু হবে। গত ১১ জুলাই আপিল বিভাগ হাইকোর্টের রায়ের ওপর এক মাসের স্থগিতাদেশ দেন। তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা জানায়, ঝুলন্ত কোনো সিদ্ধান্ত তারা মানবেন না। এরপর থেকেই এই আন্দোলন নিয়ে উত্তেজনা বাড়তে থাকে।
শিক্ষাবার্তা ডটকম/এএইচএম/১৬/০৭/২০২৪
Discover more from শিক্ষাবার্তা ডট কম
Subscribe to get the latest posts sent to your email.