এইমাত্র পাওয়া

মুখোমুখি সংস্কার নির্বাচন

নিজস্ব প্রতিবেদক।।জুলাই গণঅভ্যুত্থানের ৪ মাসের মধ্যেই বিভিন্ন রাজনৈতিক দল রাষ্ট্রসংস্কার ও নির্বাচনকে ‘মুখোমুখি দাঁড় করিয়ে দিয়েছে’। ‘ফ্যাসিবাদী কাঠামোতে রূপান্তরিত’ হওয়া রাষ্ট্রের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান সংস্কার না করে নির্বাচন দিলে সেই গণতন্ত্রের সুফল জনগণ পাবে না।

শুক্রবার ‘জাতীয় ঐক্য’ সৃষ্টির লক্ষ্যে আয়োজিত জাতীয় সংলাপে এসব কথা বলেন আলোচকরা। রাজধানীর কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে ফোরাম ফর বাংলাদেশ স্টাডিজ (এফবিএস) আয়োজিত ‘ঐক্য, সংস্কার ও নির্বাচন’ শীর্ষক দুই দিনের সংলাপে এ আলোচনা হয়।

সকালে অনুষ্ঠানের সূচনা হয় জুলাই গণআন্দোলনে নিহত ও আহতদের পরিবারের সদস্যদের মঞ্চে উপবেশনের মধ্য দিয়ে। পরে নিহতদের স্মরণে ১ মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। জুলাই গণঅভ্যুত্থানে ফার্মগেটে নিহত নাফিসের বাবা গোলাম রহমান সংলাপের উদ্বোধন ঘোষণা করেন।

সংলাপে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের একটি রেকর্ড করা বক্তব্য প্রচার করা হয়। তিনি বলেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থান কেবল বাংলাদেশকে মুক্ত করেনি, আমাদের স্বপ্নকেও তুমুল সাহসী করে তুলেছে। বাকহীন বাংলাদেশ জোরালো কণ্ঠে আবার কথা বলার শক্তি ফিরে পেয়েছে। এই দৃঢ়কণ্ঠ ঐক্য গঠনে সোচ্চার হয়েছে। ঐক্য আমাদের মূল শক্তি।

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, জুলাই অভ্যুত্থান আমাদের ঐতিহাসিক মাত্রায় বলীয়ান করেছে। গত ৫ মাসে এই ঐক্য আরও শক্তিশালী হয়েছে। গণঅভ্যুত্থানের বিরুদ্ধ শক্তি আমাদের মধ্যে ভাঙন সৃষ্টি করার ক্রমাগত প্রয়াস চালাতে থাকায় আমাদের ঐক্য আরও মজবুত হচ্ছে। এই ঐক্যের জোরেই এখন আমরা অসাধ্য সাধন করতে পারি। এখনই আমাদের সর্বোচ্চ সুযোগ। এমন অর্থনীতি গড়ে তুলতে হবে যেটা সব নাগরিকের জন্য সম্পদের ও সুযোগের বৈষম্যহীনতার নিশ্চয়তা দেবে।

সংলাপে অংশ নিয়ে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, আমরা যেন একাত্তরকে ভুলে না যাই। একাত্তরের পর থেকে গণতন্ত্রের জন্য ধারাবাহিক যে লড়াই-সংগ্রাম, সেই সংগ্রামের প্রত্যেককে আমাদের মনে রাখা দরকার। সেই লড়াইয়ের মধ্য দিয়ে, ছাত্রদের আত্মত্যাগের মধ্য দিয়ে আজ আমরা এই জায়গায় এসে পৌঁছেছি।

