রাজশাহীঃ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের সান্ধ্য মাস্টার্স কোর্স বন্ধের দাবিতে দেয়াললিখন কর্মসূচি পালন করেছেন শিক্ষার্থীরা। গতকাল রোববার রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর একাডেমিক ভবনে অবস্থিত আইন বিভাগের সামনে এ কর্মসূচি পালন করেন তাঁরা। কয়েক দিন ধরেই শিক্ষার্থীরা ফেসবুকে পোস্ট করে এটি বাতিলের দাবি জানিয়ে আসছেন।
শিক্ষার্থীরা বলছেন, সান্ধ্য মাস্টার্স কোর্সগুলোর নামে মূলত সার্টিফিকেট–ব্যবসা করা হয়। তাঁদের পড়াশোনার মান নিয়েও যথেষ্ট সন্দেহ রয়েছে। তাঁদের নিয়মিত ক্লাস, পরীক্ষা নেওয়া হলেও নিয়মিত শিক্ষার্থীদের ক্ষেত্রে বৈষম্য করা হয়। বৈষম্যহীন নতুন দেশে এখনই উপযুক্ত সময় এটি বন্ধ করার।
আজ সোমবার দুপুরে গিয়ে দেখা যায়, সান্ধ্য মাস্টার্স কোর্স বন্ধের দাবিতে দেয়াললিখনে শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন লেখা লিখেছেন। এর মধ্যে ‘সান্ধ্য কোর্স, বন্ধ হোক’, ‘সার্টিফিকেট–ব্যবসা বন্ধ কর’, ‘বাণিজ্যিক শিক্ষা বন্ধ কর’, ‘নিশি রাতের ব্যবসা বন্ধ কর’, ‘নো মোর সান্ধ্য কোর্স’, ‘বৈষম্য দূর হোক’, ‘ইএলএলএম ব্যবসা বন্ধ হোক’, ‘ডিগ্রি দোকান বন্ধ হোক’ প্রভৃতি।
দেয়াললিখন কর্মসূচিতে নেতৃত্ব দেন বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী মাসুদ রানা। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা আইন বিভাগের মতো একটি স্বনামধন্য প্রতিষ্ঠানে এই মানহীন সান্ধ্য কোর্সগুলোর বিপক্ষে। সান্ধ্য কোর্সের শিক্ষার্থীদের ক্লাস, পরীক্ষা ও ফলাফল নিয়মিত হয়। কিন্তু নিয়মিত শিক্ষার্থীদের পরীক্ষার ফলাফল দিনের পর দিন আটকে থাকে। তাঁরা সেশনজটে থাকেন। সান্ধ্য শিক্ষার্থীদের পড়াশোনার মান ও সিলেবাস নিয়েও যথেষ্ট সন্দেহ আছে। শিক্ষা কোনোভাবেই পণ্য হতে পারে না। এই সান্ধ্য কোর্স একটা সার্টিফিকেট–ব্যবসা ছাড়া কিছুই নয়। একটা নির্দিষ্ট অর্থের বিনিময়ে তাঁরা সার্টিফিকেট নিয়ে চলে যাচ্ছেন। আমরা চাই, টাকার বিনিময়ে সার্টিফিকেট–ব্যবসা বন্ধ হোক।’
বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ফাহির আমিন বলেন, সান্ধ্য কোর্স বাতিল করতে এক যুগের বেশি সময় ধরে শিক্ষার্থীরা দাবি জানিয়ে আসছেন। ২০১৪ সালে এটি বাতিলের আন্দোলনে তৎকালীন ক্ষমতাসীন দলের ছাত্রসংগঠন ও পুলিশের হামলায় অন্তত শতাধিক শিক্ষার্থী আহত হন। শিক্ষার্থীরা সান্ধ্য কোর্স বাতিলের যৌক্তিকতা তুলে ধরার পরও এই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এটি বন্ধ করা সম্ভব হয়নি। এখন উপযুক্ত সময় আসছে সান্ধ্য কোর্সের নামে সার্টিফিকেট–ব্যবসার দোকান বন্ধ করার। তা না হলে অদূর ভবিষ্যতে নিয়মিত শিক্ষার্থীরা পর্যাপ্ত মূল্যায়ন পাবেন না এবং মেধা দিয়ে গড়ে উঠবেন না।
এ বিষয়ে জানতে আইন বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক সাঈদা আঞ্জুর মুঠোফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি সাড়া দেননি।
শিক্ষাবার্তা ডটকম/এএইচএম/২৩/১২/২০২৪
Discover more from শিক্ষাবার্তা ডট কম
Subscribe to get the latest posts sent to your email.