নারায়ণগঞ্জে ভয়ংকর এক স্কুলশিক্ষক

কখনো পরীক্ষায় কম নম্বর দেওয়া বা ফেল করিয়ে দেওয়ার ভয় দেখানো। আবার কখনো কম্পিউটার গ্রাফিকসে আপত্তিকর ছবি তৈরি করে তা দেখিয়ে ছাত্রীদের ব্ল্যাকমেল। এভাবে গত পাঁচ বছরে পঞ্চম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির অন্তত ২০ শিক্ষার্থীকে ধর্ষণ করেছেন এক শিক্ষক। ফাঁদে ফেলে শিক্ষার্থীর মাকেও ধর্ষণ করেছেন। সেগুলো আবার মুঠোফোনে ভিডিও করে রেখেছেন। কখনো মোটা টাকার দাবিও করেছেন।

নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে এক শিক্ষককে গ্রেপ্তারের পর তাঁর সম্পর্কে এমন ভয়ংকর তথ্য জানিয়েছে র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‍্যাব)। ওই শিক্ষকের নাম আরিফুল ইসলাম সরকার ওরফে আশরাফুল (৩০)। তিনি সিদ্ধিরগঞ্জের মিজমিজি এলাকার অক্সফোর্ড হাইস্কুলের সহকারী শিক্ষক। বাড়ি মাদারীপুর জেলা সদরের শিলখাড়া এলাকায়।

গতকাল বৃহস্পতিবার আরিফুলকে গ্রেপ্তারের পর র‍্যাব তাঁর মুঠোফোন ও ল্যাপটপ থেকে ধর্ষণের ভিডিওসহ আপত্তিকর ছবি পাওয়া গেছে বলে জানায়। আরিফুলকে মদদ দেওয়ার অভিযোগে বিদ্যালয়টির প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান শিক্ষক জুলফিকার ওরফে রফিকুল ইসলামকেও (৫৫) গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

স্থানীয় লোকজন জানান, দুই দিন আগে বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির এক শিক্ষার্থীকে যৌন সম্পর্কের প্রস্তাব দেন আরিফুল। ওই শিক্ষার্থী বিষয়টি জানায় তার মা–বাবাকে। গতকাল এলাকাবাসী শিক্ষক আরিফুল ও রফিকুলকে পিটুনি দেন। তাঁদের শাস্তি দাবিতে অক্সফোর্ড হাইস্কুল ঘিরে সকাল থেকে বিক্ষোভ করেন। পরে এলাকাবাসী বিষয়টি র‌্যাব-১১ কে জানান। পরে র‌্যাব কর্মকর্তারা আরিফুলের মুঠোফোন সার্চ করে একাধিক শিক্ষার্থীর সঙ্গে আপত্তিকর ছবি ও ভিডিও দেখতে পান।

র‌্যাব-১১–এর কর্মকর্তা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আলেপ উদ্দিন বলেন, বিভিন্ন কৌশলে ফাঁদে ফেলে ২০১৪ সাল থেকে চলতি জুন মাস পর্যন্ত অক্সফোর্ড স্কুল এবং বাইরের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীসহ মোট ২০ জনকে ধর্ষণের তথ্যপ্রমাণ পাওয়া গেছে। এসব শিক্ষার্থী পঞ্চম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির। ওই শিক্ষকের মুঠোফোন, ল্যাপটপসহ বিভিন্ন ডিভাইস জব্দ করে ছাত্রী ধর্ষণ ও আপত্তিকর ছবি এবং ভিডিও পাওয়া গেছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে শিক্ষক আরিফুল ২০ ছাত্রীকে ধর্ষণের কথা স্বীকার করেছেন। তাঁকে মদদ দেওয়ার অভিযোগে প্রধান শিক্ষককেও গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ওসি শাহীন পারভেজ জানান, স্কুলের কাছাকাছি বুকস গার্ডেন নামে একটি বাড়িতে ছাত্রীদের কোচিং করাতেন আরিফুল। এ ঘটনায় মামলা দায়েরের প্রক্রিয়া চলছে।


Discover more from শিক্ষাবার্তা ডট কম

Subscribe to get the latest posts sent to your email.