তিনি বলেন, বাংলাদেশ একটা অত্যন্ত জটিল রাজনৈতিক সময়ের ভেতর দিয়ে যাচ্ছে। আজ যে প্রশ্নগুলো সামনে এসেছে ঐক্য, সংস্কার ও নির্বাচন, জাতিগতভাবে আমাদের দুর্ভাগ্য যে স্বাধীনতার ৫৩ বছর পর এ বিষয়গুলো নিয়ে আমাদের আলোচনা করতে হচ্ছে। খুব ভালো হতো যদি আমরা প্রথম থেকেই এ বিষয়গুলো নিয়ে কাজ করে সামনে এগোতে পারতাম। মির্জা ফখরুল আরও বলেন, দুর্ভাগ্য আমাদের, এখন কিছু কিছু বক্তব্য আসছে যে, বিএনপি সংস্কার চায় না, নির্বাচন চায়। এ কথাটা সঠিক নয়। আমরা একটা গ্রহণযোগ্য নির্বাচন করার জন্য ন্যূনতম যে সংস্কার প্রয়োজন, সেই সংস্কারটুকু করে নির্বাচনে যেতে চাই।

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার সব সংস্কার প্রস্তাব নিয়ে পাবলিক ডায়ালগ আয়োজন করার পক্ষে মত ব্যক্ত করেন। তিনি বলেন, সংস্কার, সংলাপ, জাতীয় ঐকমত্যের প্রশ্নে আমি বলব, সরকারের পক্ষ থেকে যে রিফর্ম কমিশনগুলো গঠন করা হয়েছে; সেই কমিশনের পক্ষ থেকে রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে পরামর্শ চাওয়া হয়েছিল। সহজ পথ হলো-আমরা পরামর্শ দিয়েছি, সব দল দিচ্ছে। সংস্কার বিশাল ব্যাপার। রাষ্ট্রের সব অর্গান পলিটিসাইজ হয়েছে এবং করাপ্ট হয়েছে। অন্তবর্তী সরকারের পক্ষে সবকিছু সংস্কার করা সম্ভব নয়। ইট উইল টেক টাইম।

এবার সংস্কার প্রশ্নে পিছপা হলে দেশে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা আসবে না বলে মন্তব্য করেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। তিনি বলেন, সংস্কারের বিষয়ে একমত হতে হবে। এ ক্ষেত্রে কেউ কাউকে প্রতিপক্ষ ভাবা ঠিক নয়। শেখ হাসিনার স্বৈরশাসনের যে অবসান ঘটবে, তা ৩-৪ আগস্টের আগে অনুমানও করতে পারেননি বলে জানান এ উপদেষ্টা। বিপ্লবের মাধ্যমে আসা অন্তর্বর্তী সরকার ম্যান্ডেট নিয়ে চিন্তিত নয় বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

সংবিধান সংস্কার কমিশনের প্রধান অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেন, দেশের সার্বভৌমত্বের বিরুদ্ধে আক্রমণের বিষয়ে একটা জাতীয় ঐক্য ‘দেখা গেছে’। এখন বাংলাদেশের শাসনব্যবস্থা কী হবে সেই ঐক্য দরকার। গত ১৫-১৬ বছরে ব্যক্তির হাতে ক্ষমতা কেন্দ্রীভূত ছিল। রাজনৈতিক দল, নাগরিক সমাজ ও জনগণকে ঐক্যের মাধ্যমে সংস্কারের পথে নিয়ে যেতে হবে। তিনি বলেন, রাজনৈতিক সংস্কৃতির পরিবর্তন আনতে হবে। কারণ আপনি যত ভালো সংবিধান তৈরি করেন না কেন, রাজনৈতিক সংস্কৃতি পরিবর্তন না হলে সেই সংবিধান আবারও ভাঙা হবে। প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কারের পাশাপাশি রাজনৈতিক সংস্কৃতি পরিবর্তনে জোর দিতে হবে। জবাবদিহিমূলক রাষ্ট্রব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করা ছাড়া গণতন্ত্র ও মানবিক মর্যাদা অর্জন কখনোই সম্ভব নয়।

সরকার গঠন, নির্বাহী বিভাগ, আইনসভা ও বিচার বিভাগের সম্পর্ক সুনির্ধারিত করে জবাবদিহি নিশ্চিত করার ওপর গুরুত্ব আরোপ করে তিনি বলেন, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা ও নাগরিকদের প্রশ্ন করার ক্ষমতা অবশ্যই প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামোর অংশ হতে হবে।

