হঠাৎ করেই শেষ মুহূর্তে এসে আটকে গেছে বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের এমপিওভুক্তির প্রজ্ঞাপন। এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ঠরা বলছেন, শেষপর্যায়ে এসে নানা ধরণের জটিলতা শুরু হয়েছে। সব প্রস্তুতি শেষ হলেও গত বছর পাস হওয়া এমপিও নীতিমালা-২০১৮ নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। ফলে দীর্ঘ ৯ বছর পর দেড় হাজারের বেশি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের এমপিওভুক্তির প্রজ্ঞাপন জারি নিয়ে নতুন জটিলতা তৈরি হয়েছে।
সংশ্লিষ্টরা অভিযোগ তুলেছেন, নীতিমালায় অসংগতির কারণে অনেক যোগ্য প্রতিষ্ঠান এমপিও থেকে বঞ্চিত হবে। এছাড়া নীতিমালা সবক্ষেত্রে কার্যকর হলে বিদ্যমান অনেক প্রতিষ্ঠানের এমপিও বাতিল হয়ে যাবে। নীতিমালার এই অসংগতি দূর করে এমপিও দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন বিভিন্ন সংগঠনের নেতারা। ফলে শিক্ষা মন্ত্রণালয় সব গুছিয়ে আনলেও প্রজ্ঞাপন জারি অনিশ্চিতায় পড়ে গেছে।
এ বিষয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (মাধ্যমিক-২) ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বাছাই কমিটির আহ্বায়ক জাবেদ আহমেদ গণমাধ্যমকে বলেছেন, ‘কিছু টাইপিং ভুল ও অসংগতি রয়েছে। তবে এটা বড় কোনো সমস্যা নয়। বিষয়গুলো সমাধানে মন্ত্রণালয় কাজ করছে।’
মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, গত ১৯ আগস্ট প্রাধনমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে এমপিওভুক্তির নথি পাঠানো হয়। তবে শিক্ষক সংগঠন ও সংশ্লিষ্টদের অভিযোগে এর কার্যক্রম জটিলতায় পড়ে গেছে। যোগ্য প্রতিষ্ঠান বঞ্চিত হলে বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হতে পারে বলে অনেকে আশঙ্কা করছেন। স্থানীয় জনপ্রিনিধি ও শিক্ষক-কর্মচারীরা অসন্তুষ্ট হতে পারেন। ফলে আন্দোলন ও আইনী প্যাঁচে পড়ার সম্ভাবনাও রয়েছে।
নন-এমপিও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক নেতারা অভিযোগ করেছেন, নীতিমালায় গ্রেডিং সিস্টেমে বৈষম্য রয়েছে। কোন স্তরে কতজন শিক্ষার্থী থাকতে হবে, কতজনকে পাস করতে হবে তা নিয়েও অসংগতি রয়েছে। এ কারণে যোগ্য প্রতিষ্ঠানের তালিকা থেকে অনেক প্রতিষ্ঠান বাদ পড়তে পারে বলে তাদের আশঙ্কা।
নন-এমপিও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারী ফেডারেশনের সভাপতি গোলাম মাহমুদুন্নবী ডলার গণমাধ্যমকে বলেছেন, ‘নীতিমালার বৈষম্য ও অসংগতি থাকার কথা আগেই জানানো হয়েছে। তা সংশোধন করে সঠিক নীতিমালার আলোকে এমপিও দেওয়ার দাবি জানান তিনি।’
প্রসঙ্গত, বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারীদের দীর্ঘদিনের আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তি-২০১৮ নীতিমালা জারি করে সরকার। এর আলোকে দুটি কমিটি করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। এরপর বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে চূড়ান্ত তালিকা করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর সম্মতি পেলেই এ ব্যাপারে প্রজ্ঞাপন জারি করা হবে।
Discover more from শিক্ষাবার্তা ডট কম
Subscribe to get the latest posts sent to your email.