।। প্রফেসর ডক্টর মোঃ মাহমুদুল হাছান।।
ইতিহাস পরিক্রমায় বাংলা নববর্ষ বাঙালি জাতির একটি ঐতিহ্যময় উৎসব। প্রতি বছরের পহেলা বৈশাখে অতি আড়ম্বরপূর্ণভাবে এদেশের সর্বস্তরের জনগন দিবসটি পালন করে থাকে।
এটি বাঙালিদের জন্য একটি সর্বজনীন লোকউৎসব এবং তাদের ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির উপাদান। এ উৎসবে প্রধান অনুষঙ্গ বৈশাখী মেলা। এছাড়া আমানি, রাজপুণ্যাহ, হালখাতা, গাজনের গান ইত্যাদি গ্রামীণ অনুষ্ঠান যা আগের দিনে মাস জুড়ে চলতো।
কিন্তু যুগযুগ ধরে আমরা যে নববর্ষ উদযাপন করে আসছি তা বাংলা নববষের্র প্রকৃত চিত্র নয়। ইতিহাসবেত্তাদের ভাষায় এটি এখন বাঙালি সংস্কৃতির একটি রুপান্তরিত ধারা, যা মূলধারার একটি বিকৃতরূপ। কারণ, বাংলা নববর্ষের সূচনা হয়েছিলো মুসলমানদের সাংস্কৃতিক চর্চার হাত ধরে।
হিজরি সনকে ভিত্তি করেই বাংলা সনের উৎপত্তি। মুঘল সম্রাট আকবরের (১৫৫৬-১৬০৫) আমলে বাংলার কৃষকদের সুবিধার্থে হিজরি সনকে ভিত্তি ধরে বাংলা সনের প্রবর্তন করেন।
হিন্দু সৌরপঞ্জিকা শুরু হতো গ্রেগরিয়ান পঞ্জিকায় উল্লিখিত এপ্রিল মাসের মাঝামাঝি সময়ে। তবে এই সৌরপঞ্জিকায় বাংলার বারটি মাস অনেক বছর আগে থেকেই পালিত হয়ে আসছিল বলে দাবি করেছেন অনেক ইতিহাসবিদ।
হিন্দু সৌরপঞ্জিকার আমলেও নববর্ষ বা পহেলা বৈশাখে উৎসব পালন করা হতো। তবে সে উৎসব ছিল ঋতুধর্মীয় উৎসব। মূলত তখনকার কৃষি-ভিত্তিক সমাজেই নিহিত ছিল এই উৎসবের তাৎপর্য।
বঙ্গ, নেপাল, ত্রিপুরা, আসাম, উড়িষ্যা, কেরালা, মনিপুর, পাঞ্জাব, তামিলনাড়ুর অধিবাসীরা পালন করত এ উৎসব। ভারতবর্ষের মোগল সম্রাটরা কৃষি পণ্যের খাজনা আদায় করতেন হিজরি পঞ্জিকার দিন-তারিখ অনুযায়ী।
কিন্তু হিজরি সন নির্ভর করে সম্পূর্ণ চাঁদের উপর। ফলে খাজনা আদায় করা নিয়ে কিছুটা বিপত্তি দেখা দিলে তৎকালীন মোগল সম্রাট আকবর সুষ্ঠুভাবে খাজনা আদায়ের লক্ষ্যে এক নতুন পঞ্জিকা প্রবর্তন করেন, যা আজকের বাংলা সন হিসেবে পরিচিত।
সম্রাট আকবরের আদেশক্রমে তৎকালীন বাংলার বিখ্যাত জ্যোতির্বিজ্ঞানী ও চিন্তাবিদ ফতেহ উল্লাহ সিরাজী হিন্দু সৌর সন এবং আরবি হিজরি সনের সমন্বয় করে সম্পূর্ণ নতুন এই বাংলা সনের পঞ্জিকা তৈরি করেন।
১৫৮৪ খ্রিস্টাব্দের ১০ মার্চ (মতান্তরে ১১ মার্চ) থেকেই এই নতুন প্রবর্তিত সন গণনা শুরু হয়। তবে অনেকে মনে করেন, সম্রাট আকবরের সিংহাসন-আরোহণের বা অভিষেকের স্মরণে ধরা হয়, তার অভিষেক থেকেই এই বাংলা সন গণনা শুরু হয়েছে। অর্থাৎ, ১৫৫৬ ইংরেজি সনের ৫ই নভেম্বর থেকেই এ বাংলা সনের হিসেবনিকেশ শুরু। উল্লেখ্য, সর্বপ্রথম এ বাংলা সনের নামকরণ করা হয়েছিল ‘ফসলি সন’।
