এইমাত্র পাওয়া

শিক্ষা খাতকে রক্ষা করতে হবে

।। আজহার মাহমুদ।। 

নির্বাচন সন্নিকটে। আগামী বছরের শুরুতে অনুষ্ঠিত হবে জাতীয় সংসদ নির্বাচন। নির্বাচনের আগে দেশে সবচেয়ে বেশি যে পরিস্থিতি তৈরি হয়, তা হচ্ছে হরতাল, অবরোধ, সহিংসতা ইত্যাদি। এছাড়া নির্বাচন মানেই মিছিল, মিটিং, সমাবেশ। নির্বাচনের আগে আমাদের শিক্ষা খাতের ওপর এসবের বিরূপ প্রভাব পড়ে। এটা হয়তো অনেকেই গুরুত্ব দিয়ে দেখছেন না। অবরোধ, হরতাল আর সহিংসতার মাঝে শিক্ষা কার্যক্রম কতটুকু চলতে পারে, তা আমরা সবাই জানি। এ সময় জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের বেশ কয়েকটি বিভাগে পরীক্ষা চলে, যা অবরোধ-হরতালের কারণে বন্ধ রাখতে হয়। বন্ধ রাখতে হয় স্কুল-কলেজের শিক্ষা কার্যক্রমও। এভাবেই ক্ষতিগ্রস্ত হয় শিক্ষা।

এছাড়া প্রার্থী ঘোষিত হওয়ার পর নির্বাচনের আগে যেসব মিছিল-সমাবেশ হয়, সেখানেও চলে সহিংসতা আর আধিপত্যের খেলা। এ সময় তরুণ শিক্ষার্থীরা থাকে না শ্রেণিকক্ষে। তারা থাকে মিছিল, মিটিং, সমাবেশে। রাজনীতির মাঠে ব্যবহৃত হয় শিক্ষার্থীরা। আর এভাবেই শিক্ষা থেকে অনেক শিক্ষার্থীর সম্পর্ক বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। কেউ কেউ মিছিল-সমাবেশে গিয়ে হামলার শিকারও হয়। প্রশ্ন হলো, কেন এমনটা হবে? কেন শিক্ষার্থীরা রাজপথে থাকবে? তাদের তো ক্লাসে থাকার কথা।

এখন প্রতিটি কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ে রাজনীতি ঢুকে গেছে। এসব প্রতিষ্ঠানে নানা ধরনের ‘ভাই’ থাকে। এ ভাইদের নেতৃত্বে চলে একেকটা কলেজ। তাদের কথা যেন শিক্ষকদের চেয়েও বেশি গুরুত্বপূর্ণ। তারা যখন যেখানে যে সমাবেশে যেতে বলবে, সেখানেই হাজির হয়ে যায় শিক্ষার্থীরা। আর শ্রেণিকক্ষ হয়ে যায় প্রায় ফাঁকা। কলেজের ক্যাম্পাসে চলে রাজনৈতিক স্লোগান আর শ্রেণিতে চলে পাঠদান। পাঠদানে বিঘ্ন ঘটলেও প্রতিবাদ করা যায় না অনেক ক্ষেত্রে।

এবার আসা যাক পরিবারের দিক থেকে বাধা প্রদানের বিষয়ে। নির্বাচনকালীন সহিংসতার কারণে পরীক্ষা ছাড়া এ সময়টাতে সন্তানদের বিশ্ববিদ্যালয়, কলেজ, এমনকি স্কুলেও যেতে দেন না বাবা-মায়েরা। কেউই চান না সন্তানদের ঝুঁকির মধ্যে স্কুল-কলেজে পাঠাতে। তারা রাস্তায় যখন গাড়িতে আগুন আর পুলিশের লাঠিচার্জ দেখেন, তখন স্বাভাবিকভাবেই আতঙ্ক আর অস্বস্তিতে থাকেন। ফলে সন্তানদের বাধা দেন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যেতে। এতে দেশের শিক্ষার্থীদের ক্ষতির মুখে পড়তে হচ্ছে। আর এ ক্ষতি পরোক্ষভাবে গোটা দেশেরই। অন্য দেশে নির্বাচন হলে মানুষের হৃদয়ে থাকে খুশির আমেজ। আর আমাদের দেশে হয় এর উলটোটি। রাস্তায় আগুন, পুলিশের লাঠিচার্জ, গাড়ি ভাঙচুর দিয়ে আমাদের নির্বাচনের প্রচারণা শুরু হয়। কবে এ যন্ত্রণা থেকে বাংলাদেশ মুক্তি পাবে, সেটাই মানুষের জিজ্ঞাসা। মানুষ কবে আবার নির্বাচনি আনন্দের আমেজ নিয়ে রাস্তায় বের হতে পারবে, এ প্রশ্ন নেতাদের কাছে। আমাদের শিক্ষা খাতকে আগে রক্ষা করা দরকার। না হলে একদিন এ শিক্ষার্থীরাই নেতাদের অপরাধীর কাঠগড়ায় দাঁড় করাবে।

লেখক-

আজহার মাহমুদ : প্রাবন্ধিক

শিক্ষাবার্তা ডট কম/এএইচএম/১২/১১/২০২৩ 

দেশ বিদেশের শিক্ষা, পড়ালেখা, ক্যারিয়ার সম্পর্কিত সর্বশেষ সংবাদ শিরোনাম, ছবি, ভিডিও প্রতিবেদন সবার আগে দেখতে চোখ রাখুন শিক্ষাবার্তায়


Discover more from শিক্ষাবার্তা ডট কম

Subscribe to get the latest posts sent to your email.