এইমাত্র পাওয়া

স্বগৌরবে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়েছে খোকসার রমানাথপুর স্কুল অ্যান্ড কলেজ

নিজস্ব প্রতিবেদক, কুষ্টিয়াঃ শিক্ষা-দীক্ষায় দ্রুত এগিয়ে যাওয়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মধ্যে অন্যতম প্রধান বিদ্যাপীঠে পরিণত হয়েছে জেলার খোকসা উপজেলার রমানাথপুর স্কুল অ্যান্ড কলেজ। অবহেলিত, বঞ্চিত গড়াই নদীর  বিছিন্ন জনপদের মানুষকে দুঃখ, দুর্দশা লাঘব করে সচেতন ও নিরক্ষরমুক্ত করতে ১৯৮৬ প্রতিষ্ঠা লাভ করে প্রতিষ্ঠানটি। গড়াই নদী অধ্যুষিত কয়েকটি গ্রামের কয়েক হাজার মানুষের গর্বের অহংকার ও অবিচ্ছেদ্য অংশে পরিণত হয়েছে বর্তমানে বিদ্যাপীঠটি। 

বর্তমানে ৬ষ্ঠ থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত প্রায় ৬০০ জন শিক্ষার্থী অধ্যয়নরত থাকা বিদ্যাপীঠটিতে ৯ জন প্রভাষক ১৫ জন সহকারি শিক্ষক এবং ৩য় ও ৪র্থ শ্রেণির কর্মচারী মিলে জনবল রয়েছে ৩৪ জন। এসএসসি-এইচএসসি তে প্রতিবছরই কৃতিত্ব দেখিয়ে যাচ্ছে প্রতিষ্ঠানটি। এক সময়ে শিক্ষা থেকে বঞ্চিত নদী পাড়ের এই জনগোষ্ঠী এখন সাফল্য রাখছে জাতীয় আন্তর্জতাতিক পরিমণ্ডলে।

শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটির ইতিহাস ঘেটে জানা যায়, রমানাথপুর, গনেশপুর, আজইল, কোমরভোগ গ্রামের তৎকালীন কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া যুবসমাজ ও এলাকার ব্যক্তিবর্গ দরীদ্র, শিক্ষার আলো থেকে বঞ্চিত সাধারণ মানুষের সন্তানদের শিক্ষা প্রদানের লক্ষ্যে প্রতিষ্ঠাতা প্রধান শিক্ষক আব্দুল মমিন বিশ্বাস এর নেতৃত্বে ১৯৮৬ সালের ২৪ অক্টোবর গনেশপুর মারোয়ারীদের পরিত্যক্ত গোলাবাড়ীতে অস্থায়ীভাবে রমানাথপুর নিন্ম মাধ্যমিক বিদ্যালয় নামে আজকের রমানাথপুর স্কুল এন্ড কলেজের যাত্রা শুরু হয়। পরবর্তীতে রমানাথপুর গ্রামে জিকে খাল সংলগ্ন নিজস্ব জমিতে প্রতিষ্ঠানটি গড়ে ওঠে।

রমানাথপুর স্কুল এন্ড কলেজ ১৯৯১ ইং সালে নিম্ন মাধ্যমিক, ২০০২ সালে মাধ্যমিক ও ২০০৬ সালে উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয় হিসাবে যশোর শিক্ষা বোর্ড কর্তৃক স্বীকৃতি লাভ করে। 

২০১৬ সালে তৎকালীন সংসদ সদস্য বীরমুক্তিযোদ্ধা মো: আব্দুর রউফ এর উদ্যোগে প্রতিষ্ঠানটিতে শেখ রাসেল ডিজিটাল ল্যাব প্রতিষ্ঠিত হয়। ২০০৬ সারে কলেজ শাখাটি একাডেমিক স্বীকৃতি লাভ করলেও দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর ২০২২ সালে তৎকালীন প্রধান বিচারপতি মো: হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় কলেজ শাখাটি এমপিওভুক্ত হয় এবং তার সুপারিশে একটি বহুতল ভবন বরাদ্দ হয়েছে যার মাটি পরীক্ষা ইতিমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে খুব শীঘ্রই ভবনের মূল কাজ শুরু হবে বলে জানা গেছে।

বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়, মেডিকেলসহ দেশের বাইরে উচ্চ শিক্ষায় হাজারো শিক্ষার্থী প্রতিষ্ঠানটি থেকে কৃতিত্বের স্বাক্ষর রেখেছে।সাহিত্য সাংস্কৃতি চর্চায় বিদ্যালয়টি খোকসা উপজেলার মধ্যে অন্যতম। পড়ালেখার পাশাপাশি খেলাধুলায় রয়েছে কৃতিত্বের স্বাক্ষর। জেলা এবং বিভাগীয় পর্যায়ে বহুবার বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা লড়াই করেছে।

স্কুল এন্ড কলেজটির বর্তমান পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি বিশিষ্ট লেখক, গবেষক, সাংবাদিক ও ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় কুষ্টিয়ার পাবলিক রিলেশনস বিভাগের পরিচালক ড. আমানুর আমান। তাঁর নেতৃত্বে প্রতিষ্ঠানটি সুষ্ঠভাবে পরিচালিত হয়ে আসছে।

প্রতিষ্ঠানটির বর্তমান অধ্যক্ষ মোস্তফা কামাল শিক্ষাবার্তা’কে জানান, বর্তমানে পড়াশোনার পরিবেশ, শিক্ষার মান সব কিছুই ভালোভাবে চলছে। শুধুমাত্র অভাব একটি বহুতল ভবনের। ভবটি পেলে আমরা সব দিক দিয়ে স্বয়ং সম্পূর্ণ হবো। ক্লাস রুম সংকটে গাদাগাদি করে বসতে হয় শিক্ষার্থীদের। মাননীয় সদ্য সাবেক প্রধান বিচারপতির বদৌলতে ভবন বরাদ্দ হয়েছে। আশাকরি দ্রুতই ভবনের কাজ শুরু হবে।

গড়াই নদীর অববাহিকায় ৪৭ বছরের গৌরবে ভাস্বর হয়ে মাথা উঁচু করে দাঁড়ি থাকা স্কুল অ্যান্ড কলেজটি যে আজ কুষ্টিয়ার অবিচ্ছেদ্য ঐতিহ্যে পরিণত হয়েছে তা বলাই বাহুল্য। এ ঐতিহ্য যেন ম্লান না হয়, বজায় থাকে এবং দিনে দিনে তার মান আরো বৃদ্ধি পায়—এমন প্রত্যাশা এলাকাবাসীর।

শিক্ষাবার্তা ডট কম/এএইচএম/১৯/১১/২০২৩  

দেশ বিদেশের শিক্ষা, পড়ালেখা, ক্যারিয়ার সম্পর্কিত সর্বশেষ সংবাদ শিরোনাম, ছবি, ভিডিও প্রতিবেদন সবার আগে দেখতে চোখ রাখুন শিক্ষাবার্তায়


Discover more from শিক্ষাবার্তা ডট কম

Subscribe to get the latest posts sent to your email.