নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাঃ সিলেটের বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় লিডিং ইউনিভার্সিটির স্থাপত্য বিভাগের বহিস্কৃত দুই শিক্ষককে পুনর্বহালের আদেশ দিয়েছেবিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)। সেই সাথে ট্রাস্টিবোর্ড থেকে ভারতীয় নাগরিকসহ দুজনকে ২ মাসের মধ্যে বাদ দিয়ে নতুন করে বোর্ড গঠনেরও নির্দেশনা দিয়েছে।
রবিবার ইউজিসির পরিচালক মো. ওমর ফারুক স্বাক্ষরিত চিঠিতে এসব নির্দেশনা প্রদান করা হয়।
নির্দেশনায় উল্লেখ করা হয়, সাম্প্রতিক সময়ে লিডিং ইউনিভার্সিটি’র বিভিন্ন অনিয়ম এবং বিশ্ববদ্যিালয়টির উপাচার্য এবং ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যানের পরস্পরের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগসমূহ তদন্তে গঠিত কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী, লিডিং ইউনিভার্সিটি’র আর্কিটেকচার বিভাগের অধ্যাপক সৈয়দা জারিনা হোসেইন এবং সহযোগী অধ্যাপক স্থপতি রাজন দাস এর বহিষ্কারাদেশ বাতিল ঘোষণাপূর্বক সকল সুযোগসুবিধাসহ বহিস্কারাদেশ সাক্ষরের তারিখ হতে স্বপদে পূর্নবহাল করার নির্দেশ প্রদান করা হয়। সেইসাথে, বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয় আইন, ২০১০ এর কোন এখতিয়ারবলে তাদের চাকুরিচ্যুত করা হয়েছে তার কারনদর্শানো সহ ব্যাখ্য তিন কার্য দিবসের মধ্যে কমিশনে প্রেরণ করারও আদেশ দিয়েছে কমিশন।
এই চিঠিতে ভারতীয় নাগরিক সাদিকা জান্নাত চৌধুরী ও নাবালক সাইদ আজমাইন আবদুল হাই-কে বিশ্ববিদ্যালয়টির বোর্ড অব ট্রাস্টিজ থেকে বাদ দিয়ে আগামী দুই মাসের মধ্যে জয়েন্ট স্টক কোম্পানি থেকে নিবন্ধন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা ও আগামী তিন মাসের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়টির অনিরীক্ষিত অর্থ বছর-এর নিরীক্ষা করার জন্য নির্দেশনা প্রদান করা হয়।
সেই সাথে ইউনিভার্সিটি’র উপাচার্য অধ্যাপক কাজী আজিজুল মওলাকে চুক্তি অনুযায়ী বেতনভাতাসহ অন্যান্য সুযোগ-সুবিধাদি প্রদানের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে নির্দেশনা প্রদান করা হয়।
ইউজিসির পরিচালক ওমর ফারুক স্বাক্ষরিত চিঠিতে সকল বিভাগে আগামী ৩ মাসের মধ্যে যোগ্যতাসম্পন্ন প্রয়োজনীয়সংখ্যক শিক্ষক নিয়োগ এবং বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইন, ২০১০ এর ৩৩(৩) ধারা মোতাবেক খণ্ডকালীন শিক্ষক সংখ্যা নিশ্চিত করার জন্যও প্রয়োজনীয় নির্দেশনা প্রদান করা হয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য কাজী আজিজুল মাওলা বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রাস্টি বোর্ডকে অবৈধ দাবি করে এবং লিডিং ইউনিভার্সিটিতে ট্রেজারার বনমালী ভৌমিকের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ এনে লিখিত অভিযোগ দেন।
অভিযোগে ইউনিভার্সিটির ৬৮টি লেনদেনে অনিয়মের বিষয়ে জানতে রেজিস্ট্রার বরাবরে কমিশনের দেওয়া চিঠিসহ ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য সাদিকা জান্নাত চৌধুরী (পাসপোর্ট নং K 3920850) ভারতের নাগরিকের বিষয়টি উল্লেখ করেন। অন্যদিকে, বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রাস্টিবোর্ডের চেয়ারম্যান রাগিব আলীও উপাচার্যের বিরুদ্ধে ইউজিসিতে অভিযোগ দেন।
অভিযোগের বিষয়ে সরেজমিন তদন্ত করতে ড. কাজী আবু তাহেরের নেতৃত্বে ৩ সদস্য বিশিষ্ট একটি ইউজিসির তদন্ত কমিটি গত ২৭ জুলাই ক্যাম্পাস পরিদর্শন করেন। এসময় তারা বোর্ড অব ট্রাস্টিজের চেয়ারম্যান রাগীব আলী, উপচার্য ড. কাজী আজিজুল মাওলা ও ট্রেজারার বনমালী ভৌমিকর সাথে পৃথক পৃথক বৈঠক করেন।
ইউজিসি চিঠি পাওয়ার কথা জানিয়ে উপাচার্য কাজী আজিজুল মাওলা বলেন, আমি চিটি পাওয়ার পরপরইিচিঠির আলোখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে রেজিস্ট্রারকে নির্দেশ দিয়েছি। ওই শিক্ষককে আবার পুণর্বহাল করে চিঠি দিতেও বলেছি। তিনি না করলে আমি নিজেই এই চিঠি প্রদান করবো।
প্রসঙ্গত, গত ১২ অক্টোবর বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থাপত্য বিভাগের প্রধান রাজন দাশ এবং শিক্ষক স্থপতি সৈয়দা জেরিনা হোসেনকে বরখাস্ত করা হয়। এসময় লিডিং ইউনিভার্সিটির উপাচার্য কাজী আজিজুল মাওলা যুক্তরাষ্ট্র সফরে ছিলেন। উপাচার্যের অনুপস্থিতিতে ট্রেজারার বনমালী ভৌমিক ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য হয়ে নিয়মবর্হিভূতভাবে তাদের বহিস্কার করেন বলে অভিযোগ ওঠে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের এমন সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে আন্দোলনেও নামেন শিক্ষার্থীরা।
শিক্ষাবার্তা ডট কম/এএইচএম/১২/১১/২০২৩
দেশ বিদেশের শিক্ষা, পড়ালেখা, ক্যারিয়ার সম্পর্কিত সর্বশেষ সংবাদ শিরোনাম, ছবি, ভিডিও প্রতিবেদন সবার আগে দেখতে চোখ রাখুন শিক্ষাবার্তায়
Discover more from শিক্ষাবার্তা ডট কম
Subscribe to get the latest posts sent to your email.