জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) উপাচার্য অধ্যাপক ফারজানা ইসলামের বিরুদ্ধে অভিযোগ খতিয়ে দেখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। অভিযোগ তদন্তের দায়িত্ব পেতে পারেন বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি (ইউজিসি)। এজন্য চার সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হতে পারে বলে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে।
কমিশন বাণিজ্যের অপরাধে ছাত্রলীগের সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদককে পদত্যাগ করতে হয়েছে। একই অভিযোগে উঠেছে জাবির উপাচার্যের বিরুদ্ধে। সম্প্রতি এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের একটি পক্ষ থেকে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে লিখিত অভিযোগ দেয়া হয়েছে।
এদিকে উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে গত কয়েকদিন ধরে আন্দোলনে নেমেছেন শিক্ষার্থীরা। এসব বিষয় গুরুত্ব দিয়ে উপাচার্যের বিরুদ্ধে অভিযোগ খতিয়ে দেখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। অপরাধ প্রমাণিত হলে উপাচার্যকে পদ থেকে সরিয়ে দেয়া হতে পারে তাকে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা জানান, জাবি উপাচার্য অধ্যাপক ফারজানা ইসলামের কমিশন বাণিজ্যের প্রাথমিক প্রমাণ পাওয়া গেছে। তার বিরুদ্ধে শিক্ষকদের দেয়া লিখিত অভিযোগ তদন্ত করে দেখা হবে। এ জন্য ইউজিসির সদস্য অধ্যাপক ড. দিল আফরোজা বেগমকে আহ্বায়ক করে চার সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হতে পারে।
তিনি বলেন, দ্রুত এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে মন্ত্রণালয় থেকে ইউজিসিকে চিঠি দেয়া হবে। তদন্ত শেষে কমিটি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে প্রতিবেদন পাঠাতে বলা হবে। অপরাধের প্রমাণ মিললে উপাচার্যের পদ থেকে তাকে সরিয়ে দেয়া হতে পারে।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, কমিশন কেলেঙ্কারির ঘটনায় জাবি উপাচার্য দায় এড়াতে পারেন না। একজন উপাচার্যের কাছে ছাত্রনেতারা কীভাবে কমিশন দাবির সাহস পায়, এ বিষয় নিয়ে ছাত্রলীগের সঙ্গেইবা উপাচার্য কীভাবে বৈঠক করে। এটি নিয়ে বিভিন্ন মহলে গুঞ্জন শুরু হয়েছে। এ অপরাধের জন্য সবাই জাবি উপাচার্যের পদত্যাগ দাবি করছেন।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মো. আব্দুল্লাহ আল হাসান চৌধুরী বলেন, জাবির উপাচার্যের বিরুদ্ধে আমরা লিখিত অভিযোগ পেয়েছি, বিষয়টি গোপনভাবে খোঁজ-খবর নেয়া হয়েছে। এতে অভিযোগের কিছুটা সত্যতা পাওয়া গেছে। বিষয়টি নিবিড়ভাবে খতিয়ে দেখতে ইউজিসিকে দায়িত্ব দেয়া হবে। এজন্য একটি কমিটি গঠন করাও হতে পারে।
তিনি আরও বলেন, অভিযোগ খুবই গুরুতর, তবে বিষয়টি এখনও প্রাথমিক পর্যায়ে। অভিযোগের সত্যতা মিললে দ্রুত এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে জাবির উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আমির হোসেন বলেন, কমিশন আদায়ের বিষয়টি নিয়ে পুরো বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের মধ্যে গুঞ্জন শুরু হয়েছে। কেউ কেউ উপাচার্যের এমন ঘটনা মেনে নিতে পারছে না, তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানাচ্ছেন। তবে এ নিয়ে একাডেমি কার্যক্রমে কোনো প্রভাব পড়েনি।
Discover more from শিক্ষাবার্তা ডট কম
Subscribe to get the latest posts sent to your email.