এইমাত্র পাওয়া

রোস্তম আলী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সভাপতির বিরুদ্ধে অভিযোগের শেষ নেই!

ঝিনাইদহঃ কালীগঞ্জ রোস্তম আলী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি আমির হোসেনের বিরুদ্ধে শিক্ষক-কর্মচারী নিয়োগ, অর্থ আত্মসাৎ ও স্বেচ্ছাচারিতাসহ বিভিন্ন অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ পাওয়া গছে। তার অপকর্মের বিরুদ্ধে বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দিয়েও কোনো প্রতিকার পাননি বলে দাবি এ প্রতিষ্ঠানের প্রথম জমিদাতা বীর মুক্তিযোদ্ধা বি এম গোলাম সরোয়ার রেজার।

বিদ্যালয়ে একটি মার্কেট ভবন নির্মাণ করেছে প্রতিষ্ঠান, এতে ফারুক হোসেন নামে এক দোকানির কাছ থেকে দোকান বরাদ্দের জন্য ৫ হাজার টাকা এবং মার্কেটে সাকিব টেইলার্সের ৪ মাসের মাসিক ভাড়ার টাকা নিয়ে আত্মসাৎ করেছেন। যার কোনো রশিদ দেখাতে পারেননি বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আতিয়ার রহমান।

রোস্তম আলী মধ্যমিক বিদ্যালয় সূত্রে, ২০২১-২২ অর্থবছরে বিদ্যালয় সংস্কারের জন্য ৩০ হাজার টাকা বরাদ্দ আসে। কিন্তু সেখানে কাজ করা হয়নি। এসব টাকা বরাদ্দ প্রাপ্তি এবং ব্যয়ের ক্ষেত্রে বিদ্যালয়ের প্রধান ও সহকারী শিক্ষক এবং ম্যানেজিং কমিটির সংশ্লিষ্টতার বিধান থাকলেও গোপনে এসব টাকা সভাপতি আত্মসাৎ করেছে। এবং শিক্ষা অধিদপ্তর কর্তৃক বাস্তবায়নাধীন পারফরম্যান্স বেজড গ্র্যান্টস ফর সেকেন্ডারি ইনস্টিটিউশনস (পিবিজি এস আই) স্কিম এর আওতায় ২০২২-২৩ অর্থবছরে জবাবদিহি ব্যবস্থাপনায় অনুদান হিসেবে রোস্তম আলী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ব্যাংক একাউন্টের মাধ্যমে ৫ লাখ টাকা আসে। এই টাকা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, শিক্ষক-কর্মচারী ও ছাত্রছাত্রীদের জন্য বিশেষ অনুদান। কিন্তু এই অনুদানের টাকা আত্মসাৎ করার জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছে এবং শিক্ষদের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচারণ করেন। এজন্য বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতির বিভিন্ন অনিয়মের কারণে স্কুলের প্রতিষ্ঠানিক কাজসহ শিক্ষাকার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে বলে জানা গেছে।

স্কুল পরিচালনা কমিটির প্রধান হয়েও একের পর এক অনিয়ম-দুর্নীতিতে জড়িয়ে আছেন তিনি। এতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটির সুনাম ক্ষুণ্যের পাশাপাশি অসন্তোষ তৈরি হচ্ছে বিদ্যালয়ের অভিভাবক ও স্থানীয় সচেতন ব্যক্তিবর্গদের মধ্যে।

ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার রঘুনাথপুর গ্রামে ১৯৭৩ সালে রঘুনাথপুর বাজার সংলগ্ন রোস্তম আলী মাধ্যমিক বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠিত হয়। এই প্রতিষ্ঠানের সাবেক শিক্ষার্থীদের অনেকে সরকারি-বেসরকারি বড় বড় পদে দায়িত্ব পালন করছেন। আমির হোসেন স্বনামধন্য এই প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতির পদে দায়িত্ব পাওয়ার পর প্রথম থেকেই নানা অনিয়ম শুরু হয়ে আসছে।

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক, বিভিন্ন সময় সভাপতি আমির হোসেনের মধ্যমে নানাভাবে নির্যাতিত হচ্ছেন। কিন্তু এসব বিষয়ে প্রকাশ্যে কথা বলতে সাহস পান না। বিশেষ করে আমির হোসেন সভাপতি দায়িত্ব নেয়ার পর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটিতে অযোগ্যদের টাকার বিনিময়ে শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়েছে।

স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে গেছে, বিদ্যালয়ে নানা খাতের টাকা আত্মসাতের লোভে বার বার ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি হন। উনি এক সময় বিএনপি ঘরোয়ার মানুষ ছিলেন। পরবর্তীতে সরকারি দলের সমর্থক হিসেবে যুক্ত হন। তবে আওয়ামী লীগের কোনো পদ-পদবিতে নেয় তিনি। সরকারি দলের সমর্থক হওয়ায এলাকায় প্রভাব দেখান। তার অনিয়ম সম্পর্কে লোকমুখে অনেক কথায় প্রচলন আছে।

স্থানীয় মেম্বার ইদ্রিস আলী জানান, সে ক্ষমতার দাপটে ওই বিদ্যালয়ে বার বার সভাপতি হয়ে শিক্ষক-কর্মচারী নিয়োগ বাণিজ্য শুরু করে বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতি করছেন। অযোগ্য ব্যক্তিকে সভাপতি করার কারণে বিদ্যালয়ের সুনাম ক্ষুণ্ন হচ্ছে অন্য দিকে প্রতিষ্ঠানটি ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে। আমির হোসেনকে বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির সভাপতির পদ থেকে সরিয়ে প্রতিষ্ঠানকে বাঁচানোর দাবি জানিয়েছেন।

প্রধান শিক্ষক আতিয়ার রহমান জানান, সভাপতি আমির হোসেন বিদ্যালয় পরিচালনার ক্ষেত্রে শিক্ষকদের সঙ্গে কোনো পরামর্শ ও সমন্বয় না করে এককভাবে সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকেন এবং সে কোনো নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে তার ব্যক্তিস্বার্থ হাসিলের কারণে বিদ্যালয়ের শিক্ষার পরিবেশ বিঘিœত ও শিক্ষকদের মাঝে অসন্তোষ বিরাজ করছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি আমির হোসেন অস্বীকার করে বলেন, আপনি কাল আসেন।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইসরাত জাহান জানান, এ বিষয়ে জেলা শিক্ষা অফিসারের সঙ্গে কথা বলবো এবং লিখিত কোনো অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা নেয়া হবে।

জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা শেখ মনিরুল ইসলাম বলেন, অভিযোগের বিষয়ে কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসারের সঙ্গে কথা বলতে।

শিক্ষাবার্তা ডট কম/এএইচএম/০২/০৯/২০২৩     

দেশ বিদেশের শিক্ষা, পড়ালেখা, ক্যারিয়ার সম্পর্কিত সর্বশেষ সংবাদ শিরোনাম, ছবি, ভিডিও প্রতিবেদন সবার আগে দেখতে চোখ রাখুন শিক্ষাবার্তায়


Discover more from শিক্ষাবার্তা ডট কম

Subscribe to get the latest posts sent to your email.