Breaking News

মাদ্রাসার বরাদ্দের টাকা সুপারের আত্মসাতের অভিযোগ!

নওগাঁঃ জেলার আত্রাইয়ের হাটকালুপাড়া দাখিল মাদ্রাসার সুপারের বিরুদ্ধে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। উপজেলা শিক্ষা অফিসের ৫ লাখ টাকা বরাদ্দের সামান্য কিছু ব্যয় করে বাকি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ তুলেছেন স্থানীয়রা। তিনি শিক্ষা অফিসের বরাদ্দ পাওয়ার কথা অস্বীকার করেছেন। এদিকে শিক্ষার্থীর সংখ্যা খাতা কলমে বেশি থাকলেও বাস্তবে ভিন্ন। শিক্ষার্থীর সংখ্যা বেশি দেখাতে প্রয়োজন হলে আশপাশের প্রতিষ্ঠান থেকে শিক্ষার্থী নিয়ে আসেন তিনি। ৭ম শ্রেণির এক শিক্ষার্থী বলে, তাদের ক্লাসে উপস্থিত আছে ২২ জন আর খাতায় আছে ৪০ জন। সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, প্রতিটি ক্লাসে ৪-৮ জন শিক্ষার্থী উপস্থিত। ৮ম শ্রেণির শিক্ষার্থী সাব্বির ও আবির জানায়, তাদের ক্লাসে শিক্ষার্থী ৩০ জন কিন্তু ছেলেদের মধ্যে তারা দুজন আর মেয়ে ৮ জন। ওই ক্লাসের শিক্ষক বার বার বলছিলেন তাদের গ্রামে বিয়ের অনুষ্ঠান হওয়ায় আজ শিক্ষার্থী কম। খাতায় শিক্ষার্থীর সংখ্যা বেশি দেখানো হলেও উপস্থিতি ছিল অর্ধেক। এদিকে গণমাধ্যমকর্মীরা মাদ্রাসার ছবি তুলতে গেলে ছুটির নির্ধারিত সময়ের আগেই সুপার আবুল হোসেনের নির্দেশে ছুটির ঘণ্টা বাজানো হয়। আর তখন চক-ডাস্টার হাতে এক শ্রেণিকক্ষে দাঁড়িয়ে ছিলেন শিক্ষক। তিনি পাঠদানের সময় কতজন শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিল তা বোর্ডে লিখে দেন।

স্থানীয়দের অভিযোগ, মাদ্রাসার জন্য বরাদ্দ আসা ৫ লাখ টাকার মধ্যে মাত্র ১ লাখ ৫৫ হাজার টাকার মাটি কেটেছে, কিছু টাকা দিয়ে ঘরের টিন ও কয়েকটি চেয়ার কেনা হয়েছে। বাকি টাকা মাদ্রাসার সুপার আবুল হোসেন আত্মসাৎ করেছেন। আর কিছুদিন আগে একাধিক ব্যক্তিকে টাকা বিনিময়ে নিয়োগ দিয়েছেন তিনি। প্রতিষ্ঠানটি ২০১৯ সালে এমপিওভুক্তির পর ২০২০ সালে একজনকে নিয়োগ দিয়েছেন অথচ তার নিয়োগ দেখানো হয়েছে ২০০৪ সালে। রায়হান নামে একজন ব্যক্তি ওই প্রতিষ্ঠানে পিওন পদে চাকরি করেন। তিনি অন্যের হয়ে পরীক্ষা দিতে গিয়ে জেল খেটেছেন। তিনি ওই প্রতিষ্ঠানের সম্পত্তিদাতার নাতি। আরো দুইজন আছেন সম্পত্তিদাতার আত্মীয়। পরীক্ষার্থীর সংখ্যা নিয়েও আছে বিস্তর অভিযোগ। মাদ্রাসার সুপার আবুল হোসেন খাতা-কলমের সঙ্গে বাস্তবে শিক্ষার্থী সংখ্যার গড়মিলের প্রশ্নে তিনি বলেন, এ রকম হতেই পারে। এর অনেক কারণ রয়েছে। টেস্ট পরীক্ষার্থী কতজন আছে জিজ্ঞেস করলে তিনি কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি।

মাদ্রাসার ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি আজাদ হোসেন বলেন, কত টাকা বরাদ্দ এসেছে জানি না। তবে যে কাজের জন্য টাকা এসেছিল সেগুলো উন্নয়নমূলক কাজে ব্যয় করা হয়েছে বলে তাকে সুপার এবং শিক্ষকরা জানিয়েছে।

উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার একেএম মামুনুর রশিদ বলেন, ২/৩ মাস আগে ওই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ৫টি বিষয়ের জন্য ৫ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। এক লাখ টাকা শিক্ষক প্রণোদনা, দেড় লাখ টাকা বই কেনা, ১ লাখ ২৫ হাজার টাকা বিশুদ্ধ পানি, ৭৫ হাজার টাকা ১৫ জন গরিব ছেলে-মেয়ে এবং ৫০ হাজার প্রতিবন্ধীদের হুইল চেয়ার কেনার জন্য।

\প্রতিবন্ধী ও অসহায়দের সঠিকভাবে দেওয়া হয়েছে কি না এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, খোঁজ নেওয়ার সময় আছে। এখন কাজের চাপ। এছাড়াও অভিযোগের বিষয়ে তদন্ত করবেন বলে তিনি জানান।

শিক্ষাবার্তা ডট কম/এএইচএম/১০/১০/২০২৩     

দেশ বিদেশের শিক্ষা, পড়ালেখা, ক্যারিয়ার সম্পর্কিত সর্বশেষ সংবাদ শিরোনাম, ছবি, ভিডিও প্রতিবেদন সবার আগে দেখতে চোখ রাখুন শিক্ষাবার্তায়


Discover more from শিক্ষাবার্তা ডট কম

Subscribe to get the latest posts sent to your email.

Check Also

স্বতন্ত্র এবতেদায়ী শিক্ষকদের সেপ্টেম্বর মাসের বেতনের চেক ছাড়

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা: স্বতন্ত্র এবতেদায়ী মাদ্রাসার শিক্ষক-কর্মচারীদের সেপ্টেম্বর মাসের আর্থিক অনুদানের সরকারি ‍অংশের চেক ছাড় …