এইমাত্র পাওয়া

৮ বিদ্যালয় ভবন বিক্রি হলো পৌনে দুই লাখে

ব্রাহ্মণবাড়িয়াঃ জেলার আখাউড়ায় প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পুরনো দালান ভবন পানির দরে বিক্রি হয়েছে। যার মোট মূল্য এক লাখ ৭৯ হাজার টাকা। সংশ্লিষ্টরা অবশ্য আগেই এমন প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছিলেন। আটটি ভবনের ভিত্তিমূল্য তারা নির্ধারণ করে রেখেছিলেন মাত্র এক লাখ ৬৮ হাজার ১১৬ টাকা। পরে সামান্য বেশি দর দেখিয়ে ভবনগুলো প্রকাশ্যে বিক্রি করে দেওয়া হয়।

বিষয়টি সম্পর্কে খোঁজ নিতে গিয়ে দেখা যায়, একটি সিন্ডিকেট সংশ্লিষ্টদের ম্যানেজ করে কম দাম দেখিয়ে ভবনগুলো নিলামে ওঠায়। অথচ তাৎক্ষণিকভাবেই সরকারিভাবে কেনার দরের চেয়ে ১০-২০ গুণ বেশি দামে ‘ফিরতি নিলামে’ ডাক ওঠে। এতে সরকার অন্তত ২০ লাখ টাকা আয় থেকে বঞ্চিত হয়।

খোঁজ নিয়ে ও রবিবার সরজমিন ঘুরে জানা গেছে, রাধানগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, জাঙ্গাল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ছয়ঘরিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, নুরপুর ক্যাপ্টেন মাহবুব সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, নুরপুর সরকারি প্রাথমি বিদ্যালয়, নয়াদিল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, আনোয়ারপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভাটামাথা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পুরনো ভবন নিলামে বিক্রি করা হয়।

ভিত্তিমূল্যের চেয়ে মাত্র আটশ থেকে তিন হাজার টাকা বেশিতে এসব ভবন বিক্রি করা হয়। এর মধ্যে, মাত্র ৯ হাজার ৫০০ টাকায় আনোয়ারপুরের ভবন, ১৩ হাজার ৫০০ টাকায় ভাটামাথার ভবন, নুরপুর ক্যাপ্টেন মাহবুরের ভবন ১৩ হাজার টাকায় বিক্রি করা হয়। এছাড়া রাধানগরের ভবন ৩০ হাজার টাকা, নুরপুরের ভবন ২৮ হাজার টাকা, নয়াদিলের ভবন ৩০ হাজার টাকা, ছয়ঘরিয়ার ভবন ২৪ হাজার টাকা ও জাঙ্গালের ভবন ২৮ হাজার ৫০০ টাকায় বিক্রি করা হয়।

গত বুধবার উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে প্রকাশ্য নিলাম ডেকে এসব ভবন বিক্রি করা হয়। নিলাম বিক্রির আগে স্থানীয় এক প্রভাবশালী জনপ্রতিনিধির বড় ভাই সেখানে এসে ঠিকাদারদের একত্রিত করে সমঝোতা করে নেন যে, তারা যেন অতিরিক্ত মূল্যে না কেনেন। সরকার নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে সামান্য বেশি দামে কিনে পরে ফিরতি ডাকে আবার বেশি দামে বিক্রি করা হবে। আর যিনি ডাক পাবেন তার কাছ থেকে টাকা নিয়ে নিজেদের মধ্যে বন্টন করা হবে।

আনোয়ারপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সুলতানা ফেরদৌসি বলেন, ভবনটি যে দামে (৯ হাজার ৫০০ টাকা) বিক্রি হয়েছে সেটা খুবই কম। তবে কিভাবে দাম নির্ধারণ করা হয় সে বিষয়টি আমার জানা নেই বলে কিছু বলতে পারছি না।

উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা (প্রাথমিক) শাহ ইলিয়াস উদ্দিন বলেন, আমি এখানে নতুন যোগদান এসেছি। নিলাম হওয়া বিদ্যালয় ভবনগুলো সম্পর্কে আমার খুব একটা ধারণা নেই। উপজেলা প্রকৌশলী দাম নির্ধারণ করেছেন। তিনি এ বিষয়ে ভালো বলতে পারবেন।

উপজেলা প্রকৌশলী মো. সিরাজুল ইসলাম সুমনের বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি। রবিবার দুপুরে একাধিকবার তার কার্যালয়ে দিয়ে সেটি বন্ধ পাওয়া যায়। তবে স্থানীয় সাংবাদিকদের তিনি জানান, নিলাম ডাকের নিয়ম মেনেই সব করা হয়েছে।

আখাউড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও নিলাম ডাক কমিটির সভাপতি রাবেয়া আক্তার বলেন, ভিত্তিমূল্যের চেয়ে বেশি দরে বিক্রির যে নিয়ম সেটা মেনেই সব করা হয়েছে। প্রকাশ্য নিলাম ডাকের বাইরে কি হয়েছে সেটা আমার জানা নেই। আর ভিত্তিমূল্যের বিষয়টি উপজেলা প্রকৌশলী ভালো বলতে পারবেন। দেশ রূপান্তর

শিক্ষাবার্তা ডট কম/এএইচএম/০৫/০২/২০২৪


Discover more from শিক্ষাবার্তা ডট কম

Subscribe to get the latest posts sent to your email.