পরে কালের বিবর্তনে এ ‘ফসলি সন’ই ‘বঙ্গাব্দ’ বা ‘বাংলা সন’ হিসেবে পরিচিতি পেতে শুরু করে। আমাদের জানা থাকা আবশ্যক যে, হিজরি সন গণনা হয় রাসুল (সা.)-এর মক্কা থেকে মদিনা হিজরতকে কেন্দ্র করে। ওমর (রা.) রাসুল (সা.)-এর হিজরতকে স্মরণীয় রাখতে হিজরি সনের প্রবর্তন করেন।
পরে মুঘল সম্রাট আকবর তার সভাজ্যোতিষী আমীর ফতেউল্লাহ সিরাজীর (দৈবে দশমরতœ) পরামর্শে হিজরি ৯৬৩ সনকে বাংলা ৯৬৩ সন ধরে বাংলা সন গণনার নির্দেশ দেন। বাংলা সন প্রবর্তনে মুসলমান ও হিন্দু উভয় ধর্মে প্রভাব পড়ে। বাংলা সন ছাড়াও প্রায় সকল সনের ক্ষেত্রে ধর্মীয় প্রভাবের একটি দিক থাকে।
বাংলা সনের ক্ষেত্রে হিন্দু-মুসলিমের মিলিত স্রোতে সনটি অসাম্প্রদায়িক অবস্থানে দাঁড় করিয়েছে যা উদার ইসলামী সংস্কৃতির পাশাপাশি বাংলা সংস্কৃতির সাথে সামঞ্জস্যশীল।
বাংলা সন প্রবর্তন থেকেই সাধারণ মানুষের সাথে এ সনের পরিচয় সুগভীর। গ্রামের সাধারণ মানুষের কাছে বাংলার সন ও তারিখ জানতে চাওয়া হলে, আজও তারা হাতের আঙ্গুল গুণে তা বলে দিতে পারেন। গ্রামের মানুষের কাছে বাংলা সনের পর গুরুত্ব হচ্ছে হিজরি সন।
ইংরেজ শাসনামল অবসানের পর কালক্রমে বাংলাদেশে ‘নববর্ষ’ উদযাপন আজ বিশেষ উৎসবে পরিণত হয়েছে। বিশেষ করে রাষ্ট্রভাষা আন্দোলন ও তৎপরবর্তী কালের ঘটনা বাংলা ‘নববর্ষ’ উদযাপনকে প্রাণবন্ত ও বিস্তৃত করেছে।
অবশ্যই সাম্প্রতিককালের ‘নববর্ষ’ বা ‘বর্ষবরণ’ ও আগের দিনের ‘নববর্ষ’ বা বর্ষবরণের মধ্যে পার্থক্য সুস্পষ্ট।
বিশ্বায়নের ফলে আধুনিক যুগের বাংলা নববর্ষ উদযাপনের মনোহরি চাকচিক্য বাড়লেও আন্তরিকতার যথেষ্ট অভাব পরিলক্ষিত হয়। বর্তমান সময়ের ‘নববর্ষ’ উদযাপনে পান্তাভাত ও ইলিশ ভাজাসহ মুখরোচক অনেক খাবারের সমারোহ ঘটালেও এতে প্রাণের স্পর্শ পাওয়া যায় না।
ধনী ও বিলাসী মানুষের বিনোদনের ব্যবস্থা হলেও দরিদ্র ও অসহায় মানুষের অন্তরে প্রকৃত সুখ আসে না। আধুনিক যুগের শহরের মানুষের প্রাণহীন জমকালো বর্ষবরণের কৃত্রিম নিবিড় পল্লীর প্রীতিপূর্ণ ছোট ছোট উৎসব অতল গহবরে হারিয়ে যাচ্ছে। শিল্পপতি, চাকুরিজীবী ও টাকাওয়ালাদের উৎসবের গহ্বনে আজ পিষ্ট বাঙালি কৃষকদের নববর্ষ উৎসব।
