নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাঃ নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেছেন, বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার সব সংস্কার করছেন, শিক্ষা সংস্কারে কোন উদ্যোগ দেখলাম না। অথচ জাতির মেরুদন্ড শিক্ষা, আর সেটার উপরে কোন কাজ হচ্ছে না। যারা মানুষ গড়ার কারিগর, সেই শিক্ষকদের এধরণের অবমননা খুবই লজ্জার। শিক্ষকদের জীবনের মান না বাড়লে শিক্ষার মান বাড়বে কীভাবে?
শনিবার (১০ মে) প্রেস ক্লাবের সামনে আয়োজিত শিক্ষক-কর্মচারী মহাসমাবেশে সংহতি জানিয়ে তিনি একথা বলেন।
এমপিওভুক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান জাতীয়করণ, শতভাগ উৎসব ভাতার নিশ্চয়তা চেয়ে সরকারকে এক সপ্তাহের সময় বেঁধে (১৭ এপ্রিল) দিয়েছেন আন্দোলনরত শিক্ষকরা। এই সময়ের মধ্যে দাবি মানা না হলে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে লাগাতার অবস্থান কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দিয়েছেন তারা। এছাড়া প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন ‘যমুনা’ এবং সচিবালয় অভিমুখে শিক্ষকরা লংমার্চ করবেন বলেও জানিয়েছেন আন্দোলনরতরা।
শিক্ষাখাতে জিডিপির মাত্র এক ভাগ বরাদ্দ মন্তব্য করে প্রধান উপদেষ্টাকে উদ্দেশ্য করে মান্না বলেন, তাহলে শিক্ষকদের জীবনের মান বাড়বে কীভাবে? সেটি না হলে শিক্ষার মান বাড়বে কীভাবে? ১৭ তারিখ আসার আগে সবাইকে নিয়ে কথা বলে এটা নিস্পত্তির ব্যবস্থা করুন। রাজনৈতিক দলের নেতাদের নিয়ে চারদিন ধরে বসতে পারলে শিক্ষক নেতাদের সঙ্গে চারঘণ্টা বসতে পারবেন না?
শিক্ষাক্ষেত্রে সরকারি-বেসরকারি বৈষম্য দূরীকরণের লক্ষ্যে আসন্ন ঈদ-উল আযহার পূর্বেই পূর্ণাঙ্গ উৎসবভাতা, বাড়িভাড়া ও চিকিৎসাভাতা প্রদানসহ শিক্ষাব্যবস্থা জাতীয়করণের দাবিতে দেশের এমপিওভুক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক কর্মচারীদের বিভিন্ন সংগঠনের সমন্বয়ে গঠিত ‘শিক্ষক-কর্মচারী ঐক্য পরিষদ’ এই সমাবেশের আয়োজন করে।
শিক্ষক-কর্মচারী ঐক্য পরিষদের চেয়ারম্যান ও শতবর্ষী এবং এক সময়ের ‘আওয়ামীপন্থী শিক্ষক সংগঠন’ হিসেবে পরিচিত বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতির (বিটিএ) এর সভাপতি অধ্যক্ষ শেখ কাওছার আহমেদ বলেন, আমি ২৫ পার্সেন্ট উৎসব ভাতা চাই না, আমরা কোন পার্সেন্টিজ চাই না। আগামী ঈদুল আযহার আগেই ২৫ পার্সেন্ট ভাতার পরির্তন করে অনতিবিলম্বে ১৭ মের আগে শতভাগ উৎবভাতার ঘোষণা দিতে হবে। সরকারি শিক্ষক-কর্মচারীদের ন্যয় বাড়িভাড়া এবং পূর্নাঙ্গ চিকিৎসাভাতা প্রদান করতে হবে।
প্রধান উপদেষ্টা ও শিক্ষা উপদেষ্টাকে উদ্দেশ্য করে তিনি শিক্ষক বলেন, “অগ্রাধিকার ভিত্তিতে প্রথমে মাধ্যমিক শিক্ষাকে জাতীয়করণ করতে হবে। দয়া করে সকল বৈষম্য ঘুচানোর লক্ষ্যে শিক্ষা ব্যবস্থা জাতীয়করণের ঘোষণা দিন। আর্থিক প্রাপ্তির ক্ষেত্রে সকল বৈষম্য ঘুচিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করুন।
তিনি বলেন, অন্যথায় ১৭ মে থেকে বাংলাদেশের সকল শিক্ষক-কর্মচারী এই রাজপথে অবস্থান করে লাগাতার অবস্থান কর্মসূচি পালন করবে। যতোদিন পর্যন্ত শিক্ষাব্যবস্থার জাতীয়করণ ও ১০০ পার্সেন্ট উসৎবভাতার ঘোষণা না আসবে, পূর্ণাঙ্গ বাড়িভাড়া ও চিকিৎসাভাতার ঘোষণা না আসবে ততোক্ষণ পর্যন্ত এই রাজপথ থেকে কেউ ফিরে যাবো না।
এর আগে এমপিওভুক্ত শিক্ষা জাতীয়করণ, উৎসব ভাতা, চিকিৎসা ভাতা ও বাড়ি ভাড়াসহ বিভিন্ন দাবিতে গত ২২ দিন ধরে আন্দোলনরত শিক্ষকরা তাদের কর্মসূচি স্থগিত করেন গত মার্চ মাসের শুরুতে।
শিক্ষাবার্তা ডটকম/এএইচএম/১০/০৫/২০২৫
Discover more from শিক্ষাবার্তা ডট কম
Subscribe to get the latest posts sent to your email.