এইমাত্র পাওয়া

পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়: শিক্ষা কার্যক্রমে নেই শিক্ষক

দেশের বিভিন্ন সরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় তিন হাজার শিক্ষকই আছেন শিক্ষা কার্যক্রমের বাইরে। এরা ৫ ধরনের ছুটিতে আছেন। আরও অন্তত ৪ হাজার শিক্ষক বিভিন্ন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে চাকরি করছেন।

নিজের পূর্ণকালীন চাকরির পাশাপাশি তাদের কেউ একাধিক খণ্ডকালীন চাকরিতে নিয়োজিত।

বিশ্ববিদ্যালয়ের বাইরে পূর্ণকালীন চাকরির ঘটনাও আছে। এছাড়া এনজিও, ব্যবসা, বিদেশি প্রতিষ্ঠানের পরামর্শক, সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ের গবেষণা, শেয়ার ব্যবসাসহ নানা প্রতিষ্ঠানে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন অনেকেই।

সরকারের অর্থে পরিচালিত বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের এমন মানসিকতায় সার্বিকভাবে উচ্চশিক্ষা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, একাধিক পূর্ণকালীন আর খণ্ডকালীন চাকরির কারণে তারা কোথাও ঠিকমতো সেবা দিতে পারছেন না। ফলে তারা যেমন নিজেরা ব্যক্তিগত অধ্যয়নে পর্যাপ্ত সময় পাচ্ছেন না; তেমনি শিক্ষার্থীদেরও যথাযথভাবে শেখাচ্ছেন না।

ছুটির কারণে বেশিরভাগ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সংকটে পড়ে। যদিও ঢাকা, জাহাঙ্গীরনগর, চট্টগ্রাম ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষা ছুটির বিপরীতে শিক্ষক নিয়োগের বিধান আছে। কিন্তু বাকিগুলো সংকট নিয়েই খুঁড়িয়ে চলে। যার শিকার হয় শিক্ষার্থীরা।

বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) তথ্যানুযায়ী, দেশে বর্তমানে সরকারের অর্থে পরিচালিত বিশ্ববিদ্যালয় আছে ৪৫টি। এর মধ্যে ৩৭টি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের ছুটিসংক্রান্ত তথ্য সম্প্রতি প্রকাশ করেছে সংস্থাটি। সে অনুযায়ী ২ হাজার ৯৪০ শিক্ষক অন্তত ৫ ধরনের ছুটিতে আছেন।

এসব শিক্ষকের মধ্যে ২ হাজার ১০১ জন আছেন শিক্ষা ছুটিতে। প্রেষণ বা লিয়েন নিয়ে অন্য প্রতিষ্ঠানে চাকরি করছেন ৮৪ জন, বিনা বেতনে ছুটিতে আছেন ৫৮ জন, ছুটি শেষ হওয়ার পরও অননুমোদিতভাবে বিদেশে অবস্থান করছেন ১৭ জন এবং খণ্ডকালীন বা চুক্তিভিত্তিক নিয়োগে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে চাকরি করছেন ৬৮০ জন।

এছাড়া বিভিন্ন সূত্র জানিয়েছে, সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের মধ্যে এনজিও ব্যবসা, বিদেশি সংস্থায় পরামর্শকসহ বিভিন্ন বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে খণ্ডকালীন কাজ করছেন আরও ৫ শতাধিক।

সব মিলিয়ে ৩৭টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় ৩ হাজার শিক্ষক বিচ্ছিন্ন আছেন পাঠদান কার্যক্রম থেকে। বাকি ৮ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকসংক্রান্ত তথ্য পাওয়া যায়নি।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে (ইউজিসি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. কাজী শহীদুল্লাহ যুগান্তরকে বলেন, এটা ঠিক যে অনেক শিক্ষক আছেন যারা বাইরে বিভিন্ন ধরনের চাকরি করেন। কেউ কেউ গবেষণাও করেন। সার্বিকভাবে বৃহত্তর জাতীয় স্বার্থে একজন প্রাজ্ঞ শিক্ষকের কাছ থেকে এ ধরনের সেবা নেয়ার প্রয়োজনীয়তা থাকতে পারে অন্য প্রতিষ্ঠানের।

