এইমাত্র পাওয়া

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ:সরকারি নির্দেশনা উপেক্ষা

নিজস্ব প্রতিবেদক।।

সাভারে সরকারি নির্দেশনা অমান্য করে গরমেও চলছে বেসরকারি কিন্ডারগার্টেন স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসা। বুধবার (২৪ এপ্রিল) সকালে সরেজমিনে সাভার উপজেলা কমপ্লেক্সের সন্নিকটে গেন্ডা, ঘাসমহল, রাজাশন, শাহীবাগসহ বেশ কয়েকটি এলাকা ঘুরে তীব্র গরমের মধ্যে এসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ক্লাস নিতে দেখা গেছে।

রাজমহল বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রচন্ড গরমে শিশু শিক্ষার্থীদের ক্লাস নেওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে প্রতিষ্ঠানটির প্রধান শিক্ষক আমিনুর রহমান বলেন, ‘আমরা সরকারের নিয়ন্ত্রনে কিংবা সরকারি টাকায় চলিনা। আমরা নিজস্ব টাকায় চলি। অভিভাবকদের অনুরোধে আমরা প্রতিষ্ঠান খোলা রেখে পাঠদান করছি। আমাদের আশপাশে প্রায় ১০০ প্রতিষ্ঠান চালু আছে। তাদের বিরুদ্ধেও কিছু লেখেন।’

দক্ষিন রাজাশন এলাকার জাবাল-ই-নূর মডেল মাদরাসায় গিয়ে দেখা যায়, চার তলা ভবনটির সামনের কেঁচিগেটে তালা লাগিয়ে পাশের একটি দোকানের এক শার্টার খুলে সেখান দিয়ে শিক্ষার্থী এবং অভিববকরা যাতায়াত করছে। সেখানে ঢুকতেই দেখা যায়, ছোট দোকানের মধ্যে শতাধিক অভিবাবক সন্তানকে পড়তে দিয়ে বসে এবং দাঁড়িয়ে আছেন। প্রতিটি ক্লাসে গাদাগাদি অবস্থায় কোমলমতি শিক্ষার্থীদের ক্লাস করানো হচ্ছে।

প্রতিষ্ঠান খোলা রেখে ক্লাস করানোর বিষয়ে জানতে জাবাল-ই-নূর মডেল মাদরাসার প্রিন্সিপাল মোক্তার হোসেন বলেন, আমরা সরকারি নির্দেশনার আওতায় পড়িনা। অভিবাবকদের অনুরোধে আমরা সকাল ৬ টা থেকে সাড়ে ৮ টা পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের ক্লাস নিচ্ছি। কিন্তু সকাল ৯ টায় গিয়ে দেখা যায় ওই প্রতিষ্ঠানের কয়েকটি ফ্লোরে প্রচন্ড রোদের মধ্যে জানালার পাশে বসে শিক্ষার্থীদের ক্লাস নেয়া হচ্ছে।

একই অবস্থায় পাশ্ববর্তী বর্ণমালা আদর্শ স্কুল, ইউনিক ইন্টারন্যাশনাল স্কুল এন্ড কলেজ, ট্রাস্ট হাজী হাতেম আলী উচ্চ বিদ্যালয়, সাভার পাইলট স্কুল, গেন্ডা মডেল স্কুলসহ অন্তত অর্ধশতাধিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সরকারি নির্দেশনা অমান্য করে শিক্ষার্থীদের ক্লাস নিচ্ছেন।

আজাদ হোসেন নামে এক অভিভাবক বলেন, সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী গরমে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার কথা বললেও প্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষক বলেন, সাংবাদিক, পুলিশ বা প্রশাসনের লোক আসলে সেটা আমরা বুঝবো। আপনারা নিশ্চিন্তে ছেলে-মেয়েকে স্কুলে পাঠান, নিয়মিত ক্লাস হবে।

প্রচন্ড গরমে বোরকা পরিহিত এক নারী এক বছরের শিশুকে কোলে নিয়ে ৪ বছরের ছেলের কাঁধে ব্যাগ দিয়ে তাকে হাটিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। স্কুল খোলার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, প্রতিষ্ঠান খোলা রাখলে আমাদের যতই কষ্ট হোক বাচ্চাদের ক্লাসে নিয়ে আসতে হয়। আমাদের কথার শিক্ষকরা কোন দাম দেননা। অন্য বাচ্চারা যখন ক্লাসে আসে তখন আমার বাচ্চা না আসলে সে পড়াশুনায় পিছিয়ে পড়বে। তাই বাধ্য হয়েই দুই ছেলেকে নিয়ে হেটে স্কুলে যাচ্ছি।

সরকারি নির্দেশনা অমান্য করে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা রাখার বিষয়ে জানতে চাইলে সাভার উপজেলা নির্বাহি কর্মকর্তা (ইউএনও) রাহুল চন্দ বলেন, অভিযোগ পাওয়ার পর লোক পাঠানো হয়েছে। প্রয়োজনে নির্দেশনা অমান্যকারীদের রেজিস্ট্রেশন বাতিল করা হবে।

শিক্ষাবার্তা/জামান/২৫/০৪/২৪


Discover more from শিক্ষাবার্তা ডট কম

Subscribe to get the latest posts sent to your email.