ছাত্রলীগের নতুন ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয়ের প্রোগ্রামে না যাওয়ায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) সূর্যসেন হলে শিক্ষার্থীদের ওপর ব্যাপক নির্যাতন ও তাদের রুমে তালা দিয়েছে তার অনুসারীরা। মঙ্গলবার রাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সূর্যসেন হলে হল শাখা ছাত্রলীগের উপ-দপ্তর সম্পাদকের নির্দেশে এমন ঘটনা ঘটেছে।
ভারপ্রাপ্ত সভাপতি জয় হওয়ার পর সে হলে জয়ের অনুসারী একটি গ্রুপ তৈরি করে। এ গ্রুপের নেতৃত্ব সে নিজেই দেয়, এবং সে হল শাখা ছাত্রলীগের শীর্ষ পদ প্রত্যাশী।
জানা গেছে, মঙ্গলবার ১৭ সেপ্টেম্বর শিক্ষা দিবসের প্রোগ্রাম উপলক্ষে সকাল ৬টায় প্রথম বর্ষের তার দখলে (বিশেষভাবে দখলকৃত) থাকা সকল শিক্ষার্থীদের অতিথি কক্ষে (গেস্টরুম) থাকার নির্দেশ দেয়। সকালে শিক্ষার্থীরা তাদের ক্লাস-পরীক্ষায় বাধা হবে চিন্তা করে অতিথি কক্ষে আসেনি। শিক্ষার্থীরা না আসায় সাগর প্রটোকল নিয়ে প্রোগ্রামে যেতে পারেনি। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে সে তৃতীয় বর্ষের উইমেন অ্যান্ড জেন্ডার স্টাডিজ বিভাগের সিফাত উল্লাহ ও একই বর্ষের ইংলিশ ফর স্পিকার আদার ল্যাংগুয়েজ (ESOL) বিভাগের মাহমুদ অর্পনকে জুনিয়রদের ব্যাপারে ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দেয়।
তারপর রাতে সিফাত ও অর্পন দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী আরিফুল ইসলাম, মশিউর রহমান, সোহান রহমান, তরিকুল ইসলামকে নির্দেশ দিলে তারা হলের ২২৬ নম্বর রুমে তালা লাগিয়ে দেয়। এ রুমের শিক্ষার্থীদের ২০১/ক রুমে যেতে বলেন। শিক্ষার্থীরা এ রুমে গেলে তখন উপরে উল্লিখিত দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রলীগ কর্মীরা বিভিন্নভাবে জেরা করতে থাকেন। এক পর্যায়ে শিক্ষার্থীদের ওপর স্ট্যাম্প, লাঠি দিয়ে মারধর করে।
শিক্ষার্থীদের ওপর নির্যাতনের বিষয়ে জিজ্ঞাসা করলে দ্বিতীয় বর্ষের মশিউর ও আরিফ বলেন, ‘আমাদের জুনিয়রদের সাথে আমরা যা ইচ্ছা করব আপনারা জানার কে?’
মশিউর আরো বলেন, ‘আমরা সিনিয়র ভাই আমরা তালা মারতেই পারি। এমন তালা সিনিয়ররা আমাদের বহুত মারছে। এটা বিশ্ববিদ্যালয়ের কালচার।’
এ বিষয়ে গ্রুপের প্রধান ইমরান সাগর বলেন, আমি বিষয়টি জানি না। জুনিয়ররা এসব করেছে। আমি তাদের বিষয়ে ব্যবস্থা নেব।
মুঠোফোনে এ বিষয়ে জানতে ছাত্রলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি জয় বলেন, ‘আমি এ ঘটনা মাত্র জেনেছি। খোঁজ নিচ্ছি।’
এ বিষয়ে হল সংসদের সাধারণ সম্পাদক (জিএস) সিয়াম রহমান বলেন, ‘এটা দুঃখজনক ঘটনা। আমরা হল সংসদের পক্ষ থেকে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে হল প্রশাসনের নিকট লিখিত দরখাস্ত করব এবং হল প্রশাসনকে অপরাধীদের শাস্তি দেয়ার বিষয়ে চাপ প্রয়োগ করব যেন সামনে এ রকম ঘটনা আর না ঘটে।’
তবে এ ঘটনার বিষয়ে জানতে হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক মো. মকবুল হোসেন ভূঁইয়াকে কয়েকবার ফোন দেয়া হলেও রিসিভ করেননি।সুত্র বিডি জার্নাল
Discover more from শিক্ষাবার্তা ডট কম
Subscribe to get the latest posts sent to your email.