এইমাত্র পাওয়া

নিজ দপ্তরকে ‘অনিয়মের আখড়া’ বানিয়েছেন মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা

সিলেট: জেলার বিয়ানীবাজার উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মৌলুদুর রহমান ক্ষমতার অপব্যবহার করে কয়েক বছর থেকে নিজ দপ্তরকে তিনি দুর্নীতির আখড়া বানিয়েছেন। দাপ্তরিক কার্যক্রম পরিচালনায় তার বহুমুখী চরিত্র নিয়ে আলোচনা চলছে খোদ মাধ্যমিক শিক্ষকদের মধ্যে।

মৌলুদুর রহমান বিয়ানীবাজার উপজেলায় যোগদান করেন ২০১৯ সালের ১৩ই ফেব্রুয়ারি। সূত্র জানায়, যোগদানের পর থেকে অদ্যাবধি স্থানীয় বিভিন্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে তার মাধ্যমে ২ শতাধিক শিক্ষক যোগদান করেন। আরও প্রায় ২শ’ কর্মচারী নিয়োগ দিতেও তার প্রভাব ছিল।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক মাধ্যমিক শিক্ষক জানান, সহকারী শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে ৫০ হাজার, কর্মচারী নিয়োগের ক্ষেত্রেও ৫০ হাজার এবং প্রধান শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে ৭০-৮০ হাজার টাকা করে তাকে পূর্ব-নির্ধারিত ঘুষ দিতে হয়। বিশেষ ক্ষেত্রে ঘুষের পরিমাণ কম- বেশি হতে পারে। তার মেয়াদে নিয়োগ পাওয়া শিক্ষক-কর্মচারীদের অভিযোগ অনুযায়ী, ৪শ’ শিক্ষক-কর্মচারীর কাছ থেকে মৌলুদুর রহমান শুধু নিয়োগ বাবদ ঘুষ নিয়েছেন প্রায় ২ কোটি টাকা। জানা যায়, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের বাজেট শাখার ২০২৩ সালের ২রা মে তারিখের স্মারক অনুযায়ী জাতীয় শিক্ষা সপ্তাহ সুষ্ঠুভাবে সম্পন্নের লক্ষ্যে পুরস্কার খাতে ৮৬ হাজার ১শ’ টাকা এবং অনুষ্ঠান বাবদ আরও ২২ হাজার টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়। কিন্তু ২০২৩ সালে জাতীয় শিক্ষা সপ্তাহের পুরস্কার বিতরণী কোনো অনুষ্ঠান হয়নি।

এছাড়া বিজয়ীদের কাছে যেসব পুরস্কার প্রদান করা হয়েছে তার গড়মূল্য হবে ৩শ’ টাকা। গত বছরে পুরস্কার এবং অনুষ্ঠান সংক্রান্ত মোটা অংকের টাকা আত্মসাৎ করেন উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মৌলুদুর রহমান। নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক শিক্ষক জানান, সরকারি পরিষেবা পেতে মৌলুদুর রহমানকে প্রত্যেক খাতে ঘুষ দিতে হয়। সরকারের দেয়া বিনামূল্যে বই পেতে তাকে দিতে হয় স্কুল প্রতি চার থেকে পাঁচশ’ টাকা। মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে পাঠানো পাঠ্যপুস্তকের পরিবহন ব্যয় বাবদ সরকারি টাকা পকেটস্থ করার অভিযোগও রয়েছে তার বিরুদ্ধে। এছাড়া নতুন এমপিও-করণের জন্য তাকে শিক্ষকপিছু ৫ হাজার টাকা ঘুষ দিতে হয়।

বিয়ানীবাজার উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মৌলুদুর রহমান গণমাধ্যমকে বলেন, ঘুষ নেয়ার অভিযোগ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। আমি এসবের সঙ্গে জড়িত নই। তবে আমি যোগদানের পর ২শ’ শিক্ষককে নিয়োগ দেয়া হয়েছে।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার কাজী শামীম জানান, মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসের দুর্নীতির খবর পেয়েছি। আমি শিক্ষা অফিসারকে তলব করে পুরো বিষয় জানতে চাইবো।

এ বিষয়ে সিলেট জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা আবু সাঈদ মো. আব্দুল ওয়াদুদ জানান, মৌলুদুর রহমানের বিরুদ্ধে কোনো ধরনের অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ পেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে। গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদের তথ্য যাচাই-বাছাই করে দেখা হবে বলেও জানান।

শিক্ষাবার্তা ডটকম/এএইচএম/৩০/০৬/২০২৪


Discover more from শিক্ষাবার্তা ডট কম

Subscribe to get the latest posts sent to your email.