অধ্যক্ষ সেলিম ভুইঁয়াঃ ইএফটি বলতে বুঝায় ইলেক্ট্রনিক ফান্ড ট্রান্সফার ইএফটি( Electronic Fund Transfer)। ইএফটি’র মাধ্যমে ওয়্যার পদ্ধতিতে কোন কর্মচারীর হিসাবে বেতন ভাতাদি প্রেরণ করা যায়।
কোন রকম ব্যাংক চেক বা কাগজী এ্যাডভাইজ ব্যাংকে প্রেরণ করা লাগবে না। এটি একটি অত্যাধুনিক মাধ্যম যার মাধ্যমে খুব সহজেই গ্রাহকের একাউন্ট ক্রেডিট করা যায়। মোট কথা এক একাউন্ট হতে অন্য একাউন্টে অর্থ ট্রান্সফারকেই EFT বলে।
মূলত, ইএফটি (বৈদ্যুতিন তহবিল স্থানান্তর) এক অ্যাকাউন্ট থেকে অন্য অ্যাকাউন্টে অর্থ স্থানান্তর করতে ব্যবহৃত হয়। লেনদেনটি বৈদ্যুতিকভাবে সম্পন্ন হয় এবং দুটি অ্যাকাউন্ট একই আর্থিক প্রতিষ্ঠান বা বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠানে থাকতে পারে। তবে, “EFT” শব্দটি নির্দিষ্ট ধরণের অর্থ প্রদানের উল্লেখ করে না। এটি আসলে একটি সংক্ষিপ্ত শব্দ যা তারের স্থানান্তর এবং সহ বিস্তৃত ইলেকট্রনিক পেমেন্টগুলির একটি।বর্তমানে শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন ভাতাদি ইএফটি’র মাধ্যমে প্রদান করা হচ্ছে।
সকল কর্মকর্তা অনলাইনে আইবাস++ এর মাধ্যমে বেতন বিল সাবমিট করে থাকেন, হিসাবরক্ষণ অফিস কর্তৃক EFT Generate করার পর বাংলাদেশ ব্যাংক ২-৩ কর্মদিবসের মধ্যে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার ব্যাংক একাউন্ট দাখিলকৃত বিলের সমপরিমাণ অর্থ ক্রেডিট করে দেয়। এতে করে কাগজী পদ্ধতির ব্যয় সংকোচন হচ্ছে এবং ব্যাংকে ম্যানুয়ালি অর্থ বা বিল ট্রান্সফার চার্জ লাগছে না। বাংলাদেশের যে কোন শাখায় একাউন্ট থাক না কেন, খুব সহজেই চার্জ বিহীন বাংলাদেশ ব্যাংক তার একাউন্ট ক্রেডিট করে দিচ্ছে।
বেসরকারী শিক্ষক-কর্মচারীরা ইএফটির মাধ্যমে বেতন-ভাতা পান। তবে বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কর্মরত এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা সরকারি কোষাগার থেকে ছাড় হলেও তা রাষ্ট্রায়ত্ত আটটি ব্যাংকের মাধ্যমে ‘অ্যানালগ’ পদ্ধতিতে ছাড় হয়। এই অর্থ তুলতে শিক্ষকদের নানা ভোগান্তিতে পড়তে হতো।
ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে বেতন-ভাতা ছাড়ের জন্য কয়েক পর্যায়ে অনুমোদনসহ সংশ্লিষ্ট কাজে অনেক ক্ষেত্রেই এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের বেতন-ভাতা পেতে দেরি হয়। অনেক সময় পরের মাসের ১০ তারিখের পরও আগের মাসের বেতন-ভাতা জোটে।
এ পরিপ্রেক্ষিতে গত ৫ অক্টোবর বিশ্ব শিক্ষক দিবসে ইএফটিতে বেসরকারি শিক্ষকদের এমপিওর বেতন-ভাতা দেওয়ার ঘোষণা দেয় শিক্ষা মন্ত্রণালয়। প্রাথমিকভাবে বেসরকারি এমপিওভুক্ত স্কুল-কলেজের ২০৯ জন শিক্ষক-কর্মচারীর অক্টোবর মাসের এমপিও ইএফটিতে ছাড় হয়। পরে গত ১ জানুয়ারি ১ লাখ ৮৯ হাজার শিক্ষক ইএফটির মাধ্যমে বেতন-ভাতার সরকারি অংশের টাকা পেয়েছেন। দ্বিতীয় ধাপে আরও ৬৭ হাজার শিক্ষক-কর্মচারীকে বেতন দেওয়া হচ্ছে।
