প্রাথমিক শিক্ষা বিভাগের কর্মকর্তাদের অনলাইনভিত্তিক বিদ্যালয় পরিদর্শন (ই-মনিটরিং) গতানুগতিক বলে জানিয়েছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। মন্ত্রণালয় জানায়, পরিদর্শনে মানসম্মত প্রাথমিক শিক্ষা বাস্তবায়নে শ্রেণি কার্যক্রম পর্যবেক্ষণের বিষয়ে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে না। বুধবার (১৮ সেপ্টেম্বর) সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির বৈঠকে এই তথ্য তুলে ধরা হয়েছে।
বৈঠকে সারাদেশের সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে চলমান ই-মনিটরিং কার্যক্রম নিয়ে প্রতিবেদন জমা দেয় প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। প্রতিবেদনে গত কয়েক বছরের ই-মনিটরিং কার্যক্রম পর্যালোচনা করে মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ই-মনিটরিংয়ের মাধ্যমে যেসব তথ্য আপলোড হয়েছে, তার বেশিরভাগই গতানুগতিক। পরিদর্শনে বিদ্যালয় ও প্রধান শিক্ষকের মান যথাযথভাবে মূল্যায়ন করা হয়নি। মানসম্মত প্রাথমিক শিক্ষা বাস্তবায়নে শ্রেণি কার্যক্রম পর্যবেক্ষণের বিষয়ে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে না।
অবশ্য বৈঠকে কমিটির সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান ই-মনিটরিং প্রসঙ্গে বলেন, ‘বিদ্যালয় পরিদর্শনে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিতকরণে ই-মনিটরিয়ং বর্তমান সরকারের একটি যুগোপযোগী পদক্ষেপ। এটি মাঠ ও কেন্দ্রীয় প্রশাসনের মধ্যে বাস্তবতাভিত্তিক সরাসরি যোগাযোগ স্থাপন করেছে।
প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা কমিটি (এসএমসি) পুনর্গঠনসহ এর সভাপতির শিক্ষাগত যোগ্যতা কমপক্ষে স্নাতক পাস করার বিষয়ে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের বিবেচনাধীন রয়েছে বলে বৈঠকে জানানো হয়েছে। এছাড়া, এসএমসির কার্যক্রম মনিটরিং করার জন্য কেনিয়ার আদলে সুপারভাইজার পদ সৃষ্টির বিষয়টিও পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে গ্রহণ করার কথা জানিয়েছে কমিটি।
সূত্র জানিয়েছে বৈঠকে মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে সরকারি সংস্থা টেলিফোন শিল্প সংস্থার (টেশিস) মাধ্যমে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরের জন্য ল্যাপটপ কেনার প্রস্তাবনা উত্থাপন করা হলে কমিটি তা নাকচ করে দেয়। কমিটি উন্মুক্ত টেন্ডারের মাধ্যমে ল্যাপটপ কেনার পরামর্শ দেয়।
বৈঠকে জানানো হয়েছে—অননুমোদিত নার্সারি, কিন্ডারগার্টেন ও প্রিপারেটরি স্কুলগুলো আইনের মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণ করার জন্য উপজেলা ভিত্তিক ৫ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করা হয়েছে। নির্বাচনি এলাকায় মৌলিক সাক্ষরতা প্রকল্পের কার্যক্রম তদারকির করার জন্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে সংসদ সদস্যদের ডিও লিটার দেওয়ার বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন বলে জানানো হয়। কমিটি এর আগে বৈঠকে প্রকল্প তদারকির জন্য সংসদ সদস্যদের চিঠি দেওয়ার সুপারিশ করা হয়েছিল।
এদিকে, সংসদ সচিবালয়ের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, মৌলিক সাক্ষরতা প্রকল্পের আওতায় ৪৪ লাখ নারী-পুরুষের ডাটাবেজ তৈরির অংশ হিসেবে প্রথম পর্যায়ে ১৩৪টি উপজেলার ২৩ লাখ ৫৯ হাজার ৪৪১ জনের ডাটাবেজ প্রস্তুত করা হয়েছে। দ্বিতীয় পর্যায়ে ১১৬টি উপজেলার মধ্যে ১১৪টি উপজেলায় বেজলাইন সার্ভের কার্যক্রম চলমান আছে।
কমিটির সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমানের সভাপতিত্বে সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত বৈঠকে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সদস্য মো. জাকির হোসেন, ইসমাত আরা সাদেক, আলী আজম, মো. জোয়াহেরুল ইসলাম, ফেরদৌসী ইসলাম ও মো. মোশারফ হোসেন অংশ নেন।
Discover more from শিক্ষাবার্তা ডট কম
Subscribe to get the latest posts sent to your email.