অথচ বাংলা নববর্ষের সূচনা হয়েছিলো বাঙালি কৃষকদের ঐতিহ্য ও সংস্কৃতিকে কেন্দ্র করে। বাংলা নববর্ষের মূল উৎসই কৃষক ও কৃষি। দু:খজনক হলেও সত্য যে, ঢাকার পহেলা বৈশাখের জাঁকজমকপূর্ণ আয়োজনে অন্যতম আকর্ষণ এখন ‘মঙ্গল শোভাযাত্রা’, যার কোন অস্তিত্বই ছিলো না নববর্ষের উৎপত্তিকালে।
নববর্ষ সূচনার প্রায় পাঁচশত বছর পরে প্রথম মঙ্গল শোভাযাত্রা আয়োজিত হয় ১৯৮৯ সালে, যা মূলত: হিন্দুত্ববাদী সংস্কৃতির কুপ্রভাবের ফলে এ অশুভ যাত্রা আমাদের মুসলিম অধ্যুষিত বাংলাদেশে রুপান্তরিত হয়েছে। এখনকার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদ তখন ছিল চারুকলা ইন্সটিটিউট।
সেই চারুকলা ইন্সটিটিউটের উদ্যোগে ও আয়োজনেই পহেলা বৈশাখের সকালে এই শোভাযাত্রাটি বের করা হয়। তারপর শহরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে আবার তা ফিরে আসে চারুকলায়।
আর সে শোভাযাত্রায় রং-বেরঙের মুখোশে আর বিভিন্ন প্রাণীর প্রতিমূর্তি দিয়ে একেক বছর তুলে ধরা হয় আবহমান বাংলার সংস্কৃতি। একেক বছর এই শোভাযাত্রার জন্য একেক থিম বেছে নেওয়া হয়।
কোনও বছর থিম রাখা হয় হাতি, কোনও বছর কুমির, কোনও বছর বাঘ। আবার কখনও এই শোভাযাত্রার মাধ্যমে প্রতিবাদও জানানো হয়। এর সবকিছুই মুসলমানদের ধর্মীয় মূল্যবোধ ও একত্ববাদের চরম পরিপন্থী। ইসলামের সংস্কৃতিতে এটিকে শিরক বা বহুঈশ্বরবাদিতার অপসংস্কৃতি বলা হয়।
অথচ সম্রাট আকবরের সময় থেকে আয়োজিত ‘পহেলা বৈশাখ বা ননববর্ষ’ উদযাপন এখনকার মতো ছিল না। তখনকার নববর্ষের উদযাপন ছিলো বাস্তবতার নীরিখে।
বছর শুরুর আগের দিনে, অর্থাৎ চৈত্র মাসের শেষ দিনের মধ্যেই সকলকে সকল প্রকার খাজনা-মাশুল-শুল্ক পরিশোধ করতে হতো।
আর পরের দিন, অর্থাৎ পহেলা বৈশাখে ভূমির মালিকরা, অর্থাৎ জমিদাররা নিজ নিজ অঞ্চলের অধিবাসীদের মিষ্টি দিয়ে আপ্যায়ন করতেন। খাজনা পরিশোধ করা উপলক্ষে বিভিন্ন উৎসবেরও আয়োজন করা হতো। আগে পহেলা বৈশাখের এই দিনে বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ‘হালখাতা’ খোলা হতো।
সেদিন প্রতিষ্ঠানের যাবতীয় দেনা-পাওনার হিসাব আনুষ্ঠানিকভাবে হালনাগাদ করা হতো। অর্থাৎ আগের বছরের হিসাবের পাট চুকিয়ে নতুন হিসাব শুরু করা হতো।
নতুন হিসাবের খাতা খুলে এই হিসাব হালনাগাদ করাকেই বলা হতো হালখাতা। হালখাতার দিনে দোকানিরা ক্রেতাদের মিষ্টি দিয়ে আপ্যায়ন করে থাকেন। এত বছর পরে আজও এই প্রথাটি অনেকাংশে প্রচলিত রয়েছে।