প্রসঙ্গত, বেসরকারি স্কুল-কলেজের ৩ লাখ ৮০ হাজার শিক্ষক-কর্মচারীর মধ্যে ২ লাখ ৮৯ হাজার শিক্ষক-কর্মচারীর তথ্য যাচাই করছে মাউশি। ২৭ হাজার শিক্ষক-কর্মচারীর তথ্য পায়নি সংস্থাটি। অবশিষ্ট শিক্ষক-কর্মচারীদের তথ্য পেলেও তাতে ত্রুটি থাকায় সেগুলো সংশোধন করার প্রক্রিয়া চলছে বলে জানা গেছে। এবার তৃতীয় ধাপে ৮৪ হাজার শিক্ষক-কর্মচারীকে বেতনের মেসেজ পাঠানো হচ্ছে।
সরকারের উদ্দোগ ও প্রক্রিয়া কিন্তু বর্তমান যুগের সাথে সামজস্য কিন্তু সমস্যা হলো অন্য জায়গায় সরকারের আমলাদের শিক্ষকদের প্রতি বরাবরের মতো উদাসিনতা ও অবহেলা। সরকার যদি বিভাগ ওয়ারি কাজটি সম্পুর্ন করতো তাহলে শিক্ষকদের এই ভোগান্তি হতো না। ৮ টি বিভাগে আলাদা আলাদাভাবে। আবার যদি আগের সিষ্টেম ও ইএফটি একই সাথে চালু রাখতো তাহলেও এই যে শিক্ষকরা ৩/৪ মাস ধরে বেতন পাচ্ছে না এই ভোগান্তি থেকে শিক্ষকরা মুক্তি পেতে। কিন্তু আমি সব সময়ই একটা কথা বলে আসছি এবং আন্দোলন সংগ্রাম ঘেরাও কর্ম সূচী দিয়ে আসছি এই পতিত ফ্যাসিষ্ট হাসিনা সরকারের রেখে যাওয়া পেতাত্বাদের বিরুদ্ধে। হাসিনা চলে গেছে কিন্সু তাদের দোসরগুলো আজও ঘাপটি মেরে তারাই যত শয়তানির মুল কারন । সরকারের ভালো উদ্দোগ নস্যাত করার জন্য মরিয়া হয়ে আছে। এই দোসরদের খুজে বের করে হাসিনার মতো বিদায় করতে হবে। আমি তোমধ্যে শিক্ষক কর্মঐক্যজোটের নেতৃবৃন্দকে ঐদোসরদের তালিকা করতে বলেছি । কারা ইএফটি কাজে বাধা সৃষ্টি করছে। আমি এও বলেছি ঈদের আগে সমস্ত শিক্ষক কর্মচারীদের বেতন বোনাস পরিশোধ করতে হবে। যদি পরিশোধ না করা হয় ঐ হাসিনার দোসরদের ঘাড়ধরে বের করে দেওয়া হবে।
আমি সরকারকে হুসিয়ারি করে বলতে চাই বেসরকারী শিক্ষক-কর্মচারীদের সাথে বিমাতাসুলভ আচরন বন্ধ করুন। যতদ্রুত সম্ভব বেতন বোনাস দিয়ে দিন নতুবা আপনাদের পরিনতিও হাসিনার মতো হবে। ঈদের আগেই বেসরকারী শিক্ষক-কর্মচারীরা তাদের ন্যায্য প্রাপ্য পারে ইনশাআল্লাহ।
লেখক: চেয়ারম্যান, শিক্ষক কর্মচারী ঐক্যজোট ও সাংগঠনিক সম্পাদক, বিএনপি।
“মতামত ও সাক্ষাৎকার কলামে প্রকাশিত নিবন্ধ লেখকের নিজস্ব। শিক্ষাবার্তা’র সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে মতামত ও সাক্ষাৎকারে প্রকাশিত মত সামঞ্জস্যপূর্ণ নাও হতে পারে। প্রকাশিত লেখাটির ব্যাখ্যা বা বিশ্লেষণ, তথ্য-উপাত্ত, রাজনৈতিক ও আইনগতসহ যাবতীয় বিষয়ের দায়ভার লেখকের;- শিক্ষাবার্তা কর্তৃপক্ষের নয়।”
শিক্ষাবার্তা ডটকম/এএইচএম/২০/০৩/২০২৫
Discover more from শিক্ষাবার্তা ডট কম
Subscribe to get the latest posts sent to your email.