এইমাত্র পাওয়া

ইউএনও অফিসের আলমারীর বই পড়ছে শিক্ষার্থীরা

সরকার হায়দার।।

স্থানীয় একটি বালিকা বিদ্যালয়ের বেশ কিছু শিক্ষার্থী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে সাজানো   বইয়ের আলমারীতে বই খুঁজছে। কেউ কেউ পাতা উল্টে পাল্টে দেখছে। আর ইউএনও তখন আরেকজন শিক্ষার্থীর কাছ থেকে পাঠ মুল্যায়ন শুনছেন। তারপর পছন্দের বইটি  নিয়ে একটি খাতায় নাম ঠিকানা লিখে চলে যাচ্ছে শিক্ষার্থীরা। কেউ কেউ আগে নিয়ে যাওয়া বই পড়ে ফেরত দিয়ে আবার নতুন বই নিয়ে যাচ্ছে। এরই মধ্যে পড়াশোনা, ক্যারিয়ার নিয়ে টুকিটাকি কথাবার্তাও হচ্ছে ইউএনওর সঙ্গে।

ইউএনও তার নানা অভিজ্ঞতা আর পরামর্শ শেয়ার করছেন শিক্ষার্থীদের সঙ্গে। সোমবার এমন দৃশ্যই দেখা গেল পঞ্চগড়ের আটোয়ারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুশফিকুল আলিম হালিম জানান, আটোয়ারী উপজেলা একটি প্রত্যন্ত এলাকা।

এখানে একটি পুরোনো লাইব্রেরী থাকলেও তার অবস্থা জরাজির্ন। নতুন লাইব্রেরীর কাজ শুরু হয়েছে। আমি বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন করতে গেলে এই এলাকার শিক্ষার্থীদের মাঝে বই পড়ার আগ্রহটা বুঝতে পারি। পরে তাদেরকে বই পড়ার ব্যাপারে আরও উদ্বুদ্ধ করি। আমার অফিসেই অনেক বই আছে। এগুলো কেউ পড়েনা। শুধুমাত্র সাজানো গুছানো একটা বইয়ের তাক।

আমার কাছে মনে হয়েছে এই বইগুলো কারও না কারও পড়া উচিত। বই সাজিয়ে রেখে লাভ কি?  এই চিন্তা থেকে শিক্ষার্থীদেরকে আমার অফিসে এসে বই নিয়ে পড়ার আহ্বান জানাই। বর্তমানে সপ্তাহে দুদিন সোমবার আর বৃহস্পতিবার শিক্ষার্থীরা বই নিয়ে যায়। পড়া শেষ হলে ফেরত দিয়ে যায়। আমি মাঝে মাঝে তাদের কাছ থেকে পাঠ মুল্যায়ন শুনি। তাদের সাথে সময় কাটাই । কাজের ফাঁকে ব্যাপারটি বেশ উপভোগ্য। আটোয়ারী পাইলট সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ৭ম শ্রেণীর শিক্ষার্থী মাহজাবিন মোবাশ্বেরা মাম্পি জানায় অনেক ভালো ভালো বই আছে এখানে। আমাদের বাজারে এসব বই পাওয়া যায়না।

স্যারের এখানে এসে বই নিয়ে যাই। পড়ে আবার ফেরত দেই। ক্লাসের বই পড়ার ফাঁকে অন্যান্য বই পড়ে অনেক কিছু জানা যায়। আটোয়ারী উপজেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান জানান, আমরা যখন স্কুলে পড়তাম তখন একজন ইউএনওর সাথে কথা বলতে পারবো এটা চিন্তাতেই আসতোনা। এখনকার ছেলেমেয়েরা ইউএনও অফিসে নির্দ্বিধায় যাচ্ছে , তার সাথে কথা বলছে এটাও একটা পড়াশোনার অঙ্গ। তারা নানা কিছু শিখছে। ইউএনও অফিস থেকে বই নিয়ে তারা অনেক কিছু শিখতে জানতে পারছে। বিষয়টি অবশ্যই একটি মহৎ উদ্যোগ। জেলা প্রশাসক জহুরুল ইসলাম জানান, এই উদ্যোগ জ্ঞানকেন্দ্রীক প্রভাব ফেলবে ।

তেঁতুলিয়া উপজেলাতে পাঠ্যক্রম শিক্ষার পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের অন্যান্য বই পড়ার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। অন্যান্য উপজেলাতেও এই উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে। মুলত: জ্ঞান কেন্দ্রীর শিক্ষার প্রসার ঘটাতে আমরা এই জেলায় নানা ধরনের উদ্যোগ নিয়ে কাজ করছি।


Discover more from শিক্ষাবার্তা ডট কম

Subscribe to get the latest posts sent to your email.