দুই পদে নিয়োগে ১৪ লাখ টাকার ঘুষ বাণিজ্য সভাপতি-সুপারের!

কুমিল্লাঃ জেলার দেবিদ্বার উপজেলার বল্লভপুর ইসলামিয়া দাখিল মাদরাসার সভাপতি ও সুপারের বিরুদ্ধে দুটি পদে প্রায় ১৪ লক্ষ টাকার ঘুষ বাণিজ্যের অভিযোগ পাওয়া গেছে। নিয়োগ পরীক্ষায় অংশ নেওয়া এমন বেশ কয়েকজন ভুক্তভোগী ও অভিভাবক এমন অভিযোগ করেন।

একাধিক নিয়োগ প্রার্থীর অভিযোগ, নিয়োগ পরীক্ষার পূর্বেই ১৪ লাখ টাকার বিনিময়ে দু’জনের নিয়োগ চূড়ান্ত করে মাদরাসা পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও সুপার। এ নিয়ে গত কয়েক দিন ধরে এলাকায় ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তোলপাড় চলছে। তবে অনিয়মের অভিযোগটি অস্বীকার করেছেন মাদরাসার ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ফুল মিয়া ও সুপার মো. গোলাম মোস্তফা।
সরেজমিনে গিয়ে জানা গেছে, চলতি বছরের ১৩ এপ্রিল পত্রিকায় বল্লভপুর ইসলামিয়া দাখিল মাদরাসায় অফিস সহকারি কাম কম্পিউটার অপারেটর ও পরিচ্ছন্নতা কর্মীর পদে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়। এতে দুই পদে মোট ১১জন প্রার্থী আবেদন করেন। এরপর গত ৭ অক্টোবর ডিজির প্রতিনিধির উপস্থিতিতে ওই দুই পদের জন্য লিখিত ও ভাইভা পরীক্ষা হয়। তবে লিখিত ও ভাইভায় বিভিন্ন বিশ^বিদ্যালয় থেকে পাস করা মেধাবীরা অংশ নিলেও তাদের কাউকে উর্ত্তিণ না করে মোটা অংকের ঘুষ নিয়ে সভাপতির ভাগিনার স্ত্রী লাকি আক্তারকে পরিচ্ছন্নতা কর্মী পদে ও এইচএসসি পাস করা অলিউল্লাহ নামে স্থানীয় এক ব্যক্তিকে অফিস সহকারি কাম-কম্পিউটার পদে নিয়োগ দেয় সভাপতির গঠিত নিয়োগ বোর্ড।

নিয়োগ পরীক্ষায় অংশ নেওয়া মাজহারুল ইসলাম অভিযোগ করেন বলেন, নিয়োগ পরীক্ষার পূর্বে মাদরাসার সভাপতি মো. ফুল মিয়া আমাকে তার বাড়িতে ডেকে নিয়ে ৯লক্ষ ঘুষ দাবি করেন। টাকার দিলে তিনি নিয়োগ কনফার্ম করবেন বলে আমাকে জানালে আমি এ প্রস্তাবে রাজী না হয়ে লিখিত ও ভাইভা পরীক্ষায় অংশ নেই। আমরা পরীক্ষায় ভালো করলেও সভাপতি ও সুপার দুই পদের জন্য প্রায় ১৪ লক্ষ টাকা ঘুষ নিয়ে সভাপতির ভাগিনার স্ত্রী ও অলিউল্লাহ নামে একজনকে নিয়োগ দেন। এর আগে ২০২১ সালে আয়া পদে ৬ লক্ষ টাকার নিয়ে এলাকার এক নারীকে নিয়োগ দেওয়ার চেষ্টা করেন সভাপতি ফুল মিয়া। পরে সভাপতি ও মাদরাসার সুপারের দ্বন্ধে তাকে নিয়োগ অন্য এক নারীকে নিয়োগ দেওয়া হয়। পরে এলাকাবাসীর চাপের মুখে ঘুষের ৬ লক্ষ টাকা ফেরত দিতে বাধ্য হোন সভাপতি।

অপর এক নিয়োগ প্রার্থী সফিউল্লাহ মোল্লা বলেন, নিয়োগ পরীক্ষায় অনেক অনিয়ম দুর্নীতি হয়েছে। আমি গত আড়াই বছর ধরে এ মাদরাসাতেই শিক্ষকতা করেছি। যাকে নিয়োগ দেয়া হয়েছে সে এ পদে ৬ বার পরীক্ষা দিলেও পাস করতে পারবে না, কারণ ২০০৮ সালে তাকে আমরা পরীক্ষা কেন্দ্রে সহযোগিতা করে পাশ করিয়েছি। তাকেই ঘুষ নিয়ে নিয়োগ দেওয়া হলো। আমার কাছে ঘুষ চেয়েছে কিন্তু আমি দেইনি।

এ বিষয়ে অফিস সহকারি পদে নিয়োগ প্রাপ্ত অলিউল্লাহ বলেন, নিয়োগ বোর্ড আমাকে কিভাবে নিয়োগ দিয়েছে এটা তারাই ভালো জানে আমি এ বিষয়ে কথা বলতে ইচ্ছুক নই। মাদরাসার সুপার গোলাম মোস্তফা বলেন, এ অভিযোগের কোন সত্যতা নেই।

এ বিষয়ে মাদরাসার ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ফুল মিয়া মাস্টার বলেন, নিয়োগ পরীক্ষায় কোন অনিয়ম বা ঘুষ বাণিজ্য হয়নি। নিয়ম মেনে নিয়োগ পরীক্ষাসহ যাবতীয় কাজ সম্পন্ন হয়েছে। ঘুষ নিয়ে অযোগ্যদের নিয়োগের অভিযোগটি সঠিক নয়। এ বিষয়ে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার কাজী আবদুল ওয়াহিদ মো. সালেহের সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে তার ফোন নম্বর বন্ধ পাওয়া যায়।

শিক্ষাবার্তা ডট কম/এএইচএম/২৯/১০/২০২৩    

দেশ বিদেশের শিক্ষা, পড়ালেখা, ক্যারিয়ার সম্পর্কিত সর্বশেষ সংবাদ শিরোনাম, ছবি, ভিডিও প্রতিবেদন সবার আগে দেখতে চোখ রাখুন শিক্ষাবার্তায়


Discover more from শিক্ষাবার্তা ডট কম

Subscribe to get the latest posts sent to your email.