নিজস্ব প্রতিবেদক।।
প্রধান পরীক্ষক হওয়ার জন্য শিক্ষকের মাস্টার ট্রেইনার হওয়া আবশ্যক। কিন্তু মাস্টার ট্রেইনার হিসেবে প্রশিক্ষণ না থাকলেও কিছু শিক্ষক জালিয়াতির আশ্রয় নিয়ে মাস্টার ট্রেইনার হিসেবে ইলেক্ট্রনিক টিচার ইনফরমেশন (ইটিআইএফ) ফোরাম নামে সফটওয়ারে তথ্য সন্নিবেশন করেছেন। শিক্ষকরা বলছেন, শিক্ষক হিসেবে এমন অনৈতিক কাজ করার কোনও সুযোগ নেই। এটি করার অর্থ দুর্নীতিতে জড়িয়ে যাওয়া। আর ঢাকা শিক্ষা বোর্ড বলছে, এটি প্রতারণা, গর্হিত অপরাধ। দ্রুত তথ্য সংশোধন না করলে সংশ্লিষ্ট শিক্ষকসহ প্রতিষ্ঠান প্রধানদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, প্রধান পরীক্ষক হওয়ার জন্য অনেক শিক্ষক মাস্টার ট্রেইনার না হওয়া সত্ত্বেও ইলেক্ট্রনিক টিচার ইনফরমেশন ফোরামের (ইটিআইএফ) ডাটায় মাস্টার ট্রেইনার কলামে এন্ট্রি দিয়েছেন।
শুধু তাই নয়, অনেক শিক্ষক এসএসসি, এইচএসসি, স্নাতক (পাস), স্নাতক (সম্মান), মাস্টার্স, বিএড, এমএড, পিএইচডি ইত্যাদি পরীক্ষায় পাওয়া ফলাফলের কলাম ফাঁকা রেখেছেন। অথচ প্রধান পরীক্ষক, পরীক্ষক হওয়ার ক্ষেত্রে ফলাফলে সুনির্দিষ্ট পয়েন্ট রয়েছে। তা গোপন করে প্রধান পরীক্ষক ও পরীক্ষক হওয়ার জন্য এই অনৈতিক কাজ করেছেন।
ঢাকা শিক্ষা বোর্ডর তথ্যানুযায়ী, কর্মক্ষেত্রে প্রথম যোগদানের ক্ষেত্রে অনেক শিক্ষক বর্তমান স্কুল বা কলেজে যোগদানের তারিখ দিয়েছেন। এ কারণে তার শিক্ষকতার প্রকৃত অভিজ্ঞতার চিত্র পাচ্ছে না শিক্ষা বোর্ড।
ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের এক কর্মকর্তা জানান, ধরা যাক একজন শিক্ষক একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ১০ বছর কর্মরত ছিলেন, পরবর্তী সময়ে বর্তমান প্রতিষ্ঠানে ৫ বছর কর্মরত আছেন, তাহলে তার অভিজ্ঞতা হবে ১৫ বছর। এ ক্ষেত্রে বর্তমান প্রতিষ্ঠানে যোগদানের তারিখ দিয়ে ডাটা এন্ট্রি করলে অভিজ্ঞতা ৫ বছর বিবেচনায় আসবে। অথচ সংশ্লিষ্ট শিক্ষকের প্রথম যোগদান হবে প্রথম শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যোগদানের তারিখ। আর প্রতি বছর সার্ভিসের জন্য আলাদা পয়েন্ট রয়েছে। সেসব বিবেচনা না করে কিছু অর্থের লোভে শিক্ষকরা অনৈতিক কাজ করেছেন।
এ বিষয়টি অপরাধ হিসেবে বিবেচনা করে ঢাকা শিক্ষা বোর্ড প্রতিষ্ঠান প্রধানসহ কর্মরত সকল শিক্ষকের পরীক্ষা সংক্রান্ত গোপনীয় কাজ সম্পাদন করার জন্য ইটিআইএফ পূরণ নিশ্চিত করতে প্রতিষ্ঠান প্রধানকে অনুরোধ করা হলো।
ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের গত ১৬ এপ্রিলের নির্দেশনা মোতাবেক এসব তথ্য আগামী ১৩ জুনের মধ্যে অবশ্যই পাঠাতে হবে।এর পরে পাঠানো কোনও তথ্য ২০২৪ সালে এইচএসসি পরীক্ষার জন্য প্রযোজ্য হবে না।
ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক তপন কুমার সরকার বলেন, মাস্টার ট্রেইনার না হওয়া সত্ত্বেও ইটিআইএফ ডাটায় মাস্টার ট্রেইনার কলামে এন্ট্রি করা গর্হিত অপরাধ। যারা প্রকৃত পক্ষে মাস্টার ট্রেইনার নন তারা অনতিবিলম্বে মাস্টার ট্রেইনার কলাম সংশোধন করবেন। অন্যথায় এমন প্রতারণামূলক তথ্য দেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট শিক্ষকদের বিরুদ্ধে বিধিমোতাবেক শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আর প্রতিষ্ঠান প্রধান সত্যায়নকারী হিসেবে দায় এড়াতে পারেন না। তাই প্রতিষ্ঠান প্রধানদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
Discover more from শিক্ষাবার্তা ডট কম
Subscribe to get the latest posts sent to your email.