বরগুনাঃ জেলার আমতলীর গাজীপুর বন্দর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, কুকুয়া হাট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, কুকুয়া গোছখালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভেতরে প্রকাশ্যে চলছে কোচিং বাণিজ্য। এতে রাতে ক্লাস চলায় অতিরিক্ত বিদ্যুৎ বিল গুণতে হচ্ছে সরকারকে। প্রতিদিন সন্ধ্যা ৬টা থেকে শুরু হয়ে রাত ১১টা পর্যন্ত চলে এই কোচিং বাণিজ্য। শিক্ষকরা ক্লাসে ভালো মতো পড়ালে রাতে ছাত্র-ছাত্রীদের কোচিং করতে হতো না বলে অভিযোগ উঠেছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, দিনের মতো ক্লাস হচ্ছে রাতের বেলাও। ছাত্রছাত্রীরা জানান স্কুলে কোচিং করা তাদের জন্য বাধ্যতামূলক। না করলে অভিভাবকদের ডাকায় স্যারেরা।
জানা গেছে, কুকুয়া হাট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক শ্রী দিলিপ, মো. জসিম, শ্রীদিগেন ২য় শ্রেণি থেকে ৫ম শ্রেণি পর্যন্ত ক্লাসের ২ শতাধিক শিক্ষাথীদের মাসে ৩০০-৫০০ টাকায় কোচিং এ পড়ান। কুকুয়া গোছখালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মো. আতিক ও মো. শাহিন প্রধান শিক্ষক ফারুক আলমের সহযোগিতায় সন্ধ্যা ৬ টা থেকে ১১টা পর্যন্ত ২য় শ্রেণি থেকে ৫ম শ্রেণি পর্যন্ত দেড় শতাধিক শিক্ষাথীদের মাস প্রতি ৩০০-৫০০ টাকায় কোচিং পড়ান। গাজীপুর বন্দর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সহকারী শিক্ষক মো. খোকন স্কুল ভবনের ৩ তলায় তৃতীয় শ্রেণি থেকে ৫ম শ্রেণি পর্যন্ত ৫০ জন শিক্ষার্থীকে ৩০০-৫০০ টাকায় কোচিং এ পড়ান।
এদিকে বেশ কয়েক জন অভিভাবক অভিযোগ করে জানান, সরকার প্রাইমারী স্কুলের বিদ্যুত বিল দেয়। শিক্ষকরা রাতের বেলা দিনের মত স্কুল চালায়। এতে সরকারকে অতিরিক্ত বিদ্যুত বিলের টাকা দিতে হয়। এসব অনিয়ম করলেও দেখার মতো কেউ নেই।
কয়েকজন অভিভাবক নাম প্রকাশ না করা শর্তে বলেন, শিক্ষকরা যদি ক্লাসে ঠিকমতো পাঠদান করাতো, তাহলে রাতের বেলা কোচিং এ ছেলেমেয়েদের পড়াশুনা করানো লাগতো না। এ ব্যাপারে প্রশাসনের উচ্চমহলের আশু হস্তক্ষেপ চাই।
গাজীপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মো. খোকন এ ব্যাপারে বলেন, করোনাকালীন বাচ্চারা ঠিকমতো ক্লাস করতে পারেনি। তাদের সেই ক্ষতি পুষিয়ে নেওয়ার জন্য কোচিং এ পড়াচ্ছি।
কুকুয়াহাট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক শ্রী দিলিপ, ও মো. জসিম বলেন, পিছিয়ে পড়া শিক্ষার্থীদের অভিভবাকদের অনুরোধে রাতে পড়াই।
কুকুয়া গোছখালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষক মো. আতিক বলেন, যারা একটু পিছিয়ে পড়েছে ছাত্র-ছাত্রীরা বাড়ি বসে পড়া লেখা করেনা। তাই রাতে স্কুলে বসে পড়াচ্ছি।
কুকুয়া হাট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. নাসির মাহমুদ বলেন, ‘এ বিষয় পরে কথা বলবো।’
কুকুয়া গোছখালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রধান শিক্ষক মো. ফারুক আলম বলেন, ‘আমি বিষয় কোনো কথা বলতে চাইনা।’
আমতলী উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মো. সফিকুল আলম বলেন, এভাবে রাতে তদন্ত পূর্বক আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বরগুনা জেলা সহকারী জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. মোজাফ্ফর উদ্দীন মুঠোফোনে বলেন, খোঁজ নিয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আমতলী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আশ্রাফুল আলম বলেন, তদন্ত পূর্বক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
শিক্ষাবার্তা ডট কম/এএইচএম/১২/১০/২০২৩
দেশ বিদেশের শিক্ষা, পড়ালেখা, ক্যারিয়ার সম্পর্কিত সর্বশেষ সংবাদ শিরোনাম, ছবি, ভিডিও প্রতিবেদন সবার আগে দেখতে চোখ রাখুন শিক্ষাবার্তায়
Discover more from শিক্ষাবার্তা ডট কম
Subscribe to get the latest posts sent to your email.