শেরপুরঃ শেরপুরের শ্রীবরদীতে একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে যাওয়া-আসার রাস্তায় বাঁশের বেড়া দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে দাতা পরিবারের বিরুদ্ধে। এতে কোমলমতি শিক্ষার্থীসহ শিক্ষকরা পড়েছেন বেকায়দায়।
উপজেলার কাকিলাকুড়া ইউনিয়নের খোশালপুর দক্ষিণ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের রাস্তায় ঘটেছে এমন ঘটনা।
গতকাল রোবাবর (১৯ জানুয়ারি) সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, পাকা রাস্তা হতে বিদ্যালয়ে যাওয়ার পথটির দুপাশে বাঁশের বেড়া দেওয়া হয়েছে। এতে পথটি এতটাই সরু হয়ে গেছে যে, একজন শিশুও স্বাভাবিক যাতায়াত করতে পারছে না। বিদ্যালয়ে আসা কোমলমতি শিক্ষার্থীরা সেই পথ দিয়ে স্বাভাবিক চলাচল করতে পারছে না। বিকল্প রাস্তা না থাকায়, তারা বাধ্য হয়েই সেই সরু পথ দিয়ে যেতে হচ্ছে। এসময় কয়েকজন শিক্ষার্থীর জামা ও ব্যাগ বাঁশের বেড়ায় আটকে ছিঁড়ে গেছে।
শিক্ষার্থীরা জানায়, গত বৃহস্পতিবারও রাস্তাটি ভালো ছিলো। কিন্তু রোববার এসে দেখে, তারা বেড়া দিয়ে এমনভাবে পথটি আটকানো হয়েছে। কয়েকজন শিক্ষার্থী বেড়ায় আটকে ব্যথাও পেয়েছে, আবার কয়েকজনের জামা ও ব্যাগ ছিঁড়ে গেছে। শিক্ষার্থীরা আরও বলেন, দ্রুত বেড়া সরিয়ে না দিলে তারা বিদ্যালয়ে আসবে কিভাবে? বেড়াটি দ্রুত সরানোর দাবি তাদের।
এদিকে ১৯ জানুয়ারি ওই বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকা আশরাফুন নাহার রাস্তাটি মুক্ত করতে জেলা শিক্ষা অফিসারকে মৌখিক অভিযোগ করেছেন বলে তিনি জানান।
আশরাফুন নাহার বলেন, ‘গত বৃহস্পতিবার ছুটির সময়ও রাস্তাটি ঠিক ছিলো। কিন্তু রোববার এসে দেখি, এ অবস্থা। একটি বিদ্যালয়ের রাস্তা এভাবে আটকানো নিতান্তই গর্হিত কাজ। ছোট ছোট শিশু, অভিভাবক, শিক্ষক শিক্ষিকা কেউই বিদ্যালয়ে স্বাভাবিক আসাযাওয়া করতে পারছে না।’
অভিযুক্ত শহিদুল্লাহ মিয়া বলেন, ‘স্কুলের জন্য আমরা জমি দিয়েছি। আমাদের জমিতেই স্কুল, কিন্তু স্কুলের কোনো ব্যাপারে আমাদের মতামত অগ্রাহ্য করে হেড ম্যাডাম। আমার বসত ঘরের সামনে স্কুলের ল্যাট্রিনের ট্যাঙ্কি দিয়েছে। আমরা বারবার অনুরোধ করেছি, ট্যাঙ্কিটি অন্যত্র দেওয়ার জন্য, কিন্তু হেড ম্যাডাম সবার অনুরোধকে উল্টিয়ে নিজের মনমতো আমার ঘরের সামনেই বসিয়েছে। এখন স্কুলের রাস্তা আমার জমির উপর দিয়ে এতোদিন ছিলো। আমি মৌখিকভাবে তাদের জানিয়েছি, স্কুলের বিকল্প রাস্তা বের করতে। কিন্তু তারা আমার সে কথাও শুনেনি। এখন আমি বেড়া দিয়েছি, যদিও এতে স্কুলে যাওয়ার জন্য একটু জায়গা রাখা হয়েছে।’
এদিকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শেখ জাবের আহমেদ বলেন, ‘এ বিষয়ে এখনো কেউ অভিযোগ জানায়নি। বিদ্যালয়ের যাতায়াতের রাস্তায় প্রতিবন্ধকতা তৈরি হলে, অভিযোগ সাপেক্ষে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. ওবায়দুল্লাহ বলেন, ‘খোশালপুর দক্ষিণ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের রাস্তা নিয়ে কী ঘটেছে তা জানার জন্য সরেজমিনে যাবো। বিদ্যালয়ে যাতায়তের জন্য অবশ্যই রাস্তার ব্যবস্থা থাকতে হবে।’
শিক্ষাবার্তা ডটকম/এএইচএম/২০/০১/২০২৫
Discover more from শিক্ষাবার্তা ডট কম
Subscribe to get the latest posts sent to your email.