অধ্যাপক আলী রীয়াজ আরও বলেন, অতীতের স্বৈরতন্ত্রবিরোধী লড়াই শুধুই সূচনামাত্র। এখন আমাদের লক্ষ্য হওয়া উচিত জবাবদিহিমূলক ও ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণে সক্ষম রাষ্ট্রব্যবস্থা গড়ে তোলা। তিনি বলেন, প্রতিষ্ঠানগুলোকে কার্যকর করতে এবং জনগণের মতামত নির্বাচনি ব্যবস্থায় প্রতিফলিত করতে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠার বিকল্প নেই। সংলাপে আলোচিত বিষয়গুলো দেশের গণতান্ত্রিক ভবিষ্যৎ নির্মাণের জন্য গুরুত্বপূর্ণ দিকনির্দেশনা হিসেবে বিবেচিত হতে পারে বলেও মনে করেন অধ্যাপক আলী রীয়াজ।

বাংলা একাডেমির সভাপতি আবুল কাশেম ফজলুল হক বলেন, আমাদের জাতীয় জীবনের দুর্বলতা হচ্ছে রাজনীতি। বাহাত্তর সালে নতুন সংবিধান এলেও একটি সুষ্ঠু রাজনীতি গড়ে ওঠেনি। মূলত হাজার বছরের ইতিহাস ঘাটলে দেখা যায়, কেউ ভালো শাসন করেনি। ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগের সমালোচনা করে তিনি বলেন, দলটির প্রতি মানুষের আস্থা বিশ্বাস আপাতত নেই। তারা যদি ভবিষ্যতে নিজেদের পুনর্গঠন করে সামনে আসে, তা হলে হয়তো মানুষ ভবিষ্যতে ভেবে দেখবে। বর্তমান সংস্কার আলোচনা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, গোটা রাষ্ট্রব্যবস্থা, প্রশাসন, বিচারব্যবস্থা ভেতর থেকে নষ্ট হয়ে গেছে। এক দিনে এগুলো ঠিক হবে না। ধীরে ধীরে উন্নতির দিকে যেতে হবে।

অর্থনীতিবিদ মুশতাক হুসাইন খান বলেন, সংস্কার আর নির্বাচনের মধ্যে ‘ফাটল ধরানোর চেষ্টা’ করা হচ্ছে। এতে ক্ষতি হবে দেশের। বাংলাদেশের আসল সমস্যা ছিল ক্ষমতা কেন্দ্রীভূত হওয়া। বিগত ফ্যাসিস্ট সরকার কেবল আইন পরিবর্তন করেনি। নিজেদের আইনও নিজেরা ভাঙার শক্তি অর্জন করেছিল, এটাই ছিল সমস্যা। তাই আইন ঠিক করতে হবে, আবার ক্ষমতার কাঠামোও ঠিক করতে হবে। সংস্কারের মাধ্যমে শুধু আইনকানুন পরিবর্তন করলে হবে না মন্তব্য করে তিনি বলেন, বাংলাদেশে একটি গোপন ক্ষমতা কাঠামো গড়ে উঠেছে। এ গোপন ক্ষমতার বিন্যাস ভাঙতে হবে। কারণ দলের পরিবর্তন হলেও গোপন শক্তিটি নতুন দলের সঙ্গে ভিড়ে যাবে। এ কাজটা এখনই করতে হবে। তা রাজনৈতিক দলগুলোকে সঙ্গে নিয়েই করতে হবে।

তিনি রাজনৈতিক দলগুলোর উদ্দেশে বলেন, ক্ষমতার গোপন কাঠানো ভাঙতে না পারলে আপনারা ভালো কিছু চাইলেও তা বাস্তবায়ন করা সম্ভব হবে না। কারণ আপনার দলেরই এমপি, নেতারা তা ঠেকিয়ে দেবে। মুশতাক হুসাইন ‘খুনিদের’ বিচারের পাশাপাশি ‘বড়বড় চোরদের’ বিচার করার পরামর্শ দেন। তিনি বলেন, সবাইকে একসঙ্গে পারা যাবে না। একজন, দুজন চোর ধরতে হবে। মানুষ তখন দেখতে পাবে যে, চুরি করে পার পাওয়া যাচ্ছে না।

দেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতিবিষয়ক শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটির প্রধান দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, ‘সংস্কার খুব বড় স্বপ্ন, ঐক্য তার জন্য দরকার, নির্বাচনেও যেতে হবে। কিন্তু তার আগে মানুষকে স্বস্তি দিতে হবে। সংস্কারমুখী মানুষকে আইনশৃঙ্খলা না দিয়ে, তার খাওয়ার ব্যবস্থা না করে, চাকরির নিশ্চয়তা না দিয়ে বিপথে নিয়ে যাবেন না। সর্বোত্তম পেতে গিয়ে আমরা যেন উত্তমকে হারিয়ে না ফেলি। আমরা সর্বোচ্চ পর্যায়ে যেতে চাই, কিন্তু এ মুহূর্তের সমস্যাগুলো মনোযোগে না নিলে ওই জায়গাটায় পৌঁছানো যাবে না।
দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য মনে করেন, কাঠামোগত প্রশাসনিক সংস্কারের বিষয়ে অনেক আলোচনা হলেও এর মধ্যে ঘাটতি লাগার বিষয় আছে। আর তা হলো, উপরিকাঠামো নিয়ে যতখানি আলোচনা হচ্ছে, এ দেশ-সমাজের ভিত্তি নিয়ে তত আলোচনা হয় না। এ অর্থনীতিবিদ বলেন, এ আলোচনা শোনা যায় না যে গার্মেন্টস শ্রমিকের বেতন কত হবে, সে ন্যায্য মজুরি কীভাবে পাবে, কৃষক ফসলের দাম পাবে কি না, এই মুহূর্তে মধ্যবিত্ত ৮০ টাকায় শাকের আঁটি কেমন করে খাবে? সেই আলোচনা তো আসেনি। একবারও তো আলোচনা হলো না যুবসমাজের কর্মসংস্থান কেমন করে হবে। সেই সংস্কার কি আমরা দেখেছি। কীসের উপরিকাঠামো সংস্কার করবেন, যদি আমার ভিত ঠিক না থাকে। আসল ক্ষমতায়ন তো রুটি-রুজির ক্ষমতায়ন। আমার খুব কষ্ট লাগে, এ বিষয়গুলো আমাদের নেতারা দেখছেন না। সরকারি কর্মচারীদের মহার্ঘ ভাতা নিয়ে আলোচনা চললেও বাদবাকি মানুষ কোথা থেকে মহার্ঘ ভাতা পাবে সেই আলোচনা শোনা যায় না বলেন দেবপ্রিয়। শিক্ষিত যুবসমাজের জন্য কোনো ভাতার প্রচলন হবে কি না, সেটাও শোনা যায় না, বলেন তিনি।

দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, আপনারা কল্পনা করতে পারবেন না লুণ্ঠনের মাত্রাটা কী, কী ভয়ংকর অর্থনৈতিক পরিস্থিতিকে আমরা উত্তরাধিকার সূত্রে পেয়েছি। এটাকে ঠিক করতে হবে।

সংলাপে ধারণাপত্র পাঠ করে সাংবাদিক মনির হায়দার বলেন, ফ্যাসিস্ট শাসনের পতন ঘটানোর জন্য সব চিন্তা ও ভিন্ন ভিন্ন মতাদর্শের মানুষ ঐক্যবদ্ধ হয়েছিল। এটা ছিল জুলাই আন্দোলনের একটা অভূতপূর্ব দৃশ্য। এখন এক ধরনের অনৈক্যের সুর শোনা যাচ্ছে যা অভ্যুত্থানের পক্ষের মানুষকে চিন্তিত করছে। ঐক্য না হলে সংস্কার হবে না, সংস্কার না হলে নির্বাচন হবে না। এ জন্য জাতীয় ঐক্যের লক্ষ্যে, বিশেষ করে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ঐক্যের জন্য এ আয়োজন করা হয়েছে।

