নিজস্ব প্রতিবেদক।।
২০২৪ সালের এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা দুই মাস পেছাতে প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি দিয়েছেন পরীক্ষার্থীরা। স্মারকলিপিতে পরীক্ষা পেছানোর জন্য বেশ কয়েকটি যুক্তি তুলে ধরেছেন শিক্ষার্থীরা।
মঙ্গলবার (২৫ জুন) দুপুরে রাজধানীর তেজগাঁওয়ে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে শিক্ষার্থীরা স্মারকলিপি জমা দেন।
স্মারকলিপিতে শিক্ষার্থীরা উল্লেখ করেন, ভারি বৃষ্টিপাত ও পাহাড়ি ঢলে সিলেট, সুনামগঞ্জ ও মৌলভীবাজারের বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়ে পানিবন্দি হয়ে পড়েছে ১৫ লাখের বেশি মানুষ। এ ছাড়া উজানি ঢলে তিস্তার পানি বেড়ে প্লাবিত হয়েছে উত্তরাঞ্চলের নিম্নাঞ্চল। ভারি বর্ষণে প্লাবিত হয়েছে কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলার অন্তত ৫০টি গ্রাম। দ্বিতীয় দফা বন্যায় বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে সিলেট। সুরমা-কুশিয়ারাসহ এ অঞ্চলের সবকটি নদ-নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
শিক্ষার্থীরা উল্লেখ করেন, দ্বিতীয় দফায় সিলেটে ৪৮৯টি বিদ্যালয় বন্যাকবলিত হয়েছে। এর মধ্যে ২২৬টি বিদ্যালয়ে বন্যার্তদের জন্য আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। এ ছাড়া সুনামগঞ্জ জেলায় বন্যাকবলিত হয়েছে ২৫৯টি বিদ্যালয়। এর মধ্যে আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে ১৪৮টি বিদ্যালয়। তিন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে বন্যার পানি ওঠায় ব্যাহত হচ্ছে চিকিৎসাসেবা। এ ছাড়া বেশ কয়দিনের ভারি বর্ষণে চট্টগ্রাম অঞ্চলের বিভিন্ন নদীর পানি বেড়ে পানিতে তলিয়েছে টেকনাফ। এসবের পাশাপাশি, ময়মনসিংহ বিভাগের বন্যা পরিস্থিতিরও চরম অবনতি হচ্ছে। রংপুর-কুড়িগ্রাম অঞ্চলও ভয়াবহ বন্যার কবলে পড়েছে।
তারা আরও লিখেছেন, এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের মধ্যে যাদের ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত কিংবা বই-খাতা বন্যায় ভিজেছে, নষ্ট হয়েছে, তারা কীভাবে এই দুর্যোগপূর্ণ পরিবেশে জীবনের গুরুত্বপূর্ণ একটি পরীক্ষায় অংশ নেবে? আবার বন্যাকবলিত এলাকায় দিন ও রাতের সিংহভাগ সময়ে বিদ্যুৎ থাকছে না। বিদ্যুতের অভাবে সন্ধ্যার পর পড়তে বসাটাও অসম্ভব হয়ে দাঁড়িয়েছে। এমন বিপৎসংকুল অবস্থায় কীভাবে বন্যাদুর্গতরা পরীক্ষার প্রস্তুতি নেবে? এরই মাঝে সিলেট বোর্ডের শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা মাত্র ৯ দিন পিছিয়েছে। আদৌ এই ৯ দিনে কি তাদের পুনর্বাসন সম্ভব? বাংলাদেশের এই বর্ষা মৌসুমে বারংবার বন্যা প্লাবিত হয় বিস্তর অঞ্চল। যদি পরীক্ষা চলাকালীন আবার বন্যা দেখা দেয়, তাহলে তাদের পরিস্থিতি আরও খারাপ হবে।
শিক্ষার্থীরা লিখেন, ছাত্রছাত্রীদের এইচএসসি শেষ করেই ভর্তিযুদ্ধে নামতে হয়। গত বছর চট্টগ্রাম বোর্ডের পরীক্ষা ১০ দিন পেছানো হয়েছিল। কিন্তু মেডিকেল ও বিশ্ববিদ্যালয়গুলো ভর্তি পরীক্ষা পেছায়নি। সব বোর্ডের সঙ্গেই চট্টগ্রামে বোর্ডের পিছিয়ে পড়া ছাত্রছাত্রীরা ভর্তি পরীক্ষা দেয়। এমতাবস্থায় স্বাভাবিকভাবেই ছাত্রছাত্রীরা মানসিকভাবে পিছিয়ে পড়বে। বাকিদের অনেক পরে ভর্তি প্রস্তুতি শুরু করায় মানসিক চাপের কারণে অনেকের স্বপ্নভঙ্গ ঘটার বিশাল আশঙ্কা দেখা দেয়। অথচ সবারই একই শিক্ষাব্যবস্থার অন্তর্গত। সকলেই ‘লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড’ পাবার অধিকার রাখে। তাই শুধু বন্যাকবলিত অঞ্চলগুলোই নয় বরং সব বোর্ডের পরীক্ষা ২ মাস পিছিয়ে নিতে (বন্যার মৌসুমের পর পর্যন্ত) প্রধানমন্ত্রীকে বিষয়টি বিবেচনা করে দেখার অনুরোধ জানাচ্ছি।
শিক্ষাবার্তা ডটকম/জামান/২৬/০৬/২০২৪
Discover more from শিক্ষাবার্তা ডট কম
Subscribe to get the latest posts sent to your email.