ইনডেক্সধারী শিক্ষকরা প্রতিষ্ঠান পরিবর্তনের সুযোগ পেতে পারেন!

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাঃ বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষের (এনটিআরসিএ) মাধ্যমে সনদপ্রাপ্ত ইনডেক্সধারী (নিবন্ধিত) শিক্ষকদের বিভাগীয় প্রার্থী হিসেবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পরিবর্তনের সুযোগ ছিল। কিন্তু সর্বশেষ চতুর্থ গণবিজ্ঞপ্তিতে সেই সুযোগ স্থগিত করা হয়।

প্রতিষ্ঠান পরিবর্তনের সুযোগ বন্ধ হয়ে গেলেও বেসরকারি এমপিওভুক্ত স্কুল-কলেজের শিক্ষকদের বদলির চালু হওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হওয়ায় আশা বেঁধেছিলেন শিক্ষকরা। দূরদূরান্তে চাকরি করা এসব শিক্ষকরা নিজ এলাকায় ফিরতে পারবেন। গত রবিবার (০৫ মে) বেসরকারি এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের বদলি নীতিমালা চূড়ান্ত করতে সচিবালয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী সভাপতিত্ব করেন।বেসরকারি এমপিওভুক্ত স্কুল-কলেজের শিক্ষকদের বদলির প্রক্রিয়া চালু না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। বদলি প্রক্রিয়া চালুর ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট কয়েকজন কর্মকর্তার আপত্তি থাকায় আপাতত বদলির সুযোগ পাচ্ছেন না দীর্ঘদিন ধরে বদলি ব্যবস্থা চালুর দাবি করে আসা এসব শিক্ষকরা।

তবে ঐ বৈঠকে বেসরকারি এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের বদলির প্রক্রিয়া চালু না করার সিদ্ধান্ত হলেও শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী ইনডেক্সধারীদের এসব শিক্ষকদের প্রতিষ্ঠান পরিবর্তনের সুযোগ দেওয়ার যায় কি না সে বিষয়ে বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষকে পরামর্শ দিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী।

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্র জানিয়েছে, বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ৯৬ হাজার ৭৩৬টি শিক্ষকের পদ ফাঁকা রয়েছে। ৫ম গণবিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এই পদগুলো পূরণ করা সম্ভব হবে না। যেহেতু শিক্ষকদের বদলি আপাতত চালু হচ্ছে না; তাই আসন্ন গণবিজ্ঞপ্তিতে ইনডেক্সধারী শিক্ষকদের আবেদনের সুযোগ দেওয়া যায় কি না সে বিষয়টি নিয়ে ভাবা হচ্ছে।

বদলির ঐ সভা সূত্রে জানা গেছে, বেসরকারি শিক্ষকদের বদলি নিয়ে আয়োজিত সভায় ইনডেক্সধারী শিক্ষকদের পরবর্তী গণবিজ্ঞপ্তিতে আবেদনের সুযোগ দেওয়া যায় কি না সে বিষয়ে বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষকে পরামর্শ দিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী। বদলি চালু না হওয়ায় শিক্ষকদের মধ্যে হতাশা কাজ করছে। যেহেতু বদলি চালু হচ্ছে না, সেহেতু ইনডেক্সধারী শিক্ষকদের বিকল্প পদ্ধতিতে কীভাবে প্রতিষ্ঠান পরিবর্তন করার সুযোগ দেওয়া যায় সে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হচ্ছে।

শিক্ষকরা বলছেন, শূন্যপদের বিনিময়ে সরকার যদি একটি গণবিজ্ঞপ্তি দিয়ে দেয় তাহলে প্রতিষ্ঠান পরিবর্তনে ইচ্ছুক শিক্ষকরা নিজ উপজেলা বা জেলায় চলে যেতে পারবেন। আর শিক্ষকরা প্রতিষ্ঠান পরিবর্তনের পর আরেকটি নতুন গণবিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে নিবন্ধিত শিক্ষকদের সেসব পদে নিয়োগ দিলে সব সমস্যা সমাধান হয়ে যায়। কাজটি বদলি পদ্ধতির চেয়ে অনেক সহজ হবে বলে মনে করেন শিক্ষকরা।

শিক্ষক নিয়োগে চলতি বছরই আসতে চলেছে বড় ধরনের গণবিজ্ঞপ্তি। বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ৯৬ হাজারের অধিক শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়া চলছে। চলতি মে মাসেই এ নিয়োগের প্রাথমিক সুপারিশ করা হতে পারে। এরপর কতগুলো পদ শূন্য রয়েছে, তা যাচাই করে দ্রুত আরেকটি গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশের কার্যক্রম শুরু করবে বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ (এনটিআরসিএ)। পঞ্চম গণবিজ্ঞপ্তির নিয়োগ সুপারিশের পর শূন্য পদগুলো পূরণে শিগগির আরেকটি গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করতে চায় এনটিআরসিএ। পঞ্চম গণবিজ্ঞপ্তিতে কতগুলো পদ শূন্য থাকে, সে বিষয়টি বিবেচনা করে চলতি বছরই আরেকটি গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হতে পারে। আর এই আসন্ন গণবিজ্ঞপ্তিতেই ইনডেক্সধারী শিক্ষকদের পরবর্তী গণবিজ্ঞপ্তিতে আবেদনের সুযোগ দেওয়া যায় কি’না তা নিয়ে ভাবছে মন্ত্রণালয় ও এনটিআরসিএ।

শিক্ষকরা বলছেন, শিক্ষকদের বদলি যদি জটিল প্রক্রিয়া মনে হয়, তাহলে ইনডেক্সধারী শিক্ষকদের জন্য আলাদা বা বিশেষ গণবিজ্ঞপ্তি দেওয়া যায় কিনা, বা আসন্ন গণবিজ্ঞপ্তিতে আবেদনের সুযোগ দেওয়া যায় কি না এ ব্যাপারে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ করছি।

শিক্ষাবার্তা ডটকম/এএইচএম/০৭/০৫/২০২৪


Discover more from শিক্ষাবার্তা ডট কম

Subscribe to get the latest posts sent to your email.