সংলাপের শুরুতে কথা বলেন জুলাই গণঅভ্যুত্থানে গুলিবিদ্ধ ঢাকা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থী আবু বকর সিদ্দিক, নিহত ইমাম হোসেনের ভাই রবিউল আওয়াল, উত্তরা চব্বিশের সংগঠক মনিশা মাফরুহা, নিহত শাহরিয়ার হাসান আলভীর বাবা আবুল হাসান।

গণঅভ্যুত্থানে নিহত শাহরিয়ার হাসান আলভীর বাবা আবুল হাসান বলেন, শুধু একটি নির্বাচনের জন্য জুলাই গণঅভ্যুত্থানে নিহত ও আহতরা রক্ত দেয়নি। তারা দেশটাতে একটা সংস্কার দেখতে চায়।
শিক্ষার্থী আবু বকর বলেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থানের ৪ মাসের মধ্যেই বিভিন্ন রাজনৈতিক দল রাষ্ট্র সংস্কার ও নির্বাচনকে মুখোমুখি দাঁড় করিয়ে দিয়েছে। জাতি হিসেবে এটা আমাদের জন্য ব্যর্থতা এবং গণঅভ্যুত্থানে আহত-নিহতদের জন্য অপমানজনক। গণআন্দোলনে আহত ও নিহতদের পরিবারের সঠিক পুনর্বাসন ও খুনিদের বিচার নিশ্চিত করতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।

গণঅভ্যুত্থানে হতাহতের ঘটনায় আদৌ বিচার হবে কি না, সেই প্রশ্ন তোলেন যাত্রাবাড়ীতে পুলিশের গুলিত নিহত ইমাম হোসেনের ভাই রবিউল আওয়াল। তিনি বলেন, একটি হত্যাকাণ্ডে একজন করে পুলিশ জড়িত থাকলে এক হাজার পুলিশ গ্রেফতার হওয়ার কথা, দুজন করে জড়িত থাকলে দুই হাজার পুলিশ গ্রেফতার হতো। কিন্তু গ্রেফতার হয়েছে মাত্র ২৩ জন পুলিশ। হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত ছাত্রলীগের কতজন গ্রেফতার হয়েছে? তা হলে আমরা কীভাবে বিশ্বাস করব যে বিচার হবে? খুনিদের গ্রেফতার করতে না পারলে বিচারের নামে এমন রঙ্গমঞ্চ কেন? আপনারা সংস্কারের কথা বলেন, কিন্তু বিচারের কথা জোর দিয়ে বলেন না।

রবিউল অভিযোগ করেন, যাত্রাবাড়ীতে গণহত্যায় সাবেক ডিএমপি কমিশনারের ভাগ্নে জড়িত। তাকে গ্রেফতারের জন্য তার ‘লোকেশনের তথ্য’ পুলিশের কাছে দিলেও পুলিশ তাকে গ্রেফতার করেনি। নিহত পরিবার ও আহতদের সহায়তার বিষয়টি দ্রুত করার দাবি জানান উত্তরায় আন্দোলনের অন্যতম সংগঠন মনিশা মাফরুহা। ছেলের মৃত্যুর কথা বলতে গিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন শাহরিয়ার হাসান আলভীর বাবা আবুল হাসান। তিনি বলেন, ছেলের জানাজা এলাকায় দিতে দেওয়া হয়নি। দুটি মসজিদে মরদেহের গোসল করাতে দেওয়া হয়নি। জনগণ এত রক্ত নির্বাচনের জন্য দেয়নি। আপনার এই দেশটা সংস্কার করুন। নিহতদের পরিবার ও আহতদের নিরাপত্তা দেওয়ার কথাও বলেন আবুল হাসান।

শিক্ষাবার্তা /এ/২৮/১২/২০২৪


Discover more from শিক্ষাবার্তা ডট কম

Subscribe to get the latest posts sent to your email.