নাটোরঃ জেলার বড়াইগ্রামের রামেশ্বরপুর উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সরোয়ার হোসেন পিঞ্জু মাস্টারের বিরুদ্ধে নানা অপকর্মের অভিযোগ তুলে মানববন্ধ করেছেন এলাকাবাসী।
মঙ্গলবার দুপুরে রামেশ্বরপুর উচ্চবিদ্যালয় মাঠে সংবাদ সম্মেলন ও মানববন্ধন করে বিচার দাবি করেন ভুক্তভোগীরা।
জানা যায়, থানায় তার বিরুদ্ধে ১০টিরও বেশি পৃথক অভিযোগ করা হয়েছে। কিন্তু পুলিশ তার বিরুদ্ধে কোনো পদক্ষেপ না নেওয়ায় ভুক্তভোগীসহ এলাকাবাসী সংবাদ সম্মেলন ও মানববন্ধন করে।
এ ব্যাপারে মোবাইলে প্রধান শিক্ষক সরোয়ার হোসেন পিঞ্জু জানান, তার বিরুদ্ধে অভিযোগ ভিত্তিহীন। টাকা-পয়সা লেনদেন যা হয়েছে তা কয়েকজনের সঙ্গে বসে মীমংসা করা হয়েছে এবং অবশিষ্টদের সঙ্গে খুব শীঘ্র্ই বসে মীমাংসা করা হবে।
বড়াইগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শফিউল আযম খান জানান, সরোয়ার হোসেন পিঞ্জুর বিরুদ্ধে অভিযোগগুলো খতিয়ে দেখে পরবর্তী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
সংবাদ সম্মেলনে রামেশ^রপুর গ্রামের জামাত হোসেন বলেন, আমার বাবা শমসের সরদার জীবিত থাকাকালীন ১৯৯৬ সালে বিদ্যালয়ের নামে ২৫ শতাংশ জমি দান করেন। এই দানের শর্ত ছিল বাবাকে নাইট গার্ডের চাকরি দেওয়া। কিন্তু প্রধান শিক্ষক সরোয়ার হোসেন পিঞ্জু রেজিস্ট্রি অফিসে গিয়ে কৌশলে তার নিজ নামে ১২ শতাংশ ও বিদ্যালয়ের নামে ১৩ শতাংশ জমি লিখে নেয়। এর পরও বাবাকে চাকরি দেননি।
একই গ্রামের রিক্তা খাতুন বলেন, ২০১৬ সালে আয়া পদে চাকরি দেওয়ার কথা বলে আমার স্বামী হেলাল হোসেনের কাছ ৮ লাখ টাকা নেয় ওই প্রধান শিক্ষক। কিন্তু আজও চাকরি দেয়নি এবং টাকা ফেরতও দেয়নি।
কাউছার হোসেনের চাচা দুলাল হোসেন জানান, ১০ কাঠা তিন ফসলি জমি বিক্রি করে এবং সুদে আরো ৩ লাখ টাকা এনে মোট ৭ লাখ টাকা পিঞ্জু মাস্টারকে দেওয়া হয় ভাতিজা কাউছারকে পিয়ন পদে চাকরির জন্য। এতদিনেও চাকরিও দেননি এবং টাকাও ফেরত দেননি।
সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্য ভুক্তভোগীরা জানায়, পিঞ্জু মাস্টারকে টাকা দিতে কেউ কেউ স্বর্ণালংকার বিক্রি করেছে। জমি বিক্রি করেছে। সুদে টাকা নিয়েছে। এখন তারা সর্বস্ব হারিয়ে পথে বসার উপক্রম হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে ভুক্তভোগীরা থানায় দায়ের করা ১০টির অধিক অভিযোগপত্র দেখায়। এতে জানা যায়, বিদ্যালয়ের ২ শতক জমি বিক্রি করার কথা বলে চন্ডিপুরের শাহাদৎ মোল্লার কাছ থেকে ৫৫ হাজার টাকা, মুরগির ফার্মে মুরগির বাচ্চা তুলবে বলে জোনাইলের রবিন হোসেনের কাছ থেকে ঋণ হিসেবে ১ লাখ টাকা, অন্য একটি বিদ্যালয়ে চাকরি দেওয়ার কথা বলে দাড়িকুশি গ্রামের রুস্তম মোল্লার কাছ থেকে দেড় লাথ টাকা, রয়না ভরাট গ্রামের ইলিয়াস পারভেজের কাছ থেকে ৫ লাখ টাকা, ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের আগে ইউপি সদস্য হিসেবে বিজয়ী ফলাফল এনে দেবে বলে চন্ডিপুর গ্রামের নজরুল ইসলামের কাছ থেকে ৫০ হাজার টাকা, পুলিশের সাব-ইন্সপেক্টর হিসেবে চাকরি দেওয়ার কথা বলে চৌমুহান গ্রামের শহিদুল ইসলামের কাছ থেকে ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা, শিক্ষক পদে নিয়োগ দেওয়ার কথা বলে বোর্ণী গ্রামের প্রভাত কুমারের কাছ থেকে ১ লাখ ৭০ হাজার টাকা আদায় করে। এছাড়া তার বিরুদ্ধে বাজিতপুর এলাকায় খাল খনন কর্মসূচির ৭ লাখ ২৯ হাজার টাকা আত্মসাতের অভিযোগ থানায় লিখিতভাবে জমা দিয়েছে তার পার্টনার মোস্তাফিজুর রহমান।
শিক্ষাবার্তা ডটকম/এএইচএম/২৩/০৪/২০২৪
Discover more from শিক্ষাবার্তা ডট কম
Subscribe to get the latest posts sent to your email.