সেজন্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলো সুযোগও রেখেছে। কিন্তু এ কারণে যদি শিক্ষার্থীরা বঞ্চিত হয় বা শিক্ষকের মূল দায়িত্ব পালনে বিঘ্ন ঘটে তবে সেটা কাম্য নয়। তিনি বলেন, আমার জানামতে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সম্প্রতি এক্ষেত্রে কঠোর হয়েছে। বাকিদের কাছ থেকেও আমরা কঠোরতা আশা করি।

পাশাপাশি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো যদি স্থায়ী শিক্ষক নিয়োগ করে তাহলে এ সমস্যা কেটে যেতে পারে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এ সাবেক ডিন ও সিন্ডিকেট সদস্য আরও বলেন, যারা বাইরে ক্লাস নেন বা খণ্ডকালীন চাকরি করেন তাদের মধ্যে সবাই দায়িত্বহীন নন, বরং অনেকেই দায়িত্বশীল।

নিজ প্রতিষ্ঠানেও ঠিকমতো ক্লাস নেন এ ধরনের শিক্ষকদের অনেকে। আবার কেউ কেউ নিজের ক্লাসে শিক্ষার্থীদের বসিয়ে রেখে শিক্ষক লাউঞ্জে আড্ডা মেরে সময় কাটিয়ে দেন- এমন ঘটনাও আছে। সুতরাং, ব্যক্তির দায়িত্বশীলতার ওপর সবকিছু নির্ভর করছে।

সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন- পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষার্থীদের সেবাবঞ্চিত হওয়ার আরেকটি কারণ হচ্ছে, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকের খণ্ডকালীন বা পূর্ণকালীন চাকরি। বর্তমানে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাস নেয়ার বিষয়টি সবচেয়ে রমরমা।

সাম্প্রতিক সময়ে ঢাকার বাইরে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় গড়ে উঠেছে। ওইসব প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকের চাহিদা পূরণ হয়ে থাকে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় থেকেই। এ সুযোগের অপব্যবহার করে থাকেন অনেকে।

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি জানান, তাদের অনেক শিক্ষক সপ্তাহের ৫ দিনই পড়ে থাকেন ঢাকায়, যারা বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাস নেন।

এ কারণে ইবির শিক্ষার্থীরা ক্লাসবঞ্চিত হচ্ছেন। আবার অনেকে দায়সারাভাবে ক্লাস নিয়ে বেরিয়ে পড়েন ‘বাণিজ্যে’। সারা দিন শিক্ষার্থীরা আর তাদের নাগাল পায় না।

ইউজিসির সর্বশেষ বার্ষিক প্রতিবেদন অনুযায়ী, ৯০টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ৪ হাজার ৭৩৩ শিক্ষক খণ্ডকালীন চাকরি করছেন। তাদের মধ্যে ১ হাজার ৬০৬ জনই অধ্যাপক।

এছাড়া সহযোগী অধ্যাপক ৭৫৮ জন, ৯১৯ জন সহকারী অধ্যাপক এবং ১ হাজার ৪৫০ জন প্রভাষক। দেশে বর্তমানে ১০৫টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আছে। ইউজিসির প্রতিবেদন তৈরিকালে বাকি ১৫টির একাডেমিক কার্যক্রম চালু হয়নি।

এ ব্যাপারে খোদ ইউজিসি চেয়ারম্যান বলেন, বেশিরভাগ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকের ইস্যুতে ‘হায়ার অ্যান্ড ফায়ার’ তত্ত্বে বিশ্বাসী। তারা সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শিক্ষক নেন।

