ঢাকাঃ নতুন শিক্ষাক্রমে উপজেলা পর্যায়ে অষ্টম ও নবম শ্রেণির বিষয়ভিত্তিক শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ শুরুর কথা ছিল ৯ ডিসেম্বর। প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণকারী শিক্ষকদের তালিকায় বাইরের লোকজনের নাম ঢুকিয়ে দেওয়ায় জটিলতার সৃষ্টি হয়েছে। এ কারণে সারাদেশে উপজেলা পর্যায়ে একযোগে প্রশিক্ষণ শুরুর তারিখ কয়েকদিন পিছিয়ে যেতে পারে। তবে প্রশিক্ষণ স্থগিতের আনুষ্ঠানিক কোনো সিদ্ধান্ত এখনো নেওয়া হয়নি। কোনো আদেশের চিঠিও ইস্যু করেনি মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি)।
মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) ডিসেমিনেশন অব নিউ কারিকুলাম স্কিমের পরিচালক অধ্যাপক সৈয়দ মাহফুজ আলী এ তথ্য জানান।
অধ্যাপক মাহফুজ আলী বলেন, প্রশিক্ষণের জন্য আমরা শিক্ষকদের তালিকা চেয়েছিলাম। যে তালিকা আমরা হাতে পেয়েছি, তাতে যাদের নাম আছে, সেখানে প্রশিক্ষণ নিতে আগ্রহী শিক্ষকের সংখ্যাটা অতিরিক্ত মনে হচ্ছে। শিক্ষকদের বাইরেও কিছু লোক তালিকায় ঢুকে পড়েছে। সেগুলো আমাদের যে হিসাব, তার বাইরের। এটা নিয়েই মূলত জটিলতা। তালিকাটা এখন আমরা যাচাই-বাছাই করছি।
তালিকা কাটছাট করে প্রস্তুত করার জন্য প্রশিক্ষণ পেছাতে পারে জানিয়ে তিনি বলেন, তালিকাটা আমরা কাটছাটের কাজ করছি। এটা এখনো সম্পন্ন করা যায়নি। সম্পন্ন হলে তারপর প্রশিক্ষণ শুরু হবে। এমন পরিস্থিতিতে আমি বলতে পারছি না যে ৯ ডিসেম্বরই প্রশিক্ষণটা শুরু করতে পারবো। সেক্ষেত্রে প্রশিক্ষণটা দুইটা দিন হয়তো পিছিয়ে যেতে পারে।
এদিকে মানিকগঞ্জের সাটুরিয়া উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস থেকে ইস্যু করা একটি চিঠি উপজেলার স্কুল-মাদরাসার প্রধান শিক্ষক ও সুপারদের কাছে পাঠানো হয়েছে। এতে উল্লেখ করা হয়, উপজেলা পর্যায়ে অষ্টম ও নবম শ্রেণির বিষয়ভিত্তিক শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ অনিবার্য কারণে স্থগিত করা হয়েছে। মাউশির নির্দেশনায় এ চিঠি ইস্যু করা হয়েছে বলেও তাতে উল্লেখ করা হয়।
‘ভুলক্রমে’ জারি করা চিঠি
বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে সাটুরিয়া উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার ফকির জাকির হোসেন বলেন, ওটা (চিঠি) আসলে ভুলক্রমে দেওয়া হয়েছে। অফিসের কর্মকর্তা ভুলে চিঠিটা দিয়ে ফেলেছেন। আমরা এখানো আনুষ্ঠানিক কোনো নির্দেশনা পাইনি। এটা একটু ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন।
‘ভুলক্রমে লেখা’ চিঠিটি প্রস্তুত করেছেন সাটুরিয়া উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসের একাডেমিক সুপারভাইজার মো. আসাউদ জামান। তিনি বলেন, চিঠিটা আমরা দিয়েছি এটা সত্য। জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস থেকে আমাদের মৌখিক জানানো হয়েছিল, প্রশিক্ষণটা পেছাতে পারে। আমরা যেহেতু আগেই ৯ ডিসেম্বর প্রশিক্ষণ হবে উল্লেখ করে চিঠি দিয়েছিলাম, সেজন্য মৌখিকভাবে জেনে আগেই চিঠিটা দিয়ে ফেলেছি। আসলে এটা নিয়ে আনুষ্ঠানিক কোনো নির্দেশনা আসেনি। এটার জন্য আমরা দুঃখিত।
সাটুরিয়াসহ বেশ কয়েকটি উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসই এমন চিঠি ইস্যু করে স্কুল ও মাদরাসার প্রধানদের কাছে পাঠিয়েছে বলে জানা গেছে।
এ প্রসঙ্গে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে নতুন শিক্ষাক্রমে বিষয়ভিত্তিক প্রশিক্ষণ স্কিমের পরিচালক অধ্যাপক সৈয়দ মাহফুজ আলী বলেন, উনারা (সাটুরিয়া উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস) যদি কেউ নির্দেশনা দেন, সেটা নিজেরা দিয়েছেন। সাটুরিয়া উপজেলা অফিস-তো সারাদেশকে প্রতিনিধিত্ব করে না। প্রশিক্ষণটা সারাদেশে একযোগে হবে। স্থগিত হলেও সারাদেশে একযোগে স্থগিত হবে। আমি স্পষ্ট করে বলছি, এমন কোনো লিখিত নির্দেশনা আমরা দেইনি যে প্রশিক্ষণ স্থগিত করেছি। আগামীকাল (বৃহস্পতিবার, ৭ ডিসেম্বর) পর্যন্ত এটা দেখে হয়তো একটা নির্দেশনা আমরা দেবো।
জানা গেছে, অষ্টম ও নবম শ্রেণিতে নতুন শিক্ষাক্রম বাস্তবায়নে উপজেলা পর্যায়ে শ্রেণি শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ কার্যক্রম ৯-১৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত চলার কথা ছিল। প্রথম পর্যায়ে ইআইআইএনধারী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক প্রশিক্ষণের কথা রয়েছে। জানুয়ারি মাসে সুবিধাজনক সময়ে দ্বিতীয় পর্যায়ে ইআইআইএনবিহীন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে।
এরও আগে ১ ডিসেম্বর থেকে উপজেলা পর্যায়ে শ্রেণি শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ কার্যক্রম শুরু হওয়ার কথা থাকলেও তা পেছানো হয়।
শিক্ষাবার্তা ডট কম/এএইচএম/০৭/১২/২০২৩
দেশ বিদেশের শিক্ষা, পড়ালেখা, ক্যারিয়ার সম্পর্কিত সর্বশেষ সংবাদ শিরোনাম, ছবি, ভিডিও প্রতিবেদন সবার আগে দেখতে চোখ রাখুন শিক্ষাবার্তায়
Discover more from শিক্ষাবার্তা ডট কম
Subscribe to get the latest posts sent to your email.