এইমাত্র পাওয়া

জবিতে দ্বিতীয় দিনের মতো চলছে কমপ্লিট শাটডাউন

ঢাকাঃ সেনাবাহিনীর কাছে দ্বিতীয় ক্যাম্পাস নির্মাণ কাজ হস্তান্তরসহ তিন দফা দাবিতে দ্বিতীয় দিনের মতো কমপ্লিট শাটডাউন কর্মসূচি পালন করছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষার্থীরা। মঙ্গলবার (১৪ জানুয়ারি) সকাল থেকেই সব ধরনের একাডেমিক কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়টিতে।

শিক্ষা মন্ত্রণালয় বুধবার (১৫ জানুয়ারি) এ নিয়ে সভায় বসবেন এবং কার্যকর বিষয়ক আলোচনা করবেন বলে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে। সভায় আলোচনা হবে (ক) প্রকল্পের অগ্রগতি পর্যালোচনা; (খ) প্রকল্পের কাজ বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর নিকট হস্তান্তর; (গ) বিশ্ববিদ্যালয়ের বাণী ভবন ও হাবিবুর রহমান হল স্টিল স্ট্রাকচারের মাধ্যমে নির্মাণ এবং আবাসন সমস্যা নিরসন বিষয়ে আলোচনা; এবং (ঘ) বিবিধ।

মঙ্গলবার (১৪ জানুয়ারি) বিশ্ববিদ্যালয়ে সরেজমিনে দেখা গেছে, পুরো ক্যাম্পাসেই বিরাজ করছে সুনশান নীরবতা। বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক, প্রশাসনিক সব ভবনেই ঝুলছে তালা। শিক্ষার্থীরাও কেউ ক্লাস-পরীক্ষার জন্য আসেননি। ক্যাম্পাসে কয়েকজন কর্মকর্তা-কর্মচারীর উপস্থিতি দেখা গেলেও তারা বাইরেই আড্ডা দিচ্ছেন। পুরো ক্যাম্পাসেই অচলাবস্থা বিরাজ করছে।

এর আগে, গত রোববার (১২ জানুয়ারি) সকাল সাড়ে ৮টা থেকে ৩ দফা দাবিতে গণ-অনশন শুরু করেন বিশ্ববিদ্যালয়টির শিক্ষার্থীরা। এদিন রাতে অনশনে অসুস্থ হয়ে প্রায় ১৪ শিক্ষার্থী হাসপাতালে ভর্তি হন। উপাচার্যের বারবার অনুরোধেও অনশন ভাঙেনি শিক্ষার্থীরা।

সোমবার (১৩ জানুয়ারি) সকাল থেকে পুরো ক্যাম্পাস শাট ডাউন ও টানা দ্বিতীয় দিনের মত অনশন শুরু করেন শিক্ষার্থীরা। সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক, শহীদ সাজিদ একাডেমিক ভবনে রফিক ভবনে তালা ঝুলিয়ে দেন তারা। শাট ডাউন কর্মসূচির সাথে একাত্মতা পোষণ করে বিশ্বিবদ্যালয়ের সকল বিভাগ ও দপ্তরে একাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রম বন্ধ রাখা হয়। কোনো বিভাগে ক্লাস ও পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়নি। দুপুরে সংবাদ সম্মেলন করে শিক্ষার্থীদের সাথে একাত্মতা পোষণ করে দাবি আদায়ে পাশে থাকার ঘোষণা দেয় শিক্ষক সমিতি।

সোমবার দুপুর দুইটায় সেনাবাহিনীকে দ্বিতীয় ক্যম্পাসের কাজ হস্তান্তর নিয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে একটি চিঠি ইস্যু করা হয়। সচিবালয় থেকে একটি চিঠি ইস্যু করা হয়। এই চিঠিতে সেনাবাহিনীকে কাজ হস্তান্তর বিষয়ে বুধবার সচিবালয়ে সভা অনুষ্ঠিত হবে বলা হয়।

এ চিঠি আসার পর অনশনরত শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে পাল্টা তিনটি দাবি জানানো হয়। দাবিগুলো হলো- সেনাবাহিনীর কাছে দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের কাজ হস্তান্তরের চুক্তি অনতিবিলম্বে স্বাক্ষর করতে হবে। প্রয়োজনে স্পেশাল মিটিংয়ের মাধ্যমে তা সম্পূর্ণ করতে হবে এবং দৃশ্যমানভাবে সকলের সামনে তা উপস্থাপন করতে হবে। শিক্ষার্থীরা অনশনে থাকাবস্থায় সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও দপ্তর কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে লিখিত অঙ্গীকার নিয়ে তা প্রকাশ করতে হবে। কয়েক মাস সময় নেওয়ার নাম করে কোনো প্রকার দীর্ঘসূত্রতার বন্দোবস্ত করা চলবে না। পুরান ঢাকার বাণী ভবন ও ড. হাবিবুর রহমান হলের স্টিল বেইজড ভবনের কাজ দ্রুত শুরু এবং শেষ করতে হবে। যতদিন অবধি আবাসন ব্যবস্থা না হয়, ততদিন পর্যন্ত ৭০ শতাংশ শিক্ষার্থীর আবাসন ভাতা নিশ্চিত করতে হবে।

সংশোধিত চিঠি না আসায় বিকাল ৪টায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সচিবালয় অভিমুখে পদযাত্রা শুরু করেন তারা। বেলা পৌনে পাঁচটার দিকে সচিবালয়ের সামনে এসে পৌঁছান। এ সময় অনশনরত অসুস্থ শিক্ষার্থীরা স্যালাইনের স্ট্যান্ডসহ রিকশায় চেপে পদযাত্রা অংশগ্রহণ করেন। এ সময় অনশনরত শিক্ষার্থীদের সাথে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় এক হাজার শিক্ষার্থী অংশ নেন। সেখানে অনশনে বসেন শিক্ষার্থীরা।

গতকাল সোমবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে লিখিত অঙ্গীকার পাওয়ায় টানা ৩৫ ঘন্টা পর অনশন প্রত্যাহার করে নেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষার্থীরা। তবে বুধবার সভায় সিদ্ধান্ত না আসা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে শাট ডাউন কর্মসূচি চালু রাখার ঘোষণা দেন তারা।

শিক্ষাবার্তা ডটকম/এএইচএম/১৪/০১/২০২৫


Discover more from শিক্ষাবার্তা ডট কম

Subscribe to get the latest posts sent to your email.