নওগাঁঃ জেলার রাণীনগর উপজেলার গোনা উচ্চ বিদ্যালয়ের দুই শিক্ষকের বিরুদ্ধে জাল শিক্ষক নিবন্ধন সনদ দিয়ে চাকরি করার অভিযোগ উঠেছে। নিয়োগের সময় ওই দুজনকে স্বজনপ্রীতির মাধ্যমে জাল শিক্ষক নিবন্ধন সনদ দিয়ে ভোকেশনাল শাখায় নিয়োগ দেওয়া হয়। এরপর থেকেই বিদ্যালয়ে তারা দুজন শিক্ষকতা করে আসছেন। প্রায় ১৩ বছর পর ধরা পড়েছেন তারা। সম্প্রতি নিরীক্ষা অধিদপ্তরের যাচাইয়ের পর তাদের সনদটি জাল বলে প্রতিবেদন দেওয়া হয়েছে। এরপর বেরিয়ে আসে তাদের জালিয়াতির তথ্য। অভিযুক্ত জাল শিক্ষক নিবন্ধন সনদধারী দুই শিক্ষক হচ্ছেন সাহাবউদ্দিন (গণিত বিষয়) ও মিজানুর রহমান (বাংলা বিষয়)। তারা দুজন গোনা গ্রামের বাসিন্দা। দুজনের মধ্যে শিক্ষক সাহাবউদ্দিন ওই প্রতিষ্ঠানের সাবেক সভাপতি সেকেন্দার আলীর ছেলে।
অভিযোগ উঠেছে, প্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষক ওই দুজনকে জাল সনদে বিদ্যালয়ে শিক্ষক হিসাবে নিয়োগ দেওয়ার সঙ্গে জড়িত। নিরীক্ষা অধিদপ্তরের যাচাইয়ের পর শিক্ষক সাহাবউদ্দিন ও মিজানুর রহমানের শিক্ষক নিবন্ধন সনদটি জাল বলে প্রতিবেদন প্রকাশ হলেও প্রধান শিক্ষকের সহযোগিতায় তারা এখনো প্রতিষ্ঠানে বহাল রয়েছেন। তাদের দুজনকে এমপিও করে দেওয়ার পাঁয়তারাও চালাচ্ছেন প্রধান শিক্ষক। জানা গেছে, গোনা উচ্চ বিদ্যালয়ের ভোকেশনাল শাখায় জাল শিক্ষক নিবন্ধন সনদ দিয়ে স্বজনপ্রীতির মাধ্যমে তৎকালীন সভাপতির ছেলে সাহাবউদ্দিন এবং একই গ্রামের মিজানুর রহমান ২০১১ সালে শিক্ষক হিসাবে নিয়োগ পেয়ে যোগদান করেন। প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমিক শাখা এমপিওভুক্ত। আর ভোকেশনাল শাখা নন-এমপিওভুক্ত হওয়ায় এ পর্যন্ত তারা এমপিওভুক্ত হননি। তবে প্রধান শিক্ষক দুজনকে এমপিওভুক্ত করতে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসে তাদের কাগজপত্র পাঠিয়েছেন। এরই মধ্যে নিরীক্ষা অধিদপ্তরের যাচাইয়ে ধরা পড়ে তারা জাল সনদে চাকরি করছেন। এরপর মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর থেকে তাদের কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়। এরপরও তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি। এমনকি জাল শিক্ষক নিবন্ধন সনদেই ওই দুজন শিক্ষক প্রতিষ্ঠানটিতে চাকরি করে যাচ্ছেন।
এ বিষয়ে মুঠোফোনে অভিযুক্ত শিক্ষক সাহাবউদ্দিন বলেন, এ ব্যাপারে সামনাসামনি আপনার সঙ্গে কথা বলব বলে বিষয়টি এড়িয়ে যান।
অপর অভিযুক্ত মিজানুর রহমান বলেন, ‘সঠিক সনদ দিয়েই বিদ্যালয়ে ঢুকেছি। আমি অসুস্থ আছি। সুস্থ হয়ে সাক্ষাতে আপনার সঙ্গে কথা বলব বলে ফোনটি কোটে দেন।’
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোখলেছুর রহমান বলেন, ‘আমার প্রতিষ্ঠানের বর্তমানে সভাপতি নেই, আবার উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাও নেই। এজন্য তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নিতে পারিনি। প্রতিষ্ঠানে সভাপতি এলে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ এছাড়া তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ অস্বীকার করেন তিনি।
উপজেলা মাধ্যমিক একাডেমিক সুপারভাইজার কামরুল হাসান বলেন, ‘নিরীক্ষা অধিদপ্তর যাচাইয়ের পর ওই দুই শিক্ষকের সনদটি জাল বলে প্রতিবেদন দিলে আমরা বিষয়টি জানতে পারি। এরপর বিদালয়ের প্রধান শিক্ষককে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে। তিনি যদি কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ না করেন তাহলে আমরা ওই দুই শিক্ষকের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেব।’
শিক্ষাবার্তা ডট কম/এএইচএম/০২/০৯/২০২৩
দেশ বিদেশের শিক্ষা, পড়ালেখা, ক্যারিয়ার সম্পর্কিত সর্বশেষ সংবাদ শিরোনাম, ছবি, ভিডিও প্রতিবেদন সবার আগে দেখতে চোখ রাখুন শিক্ষাবার্তায়
Discover more from শিক্ষাবার্তা ডট কম
Subscribe to get the latest posts sent to your email.