নেত্রকোনাঃ জেলার মোহনগঞ্জ উপজেলার রানাহিজল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নবনির্মিত ভবনে ফাটল দেখা দিয়েছে। এতে শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ অভিভাবকেরা দুর্ঘটনার আশঙ্কায় আতঙ্কের মধ্যে রয়েছেন। ওই বিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা জানিয়েছেন, ভাবনের সামনের অংশে অনেক বড় বড় ফাটল দেখা দিয়েছে। যেকোনো সময় তা ভেঙে পড়তে পারে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, বিদ্যালয়ের নবনির্মিত ওই ভবনের সামনের বারান্দার অংশে বিশাল ফাটল। এক পাশ থেকে অন্য পাশের মানুষ দেখা যাচ্ছে। যেকোনো সময় মূল ভবন থেকে খুলে পড়তে পারে। রেলিংয়ের এক পাশ খুলে পড়ে গেছে। ভবনের দেয়ালের রং উঠে গেছে। এ ছাড়া দেয়ালের আস্তরণও অমসৃণ। একপলক দেখেই বোঝা যায়, এ যেন দায়সারা যেনতেন কাজ।
স্থানীয় সরকার ও প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) মোহনগঞ্জ উপজেলা কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলা এলজিইডির তত্ত্বাবধানে ২০১৮ সালে এই বিদ্যালয়ের নতুন ভবনের নির্মাণকাজ শুরু হয়। ৭৯ লাখ ৩৯ হাজার ৭৬৭ টাকা চুক্তিমূল্যে এ কাজটি পায় কিশোরগঞ্জের মেসার্স রাজিব এন্টারপ্রাইজ নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। এ প্রতিষ্ঠানের মালিক শাহ আলম মাহবুব রাজিব। এক বছরের কাজ শেষ হয় পাঁচ বছরে। চলিত বছরের জুনে নির্মাণকাজ শেষ হয়। পরের মাসে হস্তান্তর করা হয়। এখন শুধু উদ্বোধনের অপেক্ষা।
ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মেহেরুন্নেছা আক্তার বলেন, ‘নতুন ভবনের কাজ যেনতেনভাবে করা হয়েছে। সামনের অংশে দুই পিলারের মধ্যে বিশাল ফাটল দেখা দিয়েছে। যেকোনো সময় ভেঙে পড়বে এটা। ৩-৪ মাস আগে কাজ শেষ হয়েছে। এখনো উদ্বোধন হয়নি এরই মধ্যে রেলিং ভেঙে গেছে। দেয়ালের রং উঠে গেছে। ভবনের খুবই বাজে অবস্থা। এই অবস্থায় সেখানে পাঠদান করা সম্ভব নয়। শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা কেউ ভয়ে সেখানে যাবে না। তাই আমরা পুরোনো ভবনে পাঠদান চালিয়ে যাচ্ছি।’
বিদ্যালয়ের জমিদাতা, সাবেক সভাপতি ও ঠিকাদারের শ্বশুর মতিউর রহমান বলেন, ‘কাজে ঠিকাদারের কোনো গাফিলতি ছিল না। ঠিকাদার সামনের পিলারগুলো রড দিয়ে দেওয়ার কথা বলেছিল। কিন্তু এলজিইডি প্রকৌশলীই সেগুলো রডের পরিবর্তে ইট দিয়ে করতে বলেছিল।’
ঠিকাদার শাহ আলম মাহবুব রাজিব বলেন, ‘আগের প্রাক্কলন হওয়ায় বর্তমানে জিনিসপত্রের দাম বেড়ে গেছে। এতে ভবনের কাজ করতে গিয়ে আমার ১০ লাখ টাকা লোকসান হয়েছে। বিদ্যালয়ের পাশে পানি থাকায় বছরে তিন মাসের বেশি কাজ করা যায় না।’
সদ্য যোগদান করা উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা আবুল হোসেন বলেন, এ বিষয়ে খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এলজিইডির উপজেলা প্রকৌশলী সোয়াইব ইমরান বলেন, ‘ঠিকাদারের কাজে তেমন গাফিলতি নেই। ভবন নির্মাণের ডিজাইন পরিকল্পনায় ভুল ছিল। আগের প্রকৌশলীরা ভুলটা করে গেছেন। দ্রুত ফাটলগুলো মেরামত করা হবে।’
শিক্ষাবার্তা ডট কম/এএইচএম/২৬/১০/২০২৩
দেশ বিদেশের শিক্ষা, পড়ালেখা, ক্যারিয়ার সম্পর্কিত সর্বশেষ সংবাদ শিরোনাম, ছবি, ভিডিও প্রতিবেদন সবার আগে দেখতে চোখ রাখুন শিক্ষাবার্তায়
Discover more from শিক্ষাবার্তা ডট কম
Subscribe to get the latest posts sent to your email.