বিশেষ করে গ্রামের দোকানদাররা ক্রেতাদের এখনও পহেলা বৈশাখে মিষ্টি দিয়ে আপ্যায়ন করেন। আধুনিক ধারা প্রবাহ এবং সাংস্কৃতিক রুপান্তর প্রক্রিয়ার প্রভাবে নববর্ষ উদযাপন তার মৌলিকত্ব হারাতে বসেছে। বাংলাদেশ এবং ভারত ছাড়াও অস্ট্রেলিয়া, ইংল্যান্ড, সুইডেনসহ বিশ্বের আরও নানান দেশে পহেলা বৈশাখ উদযাপিত হয়ে থাকে।
অস্ট্রেলিয়ার বিভিন্ন শহরে যেমন: সিডনি, মেলবোর্ন, ক্যানবেরাতে বৈশাখী মেলার মাধ্যমে পহেলা বৈশাখ উদযাপন করা হয়।
বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ নাচ-গান-ফ্যাশন শো-খাবারের মাধ্যমে বাঙালি সংস্কৃতির এ ধারাকে আনন্দময় করে তোলে। অস্ট্রেলিয়ার সিডনিতে সর্ববৃহৎ বৈশাখী মেলা অনুষ্ঠিত হয়।
আগে বার্নউড বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত হলেও ২০০৬ সাল থেকে সিডনি অলিম্পিক পার্কে মেলাটি অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে।
মেলায় বিপুল পরিমাণ লোকের সমাগম ঘটে এবং প্রবাসী বাঙালিদের জন্য এটি একটি আনন্দঘন দিন। ইংল্যান্ডে অবস্থানকারী প্রবাসী বাঙালিরা স্ট্রিট ফেস্টিভ্যাল (পথ উৎসব) পালন করে।
এই উৎসবটি লন্ডনে করা হয়। ইউরোপে অনুষ্ঠিত সর্ববৃহৎ এশিয় উৎসব এটি এবং বাংলাদেশ ও ভারতের পশ্চিমবঙ্গ ছাড়া সর্ববৃহৎ বাঙালি উৎসব। আমাদের দেশে পহেলা বৈশাখের সবচেয়ে বড় উৎসব হয় ঢাকা শহরে।
আর সে উৎসবের প্রাণকেন্দ্র বলা যেতে পারে রমনা বটমূলে আয়োজিত ছায়ানটের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানকে। ছায়ানটের শিল্পীরা এ দিন খুব ভোরবেলা থেকেই সম্মিলিত কণ্ঠে বৈশাখী আগমনী গানের মাধ্যমে নতুন বছরের সূর্যকে স্বাগত জানান। এ উৎসবটিরও ইতিহাস আছে।
বলা হয়ে থাকে, পাকিস্তানি শাসনামলে শাসকরা বাঙালি সংস্কৃতিকে দমিয়ে রাখার চেষ্টা করেছিল। একবার নাকি তারা রবীন্দ্রনাথের কবিতা ও গানের উপরই নিষেধাজ্ঞা জারি করে বসে। অবশ্য এর পিছনে একটি যৌক্তিক কারণও ছিলো বলে ইতিহাসবিদদের মত রয়েছে।
যখন বাঙালি সংস্কৃতির নামে হিন্দুত্ববাদের আগ্রাসন মুসলিম সংস্কৃতিকে ভূলুণ্ঠিত করতে চেয়েছিলো, তখনই বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের ধর্মপ্রাণ মুসলমানেরা এ অপসংস্কৃতির বিরুদ্ধাচারণ করেছিলো।
কারণ, রবীন্দ্রনাথের ‘এসো হে বৈশাখ’ গানটি ছিলো মুসলমানদের একত্ববাদ বিরোধী গান, এখানে সূর্যকে আহবান জানিয়ে তার কাছে মঙ্গল কামনার অর্থ নিহিত রয়েছে, যা মুসলিম জাতির ধর্মীয় বিশ্বাস পরিপন্থী।
