নিজস্ব প্রতিবেদক, নীলফামারীঃ টাকা জমার ছয় মাস পার হলেও দাতা সদস্যের প্রার্থীতা ঘোষণা না করে পুনরায় দুই জন দাতা সদস্য নিয়োগ দিয়েছে জেলার ডিমলার ডালিয়া দ্বিমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক সহিদা ইয়াসমিন এবং বিদ্যালয়টির এডহক কমিটির সভাপতি মঈনুল ইসলাম।
বিদ্যালয়টির ব্যাংক একাউন্টে টাকা জমা দিলেও দাতা সদস্যের প্রার্থীতা ঘোষণা না হওয়ায় দিনাজপুর শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান বরাবর গত ৯ নভেম্বর ২০২২ তারিখে লিখিত অভিযোগ দেন দাতা সদস্যের টাকা জমাদানকারী বিদ্যালয়টির সাবেক সভাপতি মোঃ শামসুল হক (হুদা)। লিখিত অভিযোগ দেওয়ার পরেও শিক্ষা বোর্ডটি থেকে দীর্ঘদিন যাবত কোন প্রতিকার না পেয়ে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন তিনি। গত ২৭ মার্চ ২০২৩ তারিখে করেন রিট পিটিশন। যার নম্বর ৩৩৪৬/2023ইং। হাইকোর্টের শুনানি শেষে গত ৯ নভেম্বর ২০২২ তারিখে দিনাজপুর বোর্ডের চেয়ারম্যান বরাবর দেওয়া লিখিত আবেদনের প্রেক্ষিতে হাইকোর্ট দিনাজপুর শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যানকে গত ২৭ মার্চ ২০২৩ তারিখ থেকে দুই মাসের মধ্যে বিষয়টি নিষ্পত্তি করার আদেশ দেন।
হাইকোর্টের নির্দেশনার আলোকে রিটকারী মোঃ শামসুল হক (হুদা) গত ১৮ এপ্রিল ২০২৩ তারিখে দিনাজপুর শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান বরাবর হাইকোর্টের রিট পিটিশনের নির্দেশনার কপি সংযুক্ত করে হাইকোর্ট কর্তৃক প্রদত্ত নির্দেশনার আলোকে বিষয়টি নিষ্পত্তি করার জন্য পুনরায় লিখিত আবেদন জানান। এই আবেদনের ১৫ দিন পার হলেও বিষয়টি নিষ্পত্তির জন্য কোন ধরণের ব্যবস্থা নেয়নি দিনাজপুর শিক্ষা বোর্ড।
জানা গেছে, ডালিয়া দ্বি-মূখী উচ্চ বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ গত ২০ আগষ্ট ২০২২ তারিখের দাতা ভোটার নেওয়ার বিজ্ঞপ্তি/প্রচার প্রচারনা করেন । বিজ্ঞপ্তি মোতাবেক গত ২৩ আগষ্ট ২০২২ ও ২৪ আগষ্ট ২০২২ তারিখে উক্ত বিদ্যালয়ের হিসাব নং-৯৮৫ রূপালী ব্যাংক, ডালিয়া তিস্তা ব্যারেজ শাখায় মোট ৯জন দাভা ভোটার হওয়ার জন্য টাকা জমা প্রদান করেন। টাকা জমা করলেও দাতা সদস্যের প্রার্থীতা ঘোষণা না করে দিনাজপুর শিক্ষা বোর্ড কর্তৃক গত ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ তারিখে বিদ্যালয় পরিচালনার জন্য এডহক কমিটির অনুমোদন দেয়ার পরের দিনই গত ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ তারিখে রুপালী ব্যাংকের ডালিয়া দ্বিমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের একাউন্টে দুই জন খন্ডকালীন দাতা সদস্য নিয়োগ দানের জন্য ২০ হাজার করে মোট ৪০ হাজার টাকা জমা নিয়েছেন। আর এই দুইজন খণ্ডকালীন দাতা সদস্য নিয়োগের জন্য রেজুলেশন করার লক্ষে বিদ্যালয়টির অভিভাবক প্রতিনিধি রফিকুল ইসলামের কাছ থেকে তাকে না বলে ০৪ এপ্রিল ২০২৩ তারিখে স্বাক্ষর নেন এডহক সভাপতি মঈনুল হক এবং ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক। স্বাক্ষর নেওয়ার পরে আরও দুইজন দাতা সদস্য নিয়োগের জন্য স্বাক্ষর নেওয়া হলো বলে তাকে (অভিভাবক প্রতিনিধি) জানান ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক শহিদা ইয়াসমিন। পূর্বের ৯ জন দাতা সদস্যের টাকা জমা নিয়েও প্রার্থীতা ঘোষণা না করে অতি গোপনে বিজ্ঞপ্তি ছাড়া আরও দুইজন দাতা সদস্যের টাকা জমা নেওয়ায় এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয় তখন।
জানতে চাইলে রিটকারী মোঃ শামসুল হক (হুদা) বলেন, দিনাজপুর বোর্ডে লিখিত অভিযোগ দেওয়ার পরও কোন ধরণের ব্যবস্থা নেওয়া না হলে দীর্ঘদিন অপেক্ষা করে মহামান্য হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছি। হাইকোর্টের নির্দেশের ১৫ দিন পার হলেও বিষয়টি নিষ্পত্তির জন্য বোর্ডের কোন ধরণের উদ্যোগ দেখছি না। বিষয়টি দ্রুত নিষ্পত্তির দাবি জানান তিনি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে দিনাজপুর শিক্ষা বোর্ডের বিদ্যালয় পরিদর্শক অধ্যাপক আবু হেনা মোস্তফা কামাল বলেন, বিষয়টি নিয়ে কাজ চলছে। হাইকোর্টের নির্দেশনা উপেক্ষা করার সুযোগ নেই। মহামান্য হাইকোর্টের বেঁধে দেওয়া সময়ের মধ্যেই বিষয়টির নিষ্পত্তি করা হবে।
সংশ্লিষ্ট খবরঃ
- ডিমলায় গোপনে দাতা সদস্য নেওয়ার পাঁয়তারা প্রধান শিক্ষকের
- ডালিয়া দ্বি-মুখী উচ্চ বিদ্যালয়: এডহক কমিটিতেই চলছে বছরের পর বছর
- ডিমলায় জাল সনদে শিক্ষক বিশ্ব নাথের বিশ্ব জালিয়াতি
- নিয়োগ ও সনদ জালিয়াতি করে শিক্ষক বিশ্ব নাথের ২১ বছর ধরে শিক্ষকতা
- নিয়োগ ও সনদ জালিয়াতি করেও স্বপদে বহাল শিক্ষক বিশ্বনাথ
- ফেঁসে যাচ্ছেন এমপিওভুক্ত ৮১৪ শিক্ষক, আমলনামা মন্ত্রণালয়ে
- ডিমলায় ৯ম স্কেলে ৫ বছর ধরে সহকারী প্রধান শিক্ষক, নিয়োগ নিয়ে প্রশ্ন
শিক্ষাবার্তা ডট কম/এএইচএম/০১/০৫/২০২৩
দেশ বিদেশের শিক্ষা, পড়ালেখা, ক্যারিয়ার সম্পর্কিত সর্বশেষ সংবাদ শিরোনাম, ছবি, ভিডিও প্রতিবেদন সবার আগে দেখতে চোখ রাখুন শিক্ষাবার্তায়
Discover more from শিক্ষাবার্তা ডট কম
Subscribe to get the latest posts sent to your email.