হবিগঞ্জঃ জেলার সুধিয়াখলা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভবন দশ বছর ঘুরতে না ঘুরতে বিভিন্ন অংশে ফাটল দেখা দিয়েছে। আতংক আছেন স্কুলের ছাত্র/ছাত্রীসহ অভিভাবকরা। এই অবস্থায় স্কুলের মাঠে গাছতলায় ও শহীদ মিনারের পাদদেশে শিক্ষার্থীদের পাঠদান শুরু করেছেন স্কুল কর্তৃপক্ষ।
বুধবার (১৪ নভেম্বর) সকালে সরেজমিনে দেখা যায়, শায়েস্থাগঞ্জ উপজেলার সুধিয়াখলা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভবনে ফাটল দেখা দেওয়ার কারণে শিক্ষার্থীদেরকে স্কুলের মাঠে পাঠদান করাচ্ছেন শিক্ষকরা।
শিক্ষার্থীদের অভিভাবকরা এক অজানা আতংকের মাঝে ছেলে মেয়েকে নিয়ে বিদ্যালয়ে আসছেন। তারা বলছেন, সামনে বার্ষিক পরীক্ষা, এমন অবস্থায় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ছেলে মেয়েকে বিদ্যালয়ে পাঠাচ্ছি। বিষয়টি নিয়ে ইতিমধ্যে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ একটি উচ্চ তদন্ত কমিটি গঠন করেছে।
প্রায় ২মাস আগে স্কুল ভবনের বিভিন্ন অংশে ফাটল দেখা দেয়ায় শিক্ষকরা শিক্ষার্থীদের জীবনের ঝুঁকির কথা চিন্তা করে ভবনের বাহিরে মাঠে পাঠদান শুরু করেছেন। সড়কের পাশে স্কুল মাঠে ধুলাবালি আর রোধে পুড়ে পাঠদান চলছে। স্কুলে বর্তমানে ২৪৭জন শিক্ষার্থী ও ছয়জন শিক্ষক কর্মরত আছেন।
জানা যায়, স্কুলের এক তলা ভবন তৈরি হয় ২০০১-০২ অর্থবছরে। শিক্ষার্থীদের জায়গা সংকুলান না হওয়ায় ২০১১-১২ অর্থ বছরে দ্বিতীয় ও তৃতীয় তলা ভবন নির্মাণ করা হয়। গত আগস্ট মাসে হঠাৎ করে ভবনের পিলারে ও বিভিন্ন অংশে ফাটল দেখাসহ ভবন দেবে যেতে শুরু করে।
এ অবস্থায় শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের মাঝে আতংক দেখা দেয়। শেষশেষ কোন উপায়ান্তর না দেখে স্কুলের বাহিরে গাছতলা ও শহীদ মিনারের পাদদেশে পাঠদান শুরু করে স্কুল কর্তৃপক্ষ।
ইতিমধ্যে প্রাথমিক শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরসহ সংশ্লিষ্টরা সরেজমিন তদন্ত করে মাটি পরীক্ষার জন্য নমুনা সংগ্রহ করেছেন। তাদের প্রতিবেদন পাওয়ার পর পরবর্তী ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
প্রথম শ্রেণীর শিক্ষার্থী রুমেনা আক্তার জানায়, স্কুলে ফাটল দেখার কারণে আমার মা আমাকে স্কুলে নিয়ে এসে ছুটি হওয়ার আগ পর্যন্ত বসে থাকেন। রোদ আর ধুলা বালুর মধ্যে স্কুল মাঠে বসে লেখাপড়া করছি। ঠিকমত লেখতে পারিনা, পড়তে পারিনা। স্কুলে ক্লাসের ভিতরে যেতে ভয় লাগে।
পঞ্চম শ্রেণীর ছাত্র তরিকুল ইসলাম জানায়, সামনে আমাদের সমাপনি পরীক্ষা। স্কুলে এসে ভালভাবে লেখাপড়া করা যায়না। গাড়ীর শব্দ আর ধুলাবালির কারণে লেখাপড়ায় মনোযোগ দেয়া যায়না।
প্রধান শিক্ষক শাহেনা আক্তার জানান, স্কুল ভবন ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ার কারণে শিক্ষার্থীদেরকে মাঠে পাঠদান করানো হচ্ছে। সামনে যেহেতু বার্ষিক পরীক্ষা, সেহেতু ক্লাস বন্ধ করা যাবেনা। ভবনের বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবগত করেছি।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোঃ গোলাম মাওলা বলেন, বিষয়টি নিয়ে আমি স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগের সাথে যোগাযোগ করেছি। এত অল্প দিনের মধ্যে কেন ভবনে ফাটল দেখা দিল বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে। ছাত্র/ছাত্রীদের বার্ষিক পরীক্ষার জন্য আলাদা টিন সেটের একটি ঘর তৈরি করা হচ্ছে। আপাতত সেখানে পরীক্ষা গ্রহণ করা হবে।
শিক্ষাবার্তা ডট কম/এএইচএম/১৫/১১/২০২৩
দেশ বিদেশের শিক্ষা, পড়ালেখা, ক্যারিয়ার সম্পর্কিত সর্বশেষ সংবাদ শিরোনাম, ছবি, ভিডিও প্রতিবেদন সবার আগে দেখতে চোখ রাখুন শিক্ষাবার্তায়
Discover more from শিক্ষাবার্তা ডট কম
Subscribe to get the latest posts sent to your email.