এরপর থেকে বাঙালি চেতনায় নববর্ষ উদযাপনের নামে হিন্দুত্ব অপসংস্কৃতির অনুপ্রবেশ ঘটাতেই ১৩৭৫ বঙ্গাব্দে অর্থাৎ ১৯৬৫ সালে রমনা পার্কে ছায়ানট পহেলা বৈশাখ উদযাপনের আয়োজন করে।
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘এসো হে বৈশাখ, এসো এসো’ গানের মধ্যে দিয়ে স্বাগত জানানো হয় বৈশাখকে। সেই ধারা আজও অব্যাহত রয়েছে এবং ১৯৭২ সালে এটিকে জাতীয় উৎসব হিসেবে পালন করার ঘোষণা দেয়া হয়।
প্রকৃতপক্ষে, বাংলার মানুষের মনে বাঙালি জাতীয়তাবাদের ভিত রচনা করেছিলেন শেরেবাংলা এ কে ফজলুল হক। জনমানুষকে বাংলার শেকড়ের সঙ্গে যোগাযোগ করিয়েছেন তিনি।
পহেলা বৈশাখ বাংলা বছরের প্রথম দিন। তিনি এ দিনটির গুরুত্ব ও উৎসবমুখর আবহাওয়া নতুন করে সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছে দিয়েছিলেন। গ্রামবাংলার খেটে খাওয়া সাধারণ কৃষিজীবী মানুষের ভাষা তিনি বুঝতে পেরেছিলেন।
তিনি জানতেন শহুরে মানুষের কাছে সাংস্কৃতিক উৎসবের ছোঁয়া কীভাবে এনে দিতে পারে নতুনের লড়াইয়ের শক্তি। ১৯৫৪ সালের পূর্ববাংলার সাধারণ নির্বাচনে মুসলিম লীগ উৎখাত হয়ে যাওয়ার পর প্রধানমন্ত্রী এ কে ফজলুল হক বাংলা নববর্ষে ছুটি ঘোষণা করেন।
এটি ছিল বাঙালি জাতীয়তাবাদের সুস্পষ্ট ধারণা উপলব্ধি করার ঐতিহাসিক এক ঘোষণা। সে বছর বাঙালি তার নববর্ষ উদযাপন করেছিল ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা নিয়ে, যেখানে প্রকাশ পেয়েছিলো গ্রামীন জনগণের সরল বিশ্বাসের প্রতি অকৃত্রিম শ্রদ্ধা আর ভালোবাসা।
সে আয়োজনের সাথে ছিলো নববর্ষ উদযাপনের প্রকৃত ইতিহাস ও সম্মৃদ্ধি জড়িত। সুতরাং, সুদীর্ঘ পাঁচশত বছরে যে মঙ্গল শোভাযাত্রা, সূর্যোপাসনা ও পান্তা-ইলিস বিলাসিতার মত অপসংস্কৃতির কোন অস্তিত্ব যেখানে ছিলোনা, আজ অধুনা মুসলিম অধ্যুষিত বাংলাদেশে এ ধরণের নববর্ষ উদযাপন সত্যিই বাঙালি চেতনার সমূলে আঘাতের সামিল এবং এটি নববর্ষের উৎপত্তি ও উদযাপন ধারার স্পষ্ট সাংস্কৃতিক রুপান্তর।
আমাদের দেশপ্রেম ও জাতীয়তাবোধ উজ্জীবিত করতে আরো বেশি সচেতন হতে হবে এবং শিশু-কিশোরদের মনে নববর্ষের প্রকৃত ইতিহাস তুলে ধরতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করতে হবে।
লেখক- প্রিন্সিপাল, ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল স্কুল, ঢাকা ও
প্রেসিডেন্ট, বাংলাদেশ স্মার্ট এডুকেশন নেটওয়ার্ক
শিক্ষাবার্তা ডটকম/জামান/১৫/০৪/২০২৪