‘কান ফাটাইয়া ফেলমু’-অধ্যক্ষকে শিক্ষক নেতা

নিজস্ব প্রতিবেদক।। কুমিল্লা সিটি কলেজের অধ্যক্ষকে লাঞ্ছনার প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছেন শিক্ষার্থ, শিক্ষক, কর্মকর্তারা ও কর্মচারীরা। বুধবার (১৫ জানুয়ারি) কোটবাড়ি-কুমিল্লা সড়কে কলেজ ক্যাম্পাসের সামনে এ কর্মসূচি পালন করেন তারা।

জানা যায়, গত ১৩ জানুয়ারি দুপুরে কলেজে প্রবেশ করতে চেষ্টা করেন কলেজটির সাবেক অধ্যক্ষ ও জামায়াতের ইসলামের সহযোগী সংগঠন বাংলাদেশ আদর্শ শিক্ষক ফেডারেশন কুমিল্লা মহানগরী শাখার সহ-সভাপতি ইফতেখার আলম ভুঁইয়া এবং তার ভাই কাউসার আলম ভুঁইয়া। গেট খুলতে দেরি হওয়ায় কলেজে ঢুকে তারা অধ্যক্ষকে শাসাতে থাকেন।

বেশ কয়েকবার চড় দিতে তেড়ে যান ইফতেখার ও কাউসার। এক পর্যায়ে উত্তেজিত হয়ে ইফতেখার আলম ভুঁইয়াকে বলতে শোনা যায় ‘একদম চুপ, কান ফাটাইয়া ফেলমু, বের হ’। এক পর্যায়ে অন্য শিক্ষকরা সে সময় অধ্যক্ষকে নিয়ে বের হয়ে যান। 

কলেজ সূত্র জানায়, ২০০৮ সালে কুমিল্লার কোটবাড়িতে সিটি কলেজ প্রতিষ্ঠা হয়।

প্রতিষ্ঠাতা অনেক শেয়ারহোল্ডারদের মধ্যে ইফতেখার আলম ভুঁইয়া অন্যতম। তিনি সে সময় কলেজটির প্রতিষ্ঠাকালীন অধ্যক্ষ পদেও নিয়োগ পান। চার বছরের মাথায় পরিচালনা নিয়ে ঝামেলা লাগে। গুটিকয়েক পরিচালক নিয়ে কলেজ পরিচালনা করেছেন ইফতেখার।

অর্থের যথাযথ হিসাব দিতে পারেননি বলে অন্য পরিচলকরা অভিযোগ করেন। এ নিয়ে অন্যান্য পরিচালকদের সঙ্গে ঝামেলা বাধে। একপর্যায়ে কলেজ প্রাঙ্গণে পরিচালক অ্যাডভোকেট আরিফুজ্জামানের সঙ্গে হাতাহাতি হয়। উভয় আহত হন। ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ দুজনকেই আটক করে থানায় নিয়ে যায়।

অন্য পরিচালকরা থানায় বসে প্রাথমিক মীমাংসা শেষে তাদের ছাড়িয়ে আনেন।
পরবর্তী সময়ে অর্থের সুষ্ঠু হিসাব দিতে না পারায় অধ্যক্ষ পদ থেকে ইফতেখারকে অব্যাহতির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় পরিচালনা পর্ষদের সভায়। একপর্যায়ে ইফতেখার তার শেয়ার তুলে নেবেন বলে জানান। মোট শেয়ার বাবদ ২৯ লাখ ৩৭ হাজার ৫০০ টাকা নিয়ে যান তিনি। যার চেক, ভাউচার, আপসনামা, চুক্তিপত্র রয়েছে কলেজ কর্তৃপক্ষের কাছে।

অর্থ তছরুপের দায়ে পরিচালক আরিফুজ্জামান, সেলিম রেজাসহ তিন জন বাদী হয়ে ইফতেখার আলম ভুঁইয়ার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। কিন্তু ৫ আগস্ট পরবর্তী সময়ে ইফতেখার আলম ও তার ভাই কলেজ দখলে নিতে দফায় দফায় কলেজে প্রবেশ করেন। এরই ধারাবাহিকতায় গত সোমবার কলেজে প্রবেশ করে অধ্যক্ষকে লাঞ্ছিত করেন। এ ঘটনার একটি সিসিটিভি ফুটেজ ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে। এ নিয়ে জেলা জুড়ে চলছে আলোচনা সমালোচনা।

এ বিষয়ে জানতে ইফতেখার আলম ভুঁইয়াকে একাধিবার ফোন করা হলেও তিনি কোনো সাড়া দেননি।

শিক্ষাবার্তা /এ/১৬/০১/২০২৫