বিপরীত দিকে নিজেদের স্থায়ী শিক্ষকের প্যানেল ভারি করছেন না। এতে একদিকে সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় কম-বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। অপরদিকে সংশ্লিষ্ট বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।

স্থায়ী শিক্ষক যে দরদ দিয়ে পড়াবেন এবং প্রতিষ্ঠানের উত্তরোত্তর সমৃদ্ধি চাইবেন সেটা ভাড়াটে শিক্ষক না-ও চাইতে পারেন। ওখানে তার ক্যারিয়ার নেই।

তাই চাকরি বিধিমালা করে ভাড়া করা শিক্ষককে দেয়া অর্থেই বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় স্থায়ী শিক্ষক নিয়োগ করতে পারে। এতে তাদেরই লাভ বেশি।

সংশ্লিষ্টরা জানান, খণ্ডকালীন শিক্ষকের বেশিরভাগই বিভিন্ন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ভাড়া করা। এ বিষয়টি বিভিন্ন বক্তৃতায় খোদ ইউজিসি চেয়ারম্যান একাধিকবার উল্লেখ করেছেন।

পাশাপাশি তিনি পূর্ণকালীন শিক্ষক নিয়োগের জন্য বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে তাগিদ দিয়ে আসছেন। অপরদিকে জুনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট অধিবেশনে এক সিনেটরের প্রশ্নের উত্তরেও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকদের চাকরি করার তথ্য উঠে এসেছে।

ওই সিনেটরের প্রশ্নের উত্তরে কর্তৃপক্ষ বলেছে যে, ১৬ শিক্ষক দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করছেন। কিন্তু বাস্তবে এ সংখ্যা অনেক বেশি।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রোভিসি অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সামাদ বলেন, আসলে আমাদের কতজন শিক্ষক বর্তমানে অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ে খণ্ডকালীন বা পূর্ণকালীন চাকরি করছেন সেই তথ্য হালনাগাদ নেই।

এ ব্যাপারে আমরা কোনো তদারকি ব্যবস্থা গড়ে তুলতে পারিনি। তবে এ ব্যাপারে বিধান আছে। একজন শিক্ষক সর্বোচ্চ দুটি বিশ্ববিদ্যালয়ে খণ্ডকালীন সেবা দিতে পারবেন।

এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, স্বচ্ছতা প্রতিষ্ঠায় আমাদের নৈতিকতা ও বিধিবিধানের সমন্বয় দরকার। এর সঙ্গে সবার মতামতের প্রতিফলন ঘটলে শিক্ষক-শিক্ষার্থী সবাই উপকৃত হতে পারে।

অভিযোগ আছে, ক্লাস ফাঁকি দেয়া শিক্ষকদের অনৈতিক কর্মকাণ্ড এবং অবৈধভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ে অনুপস্থিত থাকার কাজে পরোক্ষভাবে উৎসাহিত করে থাকে সংশ্লিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

শিক্ষক রাজনীতি এবং বিভিন্ন নির্বাচনে জয়লাভের আশায় সংশ্লিষ্ট প্রশাসন একচেটিয়াভাবে এ অন্যায় কাজকে সমর্থন দিয়ে থাকে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেটে খণ্ডকালীন চাকরিকারীদের উল্লিখিত তথ্য (বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করেন ১৬ জন) তুলে ধরাই এর একটি প্রমাণ বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।

তারা আরও বলেন, এ জন্যই ২০০৭ সালের আগস্টে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সংঘটিত ঘটনার পর গঠিত বিচারপতি (অব.) হাবিবুর রহমানের তদন্ত কমিশন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের জন্য ‘আচরণবিধি’ প্রণয়নের সুপারিশ করে। কিন্তু সেই সুপারিশও আজ পর্যন্ত প্রণীত হয়নি।

বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ানোর বা অন্য খণ্ডকালীন চাকরি ও গবেষণার সুযোগ প্রায় বিশ্ববিদ্যালয়ই রেখেছে। সেটি হচ্ছে- এ ধরনের চাকরি করলে নিজ প্রতিষ্ঠানকে বাড়তি আয়ের একটি অংশ সার্ভিস চার্জ বা ওভার হেড চার্জ হিসেবে দিতে হবে শিক্ষককে।

কিন্তু সেই অর্থ যাতে জমা দিতে না হয় সেজন্যই বেশিরভাগ শিক্ষক নিজ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অনুমতিটা পর্যন্ত নেন না। ফলে একদিকে বিশ্ববিদ্যালয় ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বাড়তি আয় থেকে, অন্যদিকে শিক্ষকের ফাঁকিবাজির শিকার হচ্ছে শিক্ষার্থীরা।

জানা গেছে, উল্লিখিত ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে প্রায় এক দশক আগে উচ্চশিক্ষা মানোন্নয়ন প্রকল্প (হেকেপ) গ্রহণকালে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে খণ্ডকালীন চাকরি করা পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের ব্যাপারে একটি ডাটাবেস তৈরির কথা ছিল।

তাতে একজন শিক্ষক কতটি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াচ্ছেন সেই তথ্য বের করার কথা ছিল। কিন্তু রহস্যজনক কারণে আজ পর্যন্ত সেই কাক্সিক্ষত সফটওয়্যারই তৈরি হয়নি।

এ ব্যাপারে হেকেপ প্রকল্প বাস্তবায়নকারী সংস্থা ইউজিসির চেয়ারম্যান অধ্যাপক কাজী শহীদুল্লাহ বলেন, আসলে কয়েক মাস আগে আমি এ পদে যোগদান করেছি।

তাই কেন সফটওয়্যারটি তৈরি হয়নি তা আমার জানা নেই। তবে এ উদ্যোগটি ভালো ছিল। সুযোগ থাকলে আমরা আবার পদক্ষেপ নেব।

শিক্ষাছুটি ও পার্ট টাইম চাকরির নীতি : বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের বিদেশে উচ্চশিক্ষাকে সবসময় উৎসাহিত করা হয়। এজন্য সরকার বিশেষ বরাদ্দও দিয়ে আসছে।

বিদেশে গমনকারী শিক্ষকরা বৈতনিক, অবৈতনিকসহ বিভিন্নভাবে সর্বোচ্চ ৪ বছর পর্যন্ত ছুটি নিতে পারেন। এ সময়ে কারও ডিগ্রি বা গবেষণা শেষ না হলে আরও ২ বছরের অবৈতনিক ছুটি দেয়া হয়।

এ ধরনের ছুটি ভোগের পর কেউ যদি পদত্যাগ করতে চান তাহলে তাকে ৪ বছর নেয়া অর্থ ফেরত দিতে হয়, নতুবা তাকে সমপরিমাণ সময় চাকরি করার পর অব্যাহতি নিতে হবে।

সংশ্লিষ্টরা জানান, যেহেতু নিয়মানুযায়ী শিক্ষকরা সর্বোচ্চ ৪ বছর পর্যন্ত শিক্ষাছুটি নিতে পারেন এবং এ সময়ে বিশ্ববিদ্যালয় তাদের বেতন-ভাতা সবই পরিশোধ করে, তাই সংশ্লিষ্ট শিক্ষকরা আইনের এ ফাঁককে কাজে লাগিয়ে ছুটিতে গিয়ে অনেকে বাইরে আয়-উপার্জন করেন।

আবার বিশ্ববিদ্যালয় থেকেও টাকা উত্তোলন করেন। এরপর বিদেশে গমনকারীদের অনেকে স্থায়ীভাবে আবাস গড়ে সেখানেই হারিয়ে যান।
সূত্রঃ যুগান্তর


Discover more from শিক্ষাবার্তা ডট কম

Subscribe to get the latest posts sent to your email.