মিন্নির সঙ্গে কথা বলবে পুলিশ

বরগুনায় রিফাত শরীফ হত্যার ঘটনায় তার স্ত্রী আয়শা সিদ্দিকা মিন্নির সঙ্গে কথা বলতে পারে পুলিশ। বিশেষ করে নতুন দুটি সিসিটিভির ফুটেজের সূত্র ধরে তার বক্তব্য জানতে চাওয়া হবে। ওই ফুটেজের সূত্র ধরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এবং কোনো কোনো গণমাধ্যমে মিন্নির ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলা হচ্ছে। এমন গুঞ্জনও রয়েছে- ঘটনার আগের দিন ও ঘটনার দিন মিন্নির সঙ্গে কথা বলেছে ঘাতক নয়ন বন্ড। নয়ন বন্ডের মোটরসাইকেলে ঘুরেছেন তিনি।

তবে মিন্নি এ অভিযোগ অস্বীকার করে গতকাল সমকালকে জানান, ঘটনার দিন বা আগের দিন নয়ন বন্ডের সঙ্গে তার কোনো কথা হয়নি। শুরু থেকেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি পক্ষ তাকে টার্গেট করে বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়াচ্ছে। এসব কারণে মানসিকভাবে তিনি কিছুটা বিপর্যস্ত। ঘটনার আগের দিন মিন্নি রিফাত শরীফের এক আত্মীয়ের বাসায় পরিবারের সব সদস্যকে নিয়ে দাওয়াতে যান।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়ানো হয়- মিন্নি শরিফ নামে একটি ফেসবুক আইডি থেকে নয়ন বন্ডকে `স্যরি জান` বলে মেসেজ পাঠানো হয়েছে। যদিও মিন্নি বলছেন, ফেসবুকে তার কোনো আইডি নেই। তার নামে অনেক ভুয়া আইডি খোলা হয়েছে।

ভাইরাল হওয়া সিসিটিভির যে ফুটেজ নিয়ে পক্ষে-বিপক্ষে বিতর্ক উঠেছে, তাতে দেখা যায়, ঘটনার দিন কলেজের গেট থেকে বের হয়ে আসছিলেন মিন্নি। তার সঙ্গে ছিলেন রিফাত শরীফ। এদিক-সেদিক তাকিয়ে আবার রিফাতকে কলেজে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন মিন্নি। ওই দুর্বৃত্তরা কলেজ গেট থেকে রিফাতকে ধরে সামনের দিকে নিয়ে যায়। তখন মিন্নিকে হাঁটতে দেখা যায়। এর কয়েক সেকেন্ড পর নয়ন বন্ড ও অন্যরা রিফাতকে কিল-ঘুষি-লাথি মারতে শুরু করে। তখন মিন্নি তার স্বামীকে বাঁচাতে প্রাণপণ চেষ্টা চালান। রিফাতকে কুপিয়ে মারাত্মক জখম করার পর ব্যাগ ও জুতা তুলে রিফাতকে খুঁজতে সামনে এগিয়ে যান।

যারা এ ভিডিওর কিছু দৃশ্য নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন, তাদের ভাষ্য, দুর্বৃত্তরা রিফাতকে ধরে নেওয়ার সময় কেন মিন্নি স্বাভাবিকভাবে হাঁটছিলেন। কেন দুর্বৃত্তরা তাকে টার্গেট করেনি? কেন স্বামীকে প্রথমে ধরতে না গিয়ে জুতা তোলার চেষ্টা করেছিলেন মিন্নি? এ ব্যাপারে মিন্নির ভাষ্য, ঘটনার কয়েক দিন আগে তার পা কেটে যায়। তাই জুতা ছাড়া তার হাঁটতে কষ্ট হচ্ছিল। এ কারণে ঘটনার পরপরই আগে জুতা খুঁজছিলেন। পরে মিন্নি তার স্বামীকে নিয়ে হাসপাতালে যান। ঘটনার পরপরই কেউ সাহায্যের জন্য এগিয়ে আসেনি।

সূত্র জানায়, রিফাত শরীফ হত্যার ঘটনায় এরই মধ্যে নয়ন বন্ডের প্রধান সহযোগী রিফাত ফরাজীসহ কয়েকজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ। তাদের কাছ থেকে চাঞ্চল্যকর এ ঘটনার নেপথ্য কাহিনী জানার চেষ্টা চলছে। তদন্তে কোনো কঠিন সত্য সামনে এলেও তা থেকে পিছপা হবে না সংশ্নিষ্টরা। তবে নিরপরাধ কেউ যাতে অন্যায়ভাবে ফেঁসে না যায়, সে ব্যাপারে তীক্ষষ্ট নজর রাখা হচ্ছে।


Discover more from শিক্ষাবার্তা ডট কম

Subscribe to get the latest posts sent to your email.